600
Published on ডিসেম্বর 31, 2013
তিনি বলেন, বেগম জিয়া সারাদেশে হরতাল ও অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি দিয়ে গরীব মানুষের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি (খালেদা জিয়া) যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় সরকারের বিরুদ্ধে তথাকথিত আন্দোলনের নামে নিরীহ মানুষ হত্যা করছেন।
প্রধানমন্ত্রী আজ বিকেলে এখানে তরফমৌজা হাইস্কুল মাঠে এক বিশাল নির্বাচনী সমাবেশে ভাষণকালে আরো বলেন, ‘আমি বেগম জিয়াকে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় মানুষ পুড়িয়ে মারার মতো ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে বলছি।’
এর আগে শেখ হাসিনা ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে অবতরণ করেন এবং সেখান থেকে তিনি তাঁর নির্বাচনী এলাকা ও শ্বশুর বাড়ি পীরগঞ্জ যান।
প্রধানমন্ত্রীর মোটর বহর সভাস্থলে যাওয়ার সময় প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে সকল স্তরের হাজার হাজার মানুষ রাস্তার দুইপাশে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিয়ে ও হাত নেড়ে গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানায়।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সারাদেশের কোথাও উন্নয়ন প্রচেষ্টার ন্যূনতম চেষ্টার স্বাক্ষরও রাখেনি। তিনি বলেন, তারা কেবল অর্থহীন হরতাল ডেকে গরীবের পেটে লাথি মারতে জানে। তারা ব্যাপকহারে গাছ কেটে এবং জনগণের চলাচলে বাধা সৃষ্টির জন্য রাস্তা কেটে ফেলা ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না।
জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর সরকারের অভূতপূর্ব সাফল্যের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার জাতীয় অর্থনীতির বৃহত্তর স্বার্থে খাদ্য এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কৃষকদের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে সারের দাম তিন দফা কমিয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, এই প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে আমাদের সরকার কৃষকদের মাত্র ১০ টাকা জমা দিয়ে ব্যাংক হিসেব খোলার সুযোগ দিয়েছে। এর পাশাপাশি বর্গচাষীদের জন্য ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থাও নিশ্চিত করা হয়েছে।
(দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি)
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে- ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলে জনগণের বৃহত্তর কল্যাণ নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, এই লক্ষ অর্জনে আমরা নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
শিক্ষাখাতে উন্নয়নে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সকল স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের আধুনিক শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে একটি সময়োপযোগী শিক্ষা নীতি প্রণয়ন করেছে।
তাঁর সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির বিভিন্ন সুফলের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের দোরগোড়ায় সরকারের সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বর্তমান সরকার ব্যাপকহারে মোবাইলের দাম এবং কলচার্জ হ্রাস করায় দেশের ১০ কোটিরও বেশি মানুষ এখন মোবাইল ফোন ব্যবহার করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার গত পাঁচ বছরে প্রায় ১ কোটি বেশি তরুণ-তরুণীর বিদেশে চাকরির ব্যবস্থা করেছে। এতে তাদের পরিবারে স্বচ্ছলতা এসেছে এবং রেমিটেন্সের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।
রংপুর বিভাগের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অঞ্চল একসময় খুবই অবহেলিত ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এই এলাকায় ব্যাপকহারে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করায় রংপুরের চেহারা পাল্ট গেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার একের পর এক নির্বাচনী অঙ্গীকার পূরণ করেছে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণে রংপুরকে বিভাগ ও সিটি কর্পোরেশন ঘোষণা করেছে।
তিনি বলেন, সড়ক ও সেতু নির্মাণের ফলে এই বিভাগের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে উন্নত হয়েছে। সরকার জনগণের দাবি অনুযায়ী পীরগঞ্জ থেকে হিলি পর্যন্ত সরাসরি সড়ক নির্মাণ করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, যুগ যুগ ধরে এ অঞ্চলে মঙ্গা ছিল নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু বর্তমান সরকার এ অঞ্চলের জনগণের জন্য ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করায় মঙ্গা দূর করেছে।
তিনি বলেন, গত পাঁচ বছরে রংপুরে মঙ্গা দেখা যায়নি। মঙ্গা যাতে আর ফিরে না আসে সে ব্যাপারে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ যেন নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারে সে লক্ষ্যে সরকার কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে।