1384
Published on ফেব্রুয়ারি 24, 2025জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় (ওএইচসিএইচআর) জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড এবং মানবাধিকার লংঘন বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। আওয়ামী লীগ মনে করে, রিপোর্টটি সম্পূর্ণরূপে পক্ষপাত দুষ্ট, একপেশে ও মনগড়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত করা হয়েছে। গণতন্ত্রের বিপরীতে একটি অবৈধ ও অসাংবিধানিক জঙ্গি গোষ্ঠীর রাজনৈতিক এসাইনমেন্ট হিসেবে ওএইচসিএইচআর এই জঘন্য পক্ষপাতদুষ্ট এবং নিরপেক্ষতা, বস্তুনিষ্ঠতা, পেশাদারিত্ব বিবর্জিত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
ওএইচসিএইচআর তাদের প্রতিবেদনের শুরুতে জুলাই-আগস্ট এর ঘটনা নিয়ে যে প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছে, সেটি সম্পূর্ণ অসত্য। বরং জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক শাসন নশ্চাত করার লক্ষ্যে যে দেশি-বিদেশি গোষ্ঠী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল, তাদের প্রদত্ত নেরিটিভই ওএইচসিএইচআর এখানে তুলে ধরেছে। অতি সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এবং যুক্তরাষ্ট্রের হোয়াইট হাউজে রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সামনে বাংলাদেশের এই ঘটনা প্রবাহ নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি প্রকাশ্যে উল্লেখ করা হয়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অতি সাম্প্রতিক বক্তব্যেও বাংলাদেশ নিয়ে ষড়যন্ত্রের বিষয়টি উঠে আসে।
এই ঘটনা প্রবাহের প্রকৃত প্রেক্ষাপট হচ্ছে- ছাত্রদের আন্দোলন ছিল সরকারী চাকুরীতে কোটা সংস্কার সম্পর্কিত। তাদের সেই দাবির প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সালে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করেছিলেন। ছাত্ররা প্রধানমন্ত্রীর ঐ সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিল। ২০২৪ সালের জুন মাস পর্যন্ত এই নিয়ে আর কোন সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। কোটা বাতিল সংক্রান্ত ২০১৮ সালের সরকারি সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কয়েকজন সন্তানের হাইকোর্টে মামলার প্রেক্ষিতে জুন ২০২৪ এ হাইকোর্ট কোটা বাতিল সংক্রান্ত সরকারি আদেশ বাতিল করে। এরপর মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্মের জন্য কোটা পুনর্বহাল হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ছাত্রদের প্রত্যাশার কথা চিন্তা করে ২০১৮ সালের কোটা বাতিলের বিষয়টি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তাই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকার হাইকোর্টের রায় বাতিল চেয়ে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে। পাশাপাশি ইতোমধ্যে হাইকোর্টের এ রায়ের প্রেক্ষিতে যাতে কোন জটিলতা সৃষ্টি না হয় সেজন্য এই রায় তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত রাখার জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করে। সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় স্থগিত রাখে। এর ফলে কোটা আবার বাতিল হয়ে যায়। এ নিয়ে ছাত্রদের কিংবা চাকুরি প্রত্যাশীদের কোন ক্ষতি বা সমস্যা হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে ছাত্রদের বলা হয়েছে, বিষয়টি যেহেতু আদালতে বিচারাধীন তাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে সুপ্রিম কোর্ট। আদালতে সরকার ছাত্রদের পক্ষেই থাকবে। সরকারের সিদ্ধান্ত এবং ছাত্রদের প্রত্যাশা ছিল এক।
একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নস্যাৎ করার হীন উদ্দেশ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী হামলা চালায়। পরবর্তীতে ঢাকায় কয়েকটি রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ব্যাপক রাষ্ট্রীয় ক্ষতিসাধন করে। অরাজকতা ও অস্থিরতা সৃষ্টি করে সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে বিক্ষোভের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে ঘাতক দিয়ে কয়েকজন ছাত্র হত্যা করা হয়। সরকার উৎখাতের এই ধরনের ষড়যন্ত্রের ঘটনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আমরা দেখেছি।
এই প্রেক্ষিতে ১৭ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে ছাত্রদের দাবির বিষয়টি উল্লেখ করে বলেছিলেন, বিষয়টি যেহেতু সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন তাই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবে সুপ্রিম কোর্ট। তিনি ছাত্রদের এই বলে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, ছাত্ররা নিরাশ হবে না। সরকার ছাত্রদের পক্ষেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে ঘটে যাওয়া কয়েকটি প্রাণহানীর ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারকের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য তিনি সহযোগিতার ঘোষণা দেন। ছাত্রদের প্রত্যাশা অনুযায়ী সরকারের বিশেষ আবেদনের প্রেক্ষিতে কোটা বিষয়ক মামলার শুনানি এগিয়ে আনা হয়। সরকারের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেলের বিশেষ অনুরোধে ছাত্রদের প্রতিনিধিকে মামলায় পক্ষভুক্ত করা হয়। একুশে জুলাই সুপ্রিম কোর্ট ইতোমধ্যে প্রদত্ত হাইকোর্টের রায় বাতিল করে চূড়ান্ত রায় দেয়। কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্রদের প্রত্যাশা সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবনে সহিংস ঘটনায় নিহত সকলের পরিবারকে সমবেদনা জানিয়ে প্রতি পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা অনুদান দেন। সিএমএইচ সহ বিভিন্ন বিশেষায়িত হাসপাতালে ছাত্র সহ সকল আহত ব্যক্তিদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। সকল আহত ব্যক্তিদের দেখতে তিনি নিজে হাসপাতালগুলোতে যান এবং তাদের সবাইকে নিজের হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
এতকিছুর পরও বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা মূলত ঢাকায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ব্যাপক ধ্বংস সাধন করে। জুলাই ও আগস্টে যে হত্যাকাণ্ড গুলো ঘটেছে এগুলো ছিল পরিকল্পিত। মূলত ক্ষোভ, অসন্তোষ ও অস্থিরতা সৃষ্টির মাধ্যমে সরকার উৎখাতের লক্ষ্যে এ হত্যাকান্ড ও হামলার ঘটনাগুলো ঘটানো হয়েছিল। সরকার দায়িত্বে থেকে কেন এ হত্যাকাণ্ড ঘটাবে? এ হত্যাকাণ্ডে কার লাভ, কার ক্ষতি?
ওএইচসিএইচআর অবৈধ ও অসাংবিধানিক জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে এই রিপোর্টে নগ্নভাবে লিখেছে, ‘ছাত্রদের বিক্ষোভের পাশাপাশি শাসন ব্যবস্থার ভঙ্গুরতা, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকার নিয়ে জনগণের হতাশার কারণে নারী- শিশু সহ হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভে যোগ দিয়েছিল। ছাত্র-জনতা অর্থপূর্ণ সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবি জানিয়েছিল’।
ওএইচসিএইচআর এই বক্তব্যের মাধ্যমে তার মূল প্রতিষ্ঠান জাতিসংঘের সিদ্ধান্তের অবমাননা করেছে। কারণ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেড় দশকে আর্থ-সামাজিক- সংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক অগ্রগতির মাধ্যমে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল বিশ্বের শীর্ষস্থানে পৌঁছেছিল। মিলিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল বা এমডিজি'র লক্ষ্যমাত্রা শেখ হাসিনার সরকারের সময় নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই অর্জিত হয়। এই অর্জনে জাতিসংঘ সহ অন্যান্য বিশ্ব সংস্থা বাংলাদেশের ভূয়ষি প্রশংসা করেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নত হয়। শেখ হাসিনার সরকারের সময় এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশের অগ্রগতি উন্নয়নশীল বিশ্বের মধ্যে প্রথম স্থানে ছিল। দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নে ঈর্ষণীয় সফলতার জন্য বাংলাদেশকে জাতিসংঘ ও বিশ্বব্যাংক সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দীর্ঘ দেড় দশকে বাংলাদেশের মানুষের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের কারণেই বাংলাদেশকে এই স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তাই ওএইচসিএইচআর এর উল্লেখিত বক্তব্য যে অসত্য ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এটি প্রমাণিত।
ওএইচসিএইচআর তাদের প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, জুলাই আগস্টের ঘটনাবলী নিয়ে তথ্যানুসন্ধানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে তাদের যে টার্মস অফ রেফারেন্স প্রস্তুত হয়েছে, তাতে এই তথ্যানুসন্ধানের সময়কাল ছিল ১ জুলাই থেকে ১৫ আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত।
রিপোর্টে ওএইচসিএইচআর নির্লজ্জের মত নগ্নভাবে মিথ্যাচার করেছে। সেখানে লিখেছে, ৫ই আগস্ট ২০২৪ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকার নিরাপত্তা বাহিনী কিংবা আওয়ামী-সমর্থকদের দ্বারা সংঘটিত কোন গুরুতর মানবাধিকার সংগঠনের ঘটনা তদন্ত বা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য কোন উদ্যোগ নেয়নি। তাদের এই বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৭ই জুলাই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে সকল হত্যাকান্ড ও সন্ত্রাসী হামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত ও দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতির নেতৃত্বে উচ্চপর্যায়ের বিচার বিভাগীয় কমিটি গঠন করেন। এই বিচার বিভাগীয় কমিটি কার্যক্রম শুরু করেছিল। ৫ই আগস্টের পর অবৈধ অসাংবিধানিক অন্তবর্তী সরকার এই কমিটি বাতিল করেছিল।
এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী বিক্ষোভ ও সহিংসতা মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন যেন কোন প্রাণহানি না ঘটে। এ লক্ষ্যে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে কেবলমাত্র নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশনা দিয়েছিলেন। জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহ থেকে তিনি যেকোন সংঘর্ষ ও অস্থিরতার ঝুঁকি এড়ানোর জন্য আওয়ামী লীগের সকল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ স্থগিত রেখেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে ঢাকায় লক্ষ লক্ষ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর সমাবেশ ঘটিয়ে পরিস্থিতি সরকারের অনুকুলে আনতে পারতেন। কিন্তু এতে প্রাণহানিরও আশঙ্কা ছিল। এছাড়া,
প্রধানমন্ত্রী চাইলে দেশে জরুরি অবস্থা জারি করে সম্পূর্ণ বল প্রয়োগের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে পারতেন। তিনি সাধারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবং সকল ধরনের প্রাণহানি এড়ানোর জন্য তার পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টে পক্ষপাতমূলকভাবে লিখেছে, ৫ই আগস্ট পরবর্তী সরকার মানবাধিকার লংঘন এবং অপব্যবহারের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ ৫ই আগস্ট থেকে সারাদেশে পুলিশসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের যেভাবে হত্যা করা হলো যা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে, সেই হত্যাকাণ্ড সহ অন্যান্য সন্ত্রাসী হামলার বিচারের জন্য অবৈধ জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার যে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি, এই বিষয়ে ওএইচসিএইচআর জাতিসংঘের একটি মানবাধিকার সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে মানবাধিকার ও মানবতার পক্ষে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে সারা বাংলাদেশে পুলিশ হত্যাসহ যেভাবে গণহত্যা চালানো হয়েছে, যেভাবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী-সমর্থক এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে, সেটি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। রিপোর্টের দ্বিতীয় ভাগে দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের নির্বিচারে হত্যাকাণ্ডের সামান্য কিছু চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সুনির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে পুলিশ বাহিনীর সদস্য সহ সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর পরিচালিত এই নির্মম হত্যাকাণ্ড আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ।
এই গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যুক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার ও বিচারে অবৈধ জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। ওএইচসিএইচআর এই গণহত্যা, মানবতা বিরোধী অপরাধ ও সন্ত্রাসী হামলাগুলোকে 'retaliatory violence' এবং 'revenge violence' বা প্রতিশোধমূলক হামলা হিসেবে অভিহিত করে অনেকটা বৈধতা দেয়ার চেষ্টা করেছে। আবার রিপোর্টের শেষ ভাগে সুপারিশের অংশে কিছুটা স্ববিরোধী অবস্থান নিয়ে এ সকল অপরাধের বিচারের জন্য দায়সারা ভাবে সুপারিশ করেছে । মনে হচ্ছে, পুলিশ বাহিনীর সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী সমর্থকদের কোন মানবাধিকার নেই। ওএইচসিএইচআর এর এই বৈষম্য মূলক অবস্থান ১৯৪৮ সালের সার্বজনীন মানবাধিকারের ঘোষণা অর্থাৎ ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অফ হিউম্যন রাইটস, ১৯৬৬ সালের ইন্টারন্যাশনাল কভেনেনটস অন সিভিল এন্ড পলিটিকাল রাইটস এর সরাসরি লংঘন।
বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা দেশের ৪৫০ টি থানায় হামলা চালিয়ে শত শত পুলিশকে নির্মমভাবে হত্যা করল। গর্ভবতী নারী পুলিশ সদস্য পর্যন্ত হত্যার শিকার হল। সারাদেশে হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী-সমর্থককে নির্বিচারে হত্যা করা হলো । এই সকল হত্যাকাণ্ড যা পরিষ্কার গণহত্যা- এই গণহত্যার জন্য এই রিপোর্টে কাউকে দায়ী করা হয়নি। বাংলাদেশের সকল মানুষ জানে এই হত্যাকারীরা কারা । তারা একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী । তারা সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী সমর্থক এবং পুলিশকে টার্গেট করে যেভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছিল সেটি ১৯৫০ সালে প্রণীত গণহত্যার কনভেনশন অনুযায়ী পরিষ্কার গণহত্যা ।
আমাদের এই প্রতিবেদনের পূর্বের অংশে এটি উল্লেখ করা হয়েছে, ওএইচসিএইচআর এর রিপোর্টে আওয়ামী লীগ নেতা কর্মী ও পুলিশের উপর আক্রমণ ও হত্যাকান্ডকে খুব ক্ষুদ্র ঘটনা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। ৫ই আগস্ট এবং তৎপরবর্তী গণহত্যাকে আড়াল করা হয়েছে। তবে কিছু কিছু হত্যাকান্ড ও ধর্ষণের ঘটনা আংশিকভাবে উল্লেখ করেছে। রিপোর্টের ২১৯ নং প্যারায় যশোরের সংসদ সদস্য শাহিন চাকলাদারের মালিকাধীন একটি হোটেলে বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ২০০ এর বেশি মানুষকে হত্যা করলেও রিপোর্টের ২১৯ নং প্যারায় সেখানে ২৪ জন মানুষ হত্যার কথা বলা হয়। এছাড়া আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্যের মালিকানাধীন গাজী টায়ার ফ্যাক্টরীতে আগুন জ্বালিয়ে প্রায় সাড়ে তিনশোর বেশী পুড়িয়ে মারা হল। এই বিষয়ে তাদের কোন উদ্বেগ নেই।
রিপোর্টের ২২২ নং প্যারায় উল্লেখ করা হয়, কত সংখ্যক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী- সমর্থক এবং পুলিশ হত্যা করা হয়েছিল, সে সম্পর্কে ওএইচসিএইচআর নিজ থেকে কোন ধারনা করতে পারছে না। তারা বলছে, কিছু তালিকা তারা পেয়েছে। কিন্তু এগুলো তারা ভেরিফাই করতে সক্ষম ছিল না। এতে এটি পরিষ্কার, ওএইচসিএইচআর ৫ই আগস্ট এবং পরবর্তী সময়ে সারাদেশে পুলিশসহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী- সমর্থক কে হত্যা করা হলো, তাদের বাড়িঘর,দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করা হলো, এ বিষয়ে ওএইচসিএইচআর এর কোন উদ্বেগ নেই। অথচ এটি জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান।
২২৪ নং প্যারায় ওএইচসিএইচআর বলছে, "OHCHR nevertheless strongly recommends prompt and independent investigation into all reported incidents of this kind, which, if left unaddressed, pose major risks to the country's social fabric, demographic culture and cohesion going forward." আমরা মনে করি এ ধরনের একটি পক্ষপাতদুষ্ট ও একপেশে রিপোর্ট প্রকাশ করে এই প্রতিষ্ঠান নিজেই এ ধরনের সবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছে।
অবৈধ ও অসাংবিধানিক জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনা সহ হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী এবং দেশের অসংখ্য সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, শিক্ষক, শিল্পীসহ দেশের অসংখ্য পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের সদস্যের বিরুদ্ধে হাজার হাজার মিথ্যা হত্যা মামলা দিয়েছে। এ সকল মামলায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে অজ্ঞাত আসামী করা হচ্ছে। এ ধরনের মিথ্যা মামলার মাধ্যমে অবৈধ সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থা কে ব্যবহার করে সারাদেশে লক্ষ লক্ষ নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করছে। ওএইচসিএইচআর এর রিপোর্টে এ বিষয়ে কোন উদ্বেগ নেই। এই ধরনের কর্মকাণ্ড যে আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারের পরিপন্থী, এ নিয়ে তাদের কোন উদ্বেগ নেই। বরং রিপোর্টের ২২৬ নং প্যারায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ঢালাও হত্যা মামলা দেয়ার বিষয়ে অবৈধ দখলদার সরকারের বক্তব্যকে সন্তোষজনক হিসেবে দেখছে ওএইচসিএইচআর।
রিপোর্টের ২৬২ নং প্যারায় জুলাই ১৫ থেকে আগস্টের ৮ তারিখ পর্যন্ত হত্যাকান্ড সহ সংঘটিত সকল সন্ত্রাসের জন্য অবৈধ অন্তবর্তী সরকারের দেয়া দায়মুক্তির বিষয়টি উঠে এসেছে। সেই বিষয়ে ওএইচসিএইচআর খুব নমনীয়ভাবে ক্রিমিনাল জাস্টিস সিস্টেমের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছে।
ওএইচসিএইচআর তাদের রিপোর্টের ৩১৫ নং প্যারায় আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পুলিশ বাহিনীতে তথাকথিত দলীয়করণের অভিযোগ আনে। এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য অনেকটা বিএনপি জামাতের বক্তব্যের মতোই। পাশাপাশি ওএইচসিএইচআর রিপোর্টের ৩৩৭ নং প্যারায় বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বক্তব্য দেয়। তারা অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় আনা এবং ন্যায্য ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার উপর জোর দেয়। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যেভাবে সরকারি মদদে পুলিশ বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছে, অবৈধ ও অসাংবিধানিক জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশ বাহিনীকে ভেঙ্গেচুরে যেভাবে নগ্নভাবে দলীয়করণ করেছে, পুলিশের সকল সিনিয়র নিরপেক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাকে যেভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেখানে ন্যায্য, কার্যকরী ও নিরপেক্ষ তদন্ত কিভাবে করবে, কারা করবে? পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সকল পদে রাজনৈতিক বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন সব কর্মকর্তাকে যারা অনেক আগেই চাকুরি থেকে অবসরে গিয়েছেন। দলীয়করণের ঝুঁকি ছাড়াও অনেক আগে অবসরে যাওয়া এসকল কর্মকর্তাকে পুলিশ বাহিনীর মত সংবেদনশীল জায়গায় নিয়োগ দেয়া জনস্বার্থ ও আইনের শাসনের নীতি পরিপন্থী। কারণ বহু পূর্বে অবসরে যাওয়া এসকল কর্মকর্তার মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে সমাজের নানা সেক্টরের কাজের সাথে যুক্ত। এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাতের ঝুঁকি থাকে। ওএইচসিএইচআর এর এই রিপোর্টে এসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ ও আইনের শাসনের বিষয় আমলে নেয়া হয়নি। জাতিসংঘের একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এই ধরনের পক্ষপাত মুলক অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়।
রিপোর্টের ৩৩১ নং প্যারায় মহান মুক্তিযুদ্ধের ফসল ১৯৭২ সালের সংবিধান এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ নিয়েও এক প্রকার কটাক্ষ করা হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় এবং বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের ইতিহাসের বিশেষত্ব ও স্বতন্ত্রতা সম্পর্কে রিপোর্টের খসড়া প্রস্তুতকারী ওএইচসিএইচআর এর কর্মকর্তাদের সীমিত জ্ঞ্যান থাকা দোষের নয়। তবে বাঙ্গালির মুক্তি সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ যা সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সে বিষয়ে সম্যক জ্ঞ্যান অর্জন না করে জাতিসংঘের কোন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সংবিধান ও সাংবিধানিক মূলনীতির বিরুদ্ধে যেকোনো মন্তব জাতিসংঘের মর্যাদা হানি করে।
রিপোর্টের ৩৩২ নং প্যারায় মন্তব্য করা হয় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে শিক্ষা ও সামাজিক খাতে কোন উন্নয়ন হয়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের দেড় দশক সময়ে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল সহ দেশের সর্বত্র শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা, নারীর ক্ষমতায়ন সহ আর্থ-সামাজিক খাতে যে বৈপ্লবিক অগ্রগতি হয়েছে, শেখ হাসিনার সামাজিক নিরাপত্তামূলক কার্যক্রম যে সারা পৃথিবীতে প্রশংসা কুড়িয়েছে সে তথ্য কি তাদের জানা নেই?
ওএইচসিএইচআর এর নগ্ন পক্ষপাতদুষ্ট অবস্থানের প্রকাশ পাওয়া যায় রিপোর্টের ২৯০ নং প্যারায়। সেখানে তারা কেবলমাত্র বিক্ষোভকারী হতাহতের ঘটনাকে মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে আখ্যা দেয়। ছাত্র বিক্ষোভের নামে ঢাকায় বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় হামলা চালাল বিএনপি জামাতের সন্ত্রাসিরা। এখন সারা পৃথিবী জেনে গেছে, ছাত্র বিক্ষোভের আড়ালে দেশের গনতন্ত্র ও সাংবিধানিক শাসন নস্যাৎ করার লক্ষ্যে দেশী বিদেশি ষড়যন্ত্র হয়েছিল। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে বিক্ষোভের সুযোগে কিছু ছাত্র হত্যা করিয়েছিল। এছাড়া, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দেশের জননিরাপত্তা তথা মানুষের বাড়াবাড়ি থাকে কিংবা তারা নিজেরা যদি কোন অপরাধ করে থাকে, দেশের প্রচলিত আইনে তাদের বিচারের বেবস্থা রয়েছে।
এক্ষেত্রে ইন্টারন্যাশনাল ও মিউনিসিপাল আইনে যে সকল বিধি বিধান আছে, সেগুলো প্রযোজ্য হবে । কিন্তু রাজনৈতিক কারণে এসকল ঘটনায় সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের উপর মানবতা বিরোধী অপরাধের দায় চাপানো সম্পূর্ণ বেআইনি ও আইনের শাসনের পরিপন্থি।
অন্যদিকে ৫ আগস্ট এর পূর্বে ও পরে পুলিশ সহ শত শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে যে নৃশংসভাবে হত্যা করা হলো, সে বিষয়টিকে তারা মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে দেখছে না। এটি শুধুমাত্র মানবতা বিরোধী অপরাধই নয়, এটি গণহত্যার পর্যায়েও পড়ে। রিপোর্টে রোম স্টাটিউট অফ ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, যেহেতু বিক্ষোভকারীদের সুনির্দিষ্ট ভাবে টার্গেট করে আক্রমণ করা হয়েছিল, তাই এটি আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় মানবতা বিরোধী অপরাধ। অথচ বিএনপি জামাত গোষ্ঠী সারাদেশে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পুলিশ ও সংখ্যালঘুদের উপর হত্যাকাণ্ড সহ যেসব সন্ত্রাসী হামলা চালালো, তাদেরকে টার্গেট করেই সেই আক্রমণ চালিয়েছে। সন্ত্রাসীদের টার্গেট কিন্তু সুনির্দিষ্ট ছিল। আইসিটি সংক্রান্ত রোম স্টাটিউটের বিধান অনুযায়ী এ সকল হত্যাকাণ্ড অবশ্যই মানবতার বিরোধী অপরাধ। এ ধরনের অপরাধ ১৯৪৮ সালের জাতিসংঘ গণহত্যা কনভেনশনের আওতায় গণহত্যা হিসেবেও চিহ্নিত। ওএইচসিএইচআর এর দৃষ্টিভঙ্গি মানবাধিকারের মূল সনদ ১৯৪৮ সালের ইউনিভার্সেল ডিক্লারেশন অফ হিউম্যান রাইটস, ১৯৬৬ সালের ইন্টারন্যাশনাল কভেনেনটস অন সিভিল এন্ড পলিটিক্যাল রাইটস এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের সরাসরি লঙ্ঘন। যে অপরাধ গুলো সাধারণ দৃষ্টিতেই (prima facie case) মানবতা বিরোধী অপরাধ ও গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে, সেগুলোকে সেভাবে গ্রহণ না করে যে অপরাধ গুলো কোন ভাবেই মানবতা বিরোধী অপরাধ কিংবা গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে না, ওএইচসিএইচআর সেই অপরাধ বা আইনের লংঘনকে মানবতা বিরোধী অপরাধ বা গণহত্যা হিসেবে গ্রহণ করছে।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টের ২৯০ নং প্যারায় স্ববিরোধী বক্তব্য উপস্থাপন করেছে। রিপোর্টের ২৯০ নং প্যারায় বলছে, তাদের কাছে যুক্তিসঙ্গত কারণ রয়েছে এটি বিশ্বাস করা যে, জুলাই-আগস্টে বিক্ষোভকারীদের উপর যে হামলা হয়েছিল, সেটি মানবতা বিরোধী অপরাধ ছিল। সেখানে আবার বলছে, ওএইচসিএইচআর যেভাবে ঘটনাগুলোর সত্যতা নির্ধারণ করেছে, সেটি ফৌজদারি মামলায় আদালত যেভাবে অপরাধ প্রমাণ করে, তার চেয়ে নিম্নমানের। সে কারণে ওএইচসিএইচআর মানবতাবিরোধী অপরাধের বিষয়গুলো আরও প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করে। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে যদি আরও প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা থাকে, তাহলে ওএইচসিএইচআর কেন বলল যে, তাদের কাছে যুক্তিসঙ্গত ভাবে মনে হয়েছে এটি মানবতার বিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে। ক্রিমিনাল জাস্টিস বা ফৌজদারি আইনের একটি সার্বজনীন মৌলিক নীতি হচ্ছে, কোন অপরাধকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হলে অপরাধকে সন্দেহাতিতভাবে প্রমাণ করতে হয়। অর্থাৎ শতভাগ প্রমাণ করতে হবে যে, অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। এর বিপরীতে সামান্য পরিমাণ সন্দেহ থাকলে অপরাধ প্রমাণের বিষয়টি অকার্যকর হবে। বিষয়গুলো যেহেতু বাংলাদেশের আদালতে বিচারাধীন এবং ওএইচসিএইচআর যেহেতু নিজেই বলছে যে, তাদের ফাইন্ডিংস গুলো ফৌজদারি অপরাধ প্রমাণের প্রক্রিয়ার চেয়ে নিম্নমানের এবং আরো প্রমাণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তাই এই প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কনক্লুসিভ স্টেটমেন্ট দেয়ার সুযোগ নেই এবং এই পর্যায়ে এই ধরনের স্টেটমেন্ট আইনের শাসন ও ন্যায় বিচারের নীতির পরিপন্থী- এই ধরনের বস্তুনিষ্ঠ বক্তব্য এই রিপোর্টে থাকা উচিত ছিল।
রিপোর্টের প্যারা ২৪৭ এ ওএইচসিএইচআর যে কথা বলেছে, সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। এতে এই প্রতিষ্ঠানের সম্পূর্ণ পক্ষপাতদুষ্ট মানসিকতার পরিচয় পাওয়া যায়। রিপোর্টের ঐ অংশে তারা বলেছে, "শুধুমাত্র কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকান্ড, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ইত্যাদি তদন্তের জন্যই এই বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তদন্তের ফোকাস ছিল শুধুমাত্র কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর। সরকারি বাহিনী যে ব্যাপক সন্ত্রাস করেছিল, সেটি আড়াল করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল।" প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এবং জুডিশিয়াল ইনকোয়ারি কমিটির কার্যপ্রণালীতে (টার্মস অফ রেফারেন্স) এ ধরনের কোন বিষয় ছিল না। কোন সভ্য দেশের বিচার বিভাগীয় তদন্তে এ ধরনের শর্ত থাকতে পারেনা। ওএইচসিএইচআর এই ধরনের কথা কোথায় পেয়েছে- কারা তাদের এই ধরনের মিথ্যা ও উদ্ভট তথ্য সরবরাহ করেছে সেটি জাতি জানতে চায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সহ হাজার হাজার মানুষের বিরুদ্ধে জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের জন্য শত শত মিথ্যা হত্যা মামলা দেয়া হলো। আবার এইসব হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ হিসেবে ঘোষণা দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে মামলা করা হলো। অবৈধ অসাংবিধানিক জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকারের এ ধরনের কর্মকাণ্ড যে বাংলাদেশ সংবিধানসহ আন্তর্জাতিক আইনি মানদন্ড অনুযায়ী সম্পূর্ণরূপে বেআইনি ও ন্যায় বিচারের নীতির পরিপন্থী, ওএইচসিএইচআর এর রিপোর্টে এ বিষয় নিয়ে কোন নিন্দা কিংবা উদ্বেগ নেই। আমাদের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৫(২) অনুযায়ী একই অপরাধের জন্য একাধিক বিচার প্রক্রিয়া বেআইনি ও নিষিদ্ধ (rule of double jeopardy) । এর মাধ্যমে অসাংবিধানিক এই জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টের ৩০১ নং প্যারায় বলছে, প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছে যে, ওই কর্মকর্তাদের কাছে তথ্য ছিল, জুলাই-আগস্ট এর ঘটনাবলী বিএনপি-জামাতের পরিকল্পনায়ই সংঘটিত হয়েছিল। ওএইচসিএইচআর বলছে, তারা এমন কোন তথ্য পায়নি যা এই দাবিকে সমর্থন করে। ওএইচসিএইচআর বলছে, উপরন্তু বিএনপি- জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বিক্ষোভের সময় হামলা চালানোর জন্য প্রকাশ্যে কোন নির্দেশনা দেয়নি। এই অজুহাতে ওএইচসিএইচআর জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসে বিএনপি-জামাতের কোন দায় খুঁজে পায়না। অথচ অসংখ্য প্রমাণাদি রয়েছে যে, জুলাই আগস্টের প্রাণহানি ও সন্ত্রাসী হামলায় বিএনপির জামাতের সুস্পষ্ট নির্দেশনা ছিল। বিএনপি-জামাতের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশনা ছাড়া সারাদেশে ৫ই আগস্টের আগে ও পরে দেশের ৪৫০ টি থানা সহ সারাদেশে একযোগে হামলা করা সম্ভব ছিল না। হামলাকারীদের সকলেই বিএনপি জামাতের নেতা কর্মী। এ সংক্রান্ত