সহিংসতামুলক কর্মকান্ডের জন্য জনগণের কাছে জবাব্দিহি করতে হবেঃ গাইবান্ধায় প্রধানমন্ত্রী

676

Published on জানুয়ারি 25, 2014
  • Details Image


আজ গাইবান্ধা জেলা সদরে শাহ আবদুল হামিদ স্টেডিয়ামে আয়োজিত এক বিশাল জনসভায় বক্তৃতাকালে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের কোন স্থান হবে না। তাই তাদের (বিএনপি-জামায়াত-শিবির) তাণ্ডবও আর চলবে না। আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করে দেশের মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো, ইনশাল্লাহ ।’
গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এ জনসভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক সৈয়দ শামসুল আলম হিরু।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোঃ নাসিম, আওয়ামী লীগ নেতা ড. আবদুর রাজ্জাক, ফারুক খান এমপি, এডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া এমপি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, বস্ত্র ও পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম, মাহবুব আরা গিনি এমপি এবং ন্যাপের কেন্দ্রীয় নেতা এডভোকেট লুৎফুর রহমান রঞ্জু বক্তৃতা করেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনীদের রক্ষা করার চেষ্টা করেছেন অভিযোগ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, ‘আপনি (খালেদা) যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। যুদ্ধাপরাধের বিচারের রায় ঘোষণা করা হয়েছে এবং এই বিচার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। আপনি এই বিচার বন্ধ করতে পারবেন না।’
বিগত ৫ জানুয়ারির দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, খালেদা জিয়া পুলিশ, প্রিসাইডিং অফিসার ও ভোটারদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং ভোট কেন্দ্রের ক্ষতিসাধন করে জোরপূর্বক নির্বাচন বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু তিনি নির্বাচন বন্ধ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ ভোটার কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।
বিগত কয়েক মাস ধরে গাইবান্ধা জেলায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ডের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, এখানকার জনগণ সন্ত্রাস, সংঘাত এবং জঙ্গিবাদ দেখতে চায় না, তারা উন্নত জীবন-যাপনের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তা চায়।
শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা আর কোন ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বরদাস্ত করবো না। আপনারা সবসময় তা মনে রাখবেন।’
বিএনপি চেয়ারপার্সন দাবি করেন, তিনি দেশের ৯৬ শতাংশ লোকের নেত্রী- এই দাবিকে জাতির জন্য অত্যন্ত অপ্রত্যাশিত উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া সুস্পষ্টভাবে তার নিজের জন্মদিন, তার স্বামীর জন্মদিন এমনকি ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তারিখটিও বলতে পারেন না।
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘সম্প্রতি এক জনসভায় তিনি (বেগম জিয়া) বলেছেন যে, জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ৫ মে।’
এখানে গাইবান্ধায় ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ন্যায্য মূল্যে সারের দাবির জন্য কৃষকদের হত্যা করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের সারের দাবিতে কৃষকদের প্রাণ দিতে হয়নি বরং এখন সার তাদের (কৃষকদের) পেছনে ছুটছে।
উপস্থিত জনতাকে আশ্বাস্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার প্রাথমিক স্তরে কম্পিউটার শিক্ষা বাধ্যতামূলক করবে, সকল জনগণের জন্য অন্তত একটি টিনসেড গৃহ নির্মাণ করবে, বালাশি-বাহাদুরাবাদ নৌরুটে ফেরি সার্ভিস চালু এবং সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর সম্ভব হলে একটি রেলসেতু নির্মাণ করবে, বর্তমান বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষিত জাতি গড়ে তোলা হবে, প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া হবে, গাইবান্ধা জেলায় ভূমি ও গৃহহারা লোকদের বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ করে দেয়ার পাশাপাশি এ অঞ্চলে বিশেষ অর্থনেতিক অঞ্চল গঠন করে কল-কারখানা স্থাপন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত করে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করে বলেন, ২০৪১ সাল নাগাদ এ দেশ উন্নত দেশে পরিণত হবে।
এরআগে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত