সহিংসতায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে নাঃ সাতক্ষীরায় প্রধানমন্ত্রী

535

Published on জানুয়ারি 20, 2014
  • Details Image


তিনি আরো বলেন, এসব নৃশংসতার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না এবং এসব দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা আজ বিকেলে সাতক্ষীরা সরকারি হাইস্কুল মাঠে এক বিশাল জনসভায় ভাষণকালে এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ মুজিবর রহমানের সভাপতিত্বে এ জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক মন্ত্রী ড. দীপু মনি, মোস্তফা লুৎফুল্লাহসহ স্থানীয় সংসদ সদস্যরা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ১১টি উন্নয়ন প্রকল্প এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ এর পর থেকে সীমান্তবর্তী এ জেলায় বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের নৃশংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে চেক বিতরণ করতে আজ দুপুরে এখানে আসেন।
শেখ হাসিনা জনগণের শান্তি বিনষ্ট না করার জন্য বিএনপি চেয়ারপার্সনের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কটের জন্য তাকে ভুলের চরম মাশুল দিতে হবে। তিনি বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশে বিএনপির মিত্র জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তিনি বলেন, তারা শুধু নির্বাচন বর্জনই করেনি বরং তারা নির্বাচন প্রতিরোধের জন্য সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়েছে।
আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা নানাধরনের অপকর্ম চালিয়ে সাতক্ষীরা জনগণের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছিল। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের হত্যাকাণ্ড, বাড়িঘর, দোকানপাটে আগুন, গাছপালা কেটে ফেলা, রেললাইন উপড়ে ফেলা, রাস্তা কেটে ফেলাসহ বিভিন্ন অপকর্মের কারণে সাতক্ষীরা শান্তিপ্রিয় জনগনের জীবনকে দূর্বিষহ করে তুলেছিল।
তিনি বলেন, তারা অর্থনীতি কর্মকাণ্ডে অস্থিরতা সৃষ্টি এবং স্কুল খোলা রাখাও জটিল করে তুলেছিল। কিন্তু সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ দমনে আমাদের সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং জনগণ সাহসিকতার সঙ্গে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে।
এ জন্য প্রধানমন্ত্রী সাহসী ভূমিকা পালন করে ৫ জানুয়ারি ভোট প্রদান করার জন্য জনগণকে অভিনন্দন জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ হচ্ছে শান্তি, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে একজন অশান্তি বেগম আছেন। তিনি দেশে শান্তি দেখলেই অস্থির হয়ে উঠেন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেগম জিয়া নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। অথচ আল্লাহর রহমতে সকল বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেগম জিয়া নির্বাচন ভণ্ডুল করতে পারেননি।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি নেত্রী আন্দোলন করতে ও নির্বাচন প্রতিহত করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এখন তিনি ব্যর্থতার জ্বালায় পুড়ছেন এবং আগুন দিয়ে মানুষ মারছেন। শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, মানুষ শান্তি, খাদ্য, আশ্রয় ও স্বাস্থ্যসেবা চায়। তাই তিনি জনগণের শান্তি বিনষ্ট করতে পারবেন না।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ায় একটি শান্তির দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এ দেশের জনগণ শান্তি চায়। দেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি সংগঠনের কোন স্থান নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, যারা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে সাতক্ষীরার মাটি রক্তে রঞ্জিত করেছে, তারা কেউ রেহাই পাবে না। তিনি নিজস্ব শক্তি নিয়ে এ ধরনের নৃশংসতার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এই সীমান্ত জেলার জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা স্থানীয় জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আপনারা আপনাদের নিজস্ব শক্তি নিয়ে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, আমরা আপনাদের পাশে থাকবো এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী আপনাদের পাশে আছে। সাতক্ষীরায় আর রক্তপাত হবে না। ইনশাল্লাহ আমরা এ জেলা থেকে সন্ত্রাসের মূল উৎপাটন করবো।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দেশে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। জনগণ স্বাধীনতার জন্য বর্ণ-ধর্ম নির্বিশেষে যুদ্ধ করেছে। সুতরাং সকল মত ও ধর্মের লোক সমঅধিকার ভোগ করবে। এতে কেউ হস্তক্ষেপ করতে পারবে না এবং কাউকে সে সুযোগ দেয়া হবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ইতোমধ্যেই আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের ঘরবাড়ি নির্মাণ করে দেয়ারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)’কে ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ি নির্মাণ করে দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
(সুত্রঃ বাসস)

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত