বিএনপি আমলের তথাকথিত গণতন্ত্রের কথা বাংলাদেশ ভুলেনিঃ গুলি-বোমা ছুড়ে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ভণ্ডুল করতো বিএনপি, রাস্তায় ফেলে লাঠিপেটা করা হতো সিনিয়র নেতানেত্রীদের!

2276

Published on ডিসেম্বর 9, 2022
  • Details Image

২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত সরকারের থাকার সময় আওয়ামী লীগের প্রতিটি শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা চালাতো বিএনপি-জামায়াত জোট। বোমা ও গুলি মেরে আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ছত্রভঙ্গ করতো তারা। দলের বর্ষীয়ান নেতা-নেত্রীদের লাঠিপেটা করে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে নির্যাতন চালানো হতো। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা কোনো জেলা শহরে কর্মসূচি পালন করতে গেলে, সড়ক ও নদীপথ অবরোধ করে সশস্ত্র হামলা চালাতো বিএনপির সন্ত্রাসীরা। এসব বর্বর হামলার সময় বিএনপির এমপি-মন্ত্রীরাও অনেকে সামনে থেকে গুলি ফুটিয়ে ক্যাডার বাহিনীর নেতৃত্ব দিতো, কর্মীদের ওপর চালানো হতো গণ-ধরপাকড়। এমনকি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতেও বাধা দিয়েছিল খালেদা জিয়ার সরকার।

শেখ হাসিনাকে আটকে রেখে আওয়ামী লীগ অফিসে তাণ্ডব চালায় বিএনপি সরকার, গ্রেফতার করা হয় শতাধিক নেতাকর্মীকে

দেশব্যাপী নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতনে এবং বর্ষীয়ান নেতানেত্রীদের রাস্তায় ফেলে পিটিয়ে রক্তাক্ত করার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচি ডাকে যুবলীগ। কর্মসূচিতে যোগ দিতে শত শত নেতাকর্মী জড়ো হন বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে।

কিন্তু বিক্ষোভ শুরুর আগে শেখ হাসিনাকে আটকে রেখে আওয়ামী লীগ অফিসে তাণ্ডব চালায় বিএনপি-জামায়াত সরকার। অফিসের সামনে থেকে নির্মমভাবে লাঠিচার্জ ও টিয়ার মারার পর গ্রেফতার করা হয় শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে। তছনছ করা হয় পুরো অফিস।

২০০৪ সালের ২ মার্চ প্রথম আলো পত্রিকার প্রধান সংবাদে এ বিষয়ে সচিত্র প্রতিবেদন উঠে এসেছে। আরো জানা যায়, কর্মসূচিতে যোগ দিতে আসার পথেও প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে এলিফ্যান্ট রোড, শাহবাগ, মৎস্য ভবন ও জিরো পয়েন্টে ৪ বার তাকে আটক করে হেনস্থা করা হয়। এমনকি গাড়ির সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীদের বেধড়ক পিটুনি ও গ্রেফতার করা হয় বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের নির্দেশে।

সব প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে অবশেষে সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পৌঁছান শেখ হাসিনা। কিন্তু তিনি অফিসে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পুরো এলাকা অন্ধকার করে ফেলে খালেদা জিয়ার সরকার।

অনশন পণ্ড করতে আওয়ামী লীগ নেতা-নেত্রীদের পিটিয়ে রক্তাক্ত করতো বিএনপি সরকার

২০০১ সালের অক্টোবর থেকে ২০০২ সালের মার্চ পর্যন্ত, সরকারের প্রথম ছয় মাসে কয়েকশ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে পঙ্গু করে দেয় বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা। খালেদা জিয়া সরকারের নির্যাতন এবং লুটপাট প্রতিবাদে ঢাকায় শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচির ডাক দেয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু এই কর্মসূচিতে ব্যাপক নাশকতা চালায় বিএনপি। ২০০২ সালের ২৫ মার্চ জনকন্ঠের সচিত্র প্রতিবেদনে এই পৈশাচিক হামলার তথ্য উঠে আসে।

জানা যায়, ২৪ মার্চ সকালে প্রেসক্লাবের সামনে অনশন চলাকালে খুব কাছে থেকে আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা এবং নারীদের লক্ষ্য করে টিয়ার সেল ছোড়ার মাধ্যমে হামলা শুরু হয়। এক পর্যায়ে মোহাম্মদ নাসিমসহ আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতাদের ওপর নির্বিচারে লাঠিচার্জ করা হয়। এমনকি আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীদের রাস্তায় ফেলে লাথি মেরে নির্যাতন চালানো হয়।

বর্ষীয়ান নেত্রী ও দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদা চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, মতিয়া চৌধুরী, আসাদুজ্জামান নূর, সোহেল তাজসহ কমপক্ষে ২০ জন কেন্দ্রীয় নেতানেত্রীকে মেরে রক্তাক্ত করে দেয় তারা। অমানবিক নির্যাতের একপর্যায়ে গুরুতর আহত অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নিয়ে জরুরি চিকিৎসার মাধ্যমে প্রাণ রক্ষা করা হয় কয়েকজন সিনিয়র নেতার।

এরপর প্রেসক্লাব থেকে সরে গিয়ে হাইকোর্টের সামনে, ওসমানী উদ্যান এমনকি বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে হামলা থেকে বাঁচার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের বয়স্ক নেতানেত্রীরা। কিন্তু দফায় দফায় হামলা চালিয়ে সিনিয়র বর্ষীয়ান নেতা আবদুস সামাদ আজাদ, তোফায়েল আহমেদসহ সবাইকে চূড়ান্ত হেনস্তা করে বিএনপি-জামাযাত সরকার।