অসংখ্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রয়েছে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কিংবা সরকারের কেউ হামলা করার ঘোষণা দিয়েছে এই তথ্য ওএইচসিএইচআর সহ কারো কাছে নেই বরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুলাই-আগস্টে বেশ কয়েকবার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন যাতে কোন প্রাণহানি না ঘটে। যেকোনো প্রাণহানি ও জখম এড়ানোর জন্য তিনি তাদেরকে নন-লেথাল অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। উপরন্তু, ১৭ই জুলাই জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের অভিভাবক সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক করেছিলেন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য। কারণ তার কাছে তথ্য ছিল, বিএনপি-জামাত সন্ত্রাসীদের দিয়ে ছাত্র হত্যা করিয়ে এর দায় সরকারের উপর চাপাবে। তিনি বলেছিলেন, একটি অশুভ মহল ছাত্রদের হত্যা করে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর এই আশঙ্কা ও সতর্কবাণী প্রমাণিত হয়েছে। তাই জুলাই আগস্টের হত্যাকাণ্ড ও সন্ত্রাসী হামলার দায় দায়িত্ব বিএনপি জামাতের ওপর না দিয়ে একতরফাভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের উপরে চাপানোর ওএইচসিএইচআর এর এই কৌশল অগ্রহণযোগ্য। এই খোঁড়া যুক্তি জুরিসপ্রুডেন্টশিয়াল কোন নীতিতেই সমর্থনযোগ্য নয়। আমরা রিপোর্টের কোথাও দেখলাম না, জাতিসংঘের এই প্রতিষ্ঠানটি জুলাই আগস্টের ঘটনাসমূহে বিএনপি জামাতের সম্পৃক্ততা প্রমাণের কোন চেষ্টা করেছে।
রিপোর্টের ৩০৬ নং প্যারায় অবৈধ ও অসংবিধানিক অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব গ্রহণ এবং ৫ই আগস্ট পরবর্তী পরিস্থিতি বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে ৫ই আগস্ট থেকে সারাদেশে যে গণহত্যা চলেছিল, সে বিষয়টি একবারও উল্লেখ করেনি। অবৈধ জঙ্গি সরকারের নেতৃত্বে সারাদেশে বিএনপি জামাত যে 'মবতন্ত্র' চালিয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সহ লক্ষ লক্ষ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর হামলা ও অত্যাচার-নিপীড়ন চালালো, তাদের বাড়ি ঘর- দোকানপাট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালালো- এ বিষয়ে রিপোর্টে কোন উদ্বেগ নেই। বরং অবৈধ ও অসাংবিধানিক ইউনূসের কার্যক্রম কে বিনা প্রশ্নে সমর্থন করে গেছে।
ওএইচসিএইচআর তাদের পক্ষপাতদুষ্ট দৃষ্টিভঙ্গির ধারাবাহিকতায় রিপোর্টের সপ্তম ভাগের ২ নম্বর ক্লজে 'অন্তবর্তী সরকারের চলমান দায়বদ্ধতার উদ্যোগ' শিরোনামে যে বক্তব্য উপস্থাপন করেছে, সেটি সম্পূর্ণরূপে পক্ষপাত দুষ্ট এবং একপেশে।
রিপোর্টে তারা উল্লেখ করে, ৫ আগস্ট পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং অপব্যবহারের জন্য জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। অথচ ৫ই আগস্ট এর পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময়ে সারাদেশে পুলিশসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের যেভাবে হত্যা করা হলো সেটি আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী গণহত্যার পর্যায়ে পড়ে। সেই হত্যাকান্ড সহ অপরাপর অপরাধের বিচারের জন্য অবৈধ অন্তর্বর্তী সরকার কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এই বিষয়ে ওএইচসিএইচআর কোন উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। তারা কেবল বলেছে, প্রতিশোধমূলক সহিংসতা সহ অন্যান্য অনেক অপরাধের সঙ্গে জড়িতরা এখনও দায়মুক্তি ভোগ করছে। বিএনপি জামাত ৫ আগস্টের পূর্বে ও তৎপরবর্তী সময়ে যে গণহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধ সংগঠিত করেছে, এ বিষয়টি তারা এড়িয়ে গেছে।
অথচ সংঘটিত হত্যাকান্ড এবং অন্যান্য সহিংসতার বিচারের নামে অবৈধ অন্তবর্তী সরকারের বেআইনি, বিতর্কিত ও অপেশাদারী পদক্ষেপ গুলোকে ওএইচসিএইচআর মোটামুটি বৈধতা দিয়েছে। তবে কেবলমাত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) কার্যপ্রণালী এবং বিধানাবলির ক্ষেত্রে তাদের কিছু আপত্তি আছে। আমরা দৃঢ়ভাবে মনে করি, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের আন্তর্জাতিক মানদন্ড অনুযায়ী অবৈধ ও জঙ্গি অন্তবর্তী সরকারের সকল কার্যক্রম অগণতান্ত্রিক, অবৈধ ও বেআইনি। তাদের পক্ষ থেকে 'দায়বদ্ধতার উদ্যোগ' এর যে কথা বলা হয়েছে, সেটি সম্পূর্ণ অসত্য। একটি রাষ্ট্রে অবৈধভাবে চেপে বসা একটি অপশক্তি গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিপরীতে যতটুকু অবস্থান নেয়া সম্ভব, বাংলাদেশে বর্তমানে অবৈধ জঙ্গি অন্তর্বর্তী সরকার ঠিক ততটুকুই অবস্থান নিয়েছে।
রিপোর্টের ৬১ নং প্যারায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৬৬% গুলিবিদ্ধ হয়েছিল সরকারি বাহিনীর ছোড়া গুলিতে। অথচ এর বিপরীত তথ্য বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেন ইতোমধ্যে প্রদান করেছেন। তিনি বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে হাসপাতাল গুলোতে সংরক্ষিত ফরেনসিক রিপোর্টে দেখতে পেয়েছেন, নিহতদের অধিকাংশই যেসব বুলেটে মৃত্যুবরণ করেছে, আমাদের সরকারি বাহিনীগুলো সেই ধরনের বুলেট ব্যবহার করে না। এই বক্তব্য দেয়ার অব্যবহিত পরেই ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত হোসেনকে অবৈধ অন্তর্বর্তী সরকার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়।
ওএইচসিএইচআর রিপোর্টের ৩৩৭ নং প্যারায় বাংলাদেশের বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে বক্তব্য দেয়। তারা অপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়ায় আনা এবং ন্যায্য ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার উপর জোর দেয়। কিন্তু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যেভাবে সরকারি মদদে পুলিশ বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছে, যেভাবে এই বাহিনীকে নগ্ন ভাবে দলীয়করণ করা হয়েছে, পুলিশের সকল সিনিয়র নিরপেক্ষ ও পেশাদার কর্মকর্তাকে যেভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, সেখানে ন্যায্য, কার্যকরী ও নিরপেক্ষ তদন্ত কিভাবে করবে, কারা করবে? পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ সকল পদে রাজনৈতিক বিবেচনায় চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন সব কর্মকর্তাকে যারা অনেক আগেই চাকুরি থেকে অবসরে গিয়েছেন। দলীয়করণের ঝুঁকি ছাড়াও অনেক আগে অবসরে যাওয়া এসকল কর্মকর্তাকে পুলিশ বাহিনীর মত সংবেদনশীল জায়গায় নিয়োগ দেয়া জনস্বার্থ ও আইনের শাসনের নীতি বিরোধী। কারণ বহু পূর্বে অবসরে যাওয়া এসকল কর্মকর্তার মধ্যে অনেকেই ইতোমধ্যে সমাজের নানা সেক্টরের কাজের সাথে যুক্ত । এর ফলে গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দায়িত্ব পালনে স্বার্থের সংঘাতের ঝুঁকি রয়েছে। ওএইচসিএইচআর এর এই রিপোর্টে এসব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বার্থ ও আইনের শাসনের বিষয় আমলে নেয়া হয়নি । জাতিসংঘের একটি পেশাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে এটি অপ্রত্যাশিত।
রিপোর্টের ৩৪৪ নং প্যারায় ওএইচসিএইচআর বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার বিষয়ে বক্তব্য দেয়। কিন্তু ৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে যেভাবে 'মব তন্ত্রের' মাধ্যমে বলপূর্বক দেশের প্রধান বিচারপতি সহ সর্বোচ্চ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারকদের অপসারণ করা হলো, বিচার বিভাগ তথা আদালতের উপর পৃথিবীর ইতিহাসে এরকম ঘৃণ্যতম আঘাত এসেছিল কিনা আমাদের জানা নেই। একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ বিচার বিভাগ ছাড়া আইনের শাসন অর্থহীন। আর আইনের শাসন ছাড়া গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা অকার্যকর। অথচ ওএইচসিএইচআর এর ১১৪ পৃষ্ঠার দীর্ঘ রিপোর্টে এ নিয়ে কোন উদ্বেগ, এমনকি বক্তব্যও নেই।
একটা অবৈধ দখলদার সরকার ক্ষমতা দখলের পর পূর্বের সরকারের কার্যক্রমকে যেভাবে কালিমা লিপ্ত করা হয়, ওএইচসিএইচআর এর প্রতিবেদন পড়ে মনে হয় এটি অবৈধ ক্ষমতা দখলকারীদের পৃষ্ঠপোষকতায় প্রস্তুত করা হয়েছে।