610
Published on সেপ্টেম্বর 5, 2013তিনি বলেন, 'মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গঠনের লক্ষ্য নিয়ে আওয়ামী লীগ কাজ করছে। আমরা দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়বো যেখানে আমাদের শিশুরা উচ্চ শিক্ষা নিয়ে বেড়ে উঠবে এবং আধুনিক জীবনমান পাবে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের ভাত ও ভোটের অধিকার নিশ্চিত করেছে। বর্তমান সরকার উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার পাশাপাশি সৌন্দর্যবর্ধনে ইতোমধ্যেই অনেকগুলো প্রকল্প বাস্তবায়ন করায় ঢাকা মহানগর একটি আধুনিক ও সুন্দর নগরীতে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'আওয়ামী লীগ দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা গোটা দেশের উন্নয়ন চাই, কোন বিশেষ ব্যক্তির নয়।'
তিনি বলেন, বাংলাদেশে উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। বিশ্ব সভায় বাংলাদেশ আবারও মর্যাদার আসন পেয়েছে, বিশ্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেলের স্বীকৃতি পেয়েছে। তাই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে দেশবাসীর আরেকটিবার সহযোগিতা চাই। উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখার জন্য যে কাজ আমরা শুরু করেছি তা শেষ করার জন্য দেশবাসীর কাছে আরেকটিবার নৌকা মার্কায় ভোট চাই। ঢাকার প্রতিটি আসনে আমাদের প্রার্থীদের নির্বাচিত করায় আমি ঢাকাবাসীকে অভিনন্দন জানাই।আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আমি ঢাকাবাসীকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই ১/১১ এর সময় মাত্র ১৫ দিনে ২৫ লাখ সাক্ষর আপনারা দিয়েছিলেন আমার মুক্তির জন্য, আপনাদের কারণেই আমি দেশে ফিরে আসতে পারি, জানান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) সন্ত্রাস, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ দিতে পারেন আর কিছুই দিতে পারেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করার শোকাবহ ১৫ আগস্টের ৩৮তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত এক জনসভায় ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী আজ এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, একটি মহল যারা পবিত্র কোরআন পুড়িয়েছে, মসজিদে আগুন দিয়েছে, মানুষ হত্যা করছে, হত্যাকারীদের প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে; তারা বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণ চায় না।
চার বছরের উন্নয়নের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় এসেছে দেশের উন্নয়নে কাজ করেছে। বিদ্যুৎ সংকট সমাধান, রাজধানীর পানি সংকট দূর, যোগাযাগ, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সরকারের পদক্ষেপ তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের দারিদ্র্য হার হ্রাসের ক্ষেত্রে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে, অতি-দরিদ্র লোকজনের মধ্যে বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করছে এবং জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিচ্ছে। বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বই-পুস্তক বিতরণের জন্য সরকারের কর্মসূচির উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। তিনি বলেন,' আমরা আশা করছি, জাতি তাদেরকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলবে। আমরা তাদের জন্য বিশেষ করে যোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তিসহ আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চালু করেছি।'
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ উন্নয়ন করলেও বিএনপি ক্ষমতায় এসে বরাবর দুর্নীতি ও সন্ত্রাস করেছে। আবার তারা ক্ষমতায় ফিরলে একই কাজ করবে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির খাম্বা লিমিটেড শুধু কতগুলো খাম্বা দিয়ে গেছে। আওয়ামী সভাপতি বলেন, বিএনপি শুধু দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ দিতে পারে। আর আমরা পানি ও বিদ্যুৎ দিয়েছি, চিকিৎসা সেবা মানুষের হাতে কাছে পৌছে দিত আমরা সরকারি হাসপাতাল করে দিয়েছি। শিক্ষার উন্নয়নে স্কুল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছি। বিনা মূল্যে বই বিতরণ করেছি। ছাত্রদের হাতে ল্যাপটপ তুলে দিয়েছি। মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম করে দিয়েছি। ঢাকার যানজট নিরসনে মিরপুর, বনানী ফ্লাইওভার করেছি। শিগগিরই যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার উদ্বোধন হবে। তিনি আরো বলেন আওয়ামী লীগ যা ওয়াদা দেয় তা পূরণ করে। রমজান মাসে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছি, মা-বোনেরা রাত ১/২ পর্যন্ত শান্তিতে বাজার করেছে।
আগামীবার ক্ষমতায় ফিরলে ঢাকার উন্নয়নে মেট্রো রেল ও লিংক রোড করবে বলেও জানান শেখ হাসিনা। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তার নির্বাচনী অঙ্গীকারের উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণকে দেয়া তাদের অঙ্গীকার রক্ষায় বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, 'আমাদের বিগত সরকারের মেয়াদে আমরা মূল্য কমিয়ে দিয়ে মোবাইল ফোন জনগণের কাছে সহজলভ্য করেছিলাম এবং এবার আমাদের সরকার জনগণের কাছে ল্যাপটপ ও স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়ার পর জনগণ স্বাধীনতা পেয়েছিল। তারা মাতৃভাষার অধিকারও পেয়েছে। আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে তারা সাংবিধানিক শাসন চালু রাখতে পারে।
জাতীয় সংসদের উপ-নেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, আওয়ামী লীগ উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমীর হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মদ নাসিম ও সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ ও ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া অন্যান্যের মধ্যে সভায় বক্তৃতা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ আজিজ। আবদুল হক সবুজ ও শাহে আলম মুরাদের পরিচালনায় জনসভার শুরুতেই বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ আগস্টে সকল শহীদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়।