শেখ হাসিনার সমাবেশ নস্যাৎ করতে বিশেষ বাহিনী দিয়ে হামলা চালানো হতো বিএনপির সময়

২০০১ সালে ক্ষমতায় যাওয়ার পর বিরোধীদের সমাবেশ পণ্ড করার জন্য 'জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল'-এর ব্যানারে টোকাইদের মাধ্যমে নাশকতামূলক হামলা এবং পুলিশকে দিয়ে অবিরত টিয়ারসেল মারাতো বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার। ২০০২ সালের ২৪ মার্চ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগের অনশন কর্মসূচিতে রাস্তায় ফেলে সিনিয়র নেতানেত্রীদের লাঠিপেটা করার প্রতিবাদে, ২৮ মার্চ মুক্তাঙ্গনে সমাবেশ ডাকা হয়।

সেই সমাবেশে ভাষণ দিয়ে সিনিয়ন নেতানেত্রীদের ওপর বর্বর হামলা ও অশালীন আচরণ করার তীব্র প্রতিবাদ জানান আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনা। শান্তিপূর্ণ এই সমাবেশ ভণ্ডুল করতে দফায় দফায় হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০২ সালের ২৯ মার্চ জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদে ছবিসহ এই নির্মম হামলার সংবাদ উঠে আসে।

এসময় পুলিশের সঙ্গে আওয়ামী নেতাকর্মীদের ওপর বেপরোয়া লাটিপেটা চালায় ভাড়া করা ছিন্নমূল কিছু সন্ত্রাসী। হাওয়াভবন-ঘনিষ্ঠ ঢাকার চার এমপির পৃষ্ঠপোষকতায় 'জাতীয়তাবাদী বাস্তুহারা দল'-এর নামে টোকাইদের লেলিয়ে দেওয়া হয় নারী নেতাকর্মীদের ওপর।

বেপরোয়া টিয়ারের আঘাতে গুরুতর আহত হন মতিয়া চৌধুরী, সেগুফতা ইয়াসমিন, মারিয়া, লিপি, শিখা, হেলেন, মেয়র হানিফ. মোখরুসুর রহমান, আবদুস সাত্তারসহ কমপক্ষে ৩০ জন কেন্দ্রীয় নেতাকর্মী।

সড়ক ও নদীপথ বন্ধ করে আওয়ামী লীগের প্রতিবাদ সভায় প্রতিবন্ধকতা, গুলি চালাতো বিএনপি নেতারা

দেশব্যাপী শত শত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে হত্যা এবং ঢাকার শান্তিপূর্ণ সমাবেশে বর্ষীয়ান নেতানেত্রীদের ওপর বর্বরোচিত হামলার বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ কর্মসূচি ঘোষণা করে আওয়ামী লীগ। গাজীপুর কাপাসিয়ার কর্মসূচিতে যাওয়ার কথা ছিল কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেতানেত্রীদের।

কিন্তু আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত সেই সভা পণ্ড করতে, ছাত্রদলকে দিয়ে একই সময় একই স্থানে আরেকটি সভা ডাকায় খালেদা জিয়া ঘনিষ্ঠ বিএনপি নেতারা। এরপর হাওয়া-ভবনের নির্দেশে কাপাসিয়া ফেরিঘাটে আটকে দেওয়া হয় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতানেত্রীতদের। সভার প্যান্ডেল ভেঙে, গুলি ও বোমার মহড়া চালিয়ে সভাটি পণ্ড করে দেয় বিএনপি-জামায়াত সরকার।

২০০২ সালের ৩০ মার্চ জনকন্ঠের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে আসে। জানা যায়, কাপাসিয়ার রায়েদ ইউনিয়নের আমরাইদ বাজার মাঠে ২৯ মার্চ সভায় আয়োজন করে আওয়ামী লীগ। এই ঘোষণার কয়েকদিন পর একই স্থানে পাল্টা সভা ডাকে ছাত্রদল। ফলে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। কিন্তু বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে গুলি ও বোমার মহড়া চালায় এলাকাজুড়ে। এমনিক আওয়ামী লীগের সভামঞ্চটিও ভেঙে দেওয়া হয়।

আওয়ামী লীগ নেতানেত্রীদের কাপাসিয়ার সভাস্থলে প্রবেশ ঠেকানোর জন্য বাসস্ট্যান্ড এলাকায় টায়ার পুড়িয়ে ব্যারিকেড দেয় বিএনপি। এমনকি তরগাঁও ফেরিঘাটে ভাঙচুর এবং আমরাইদ বাজারের দোকানপাটে আগুন দেয়।

অনুষ্ঠানস্থল থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে শীতলক্ষা নদীর ঘাটে ফেরি আটকে রাখে। ফলে বিকালে মতিয়া চৌধুরী, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ফজলে রাব্বি, আজমতউল্লাহ খানসহ সিনিয়র আওয়ামী লীগ নেতারা নদী পাড় হতে ব্যর্থ হয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন। তখন নদীর উল্টোপ্রান্ত থেকে তাদের দিকে গুলি বর্ষণ করে বিএনপি-যুবদল-ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। ঘণ্টাখানেক অপেক্ষার পর, ফেরিঘাট থেকেই ফিরে যেতে বাধ্য হয় আওয়ামী লীগ নেতারা। দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় শত শত গাড়ি আটকা পড়ে দুর্ভোগের শিকার হয় মানুষজন।

আওয়ামী লীগের ঘরোয়া বৈঠকে বিএনপির বোমা হামলা, সাধারণ সম্পাদককে হত্যার চেষ্টা

২০০১ সালের ১ অক্টোবর নির্বাচনের পর, ১৫ অক্টোবর আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরবর্তী মূল্যায়ন সভা অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর মিরপুরে মোহনা কমিউনিটি সেন্টারে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমানের উপস্থিতিতে ঘরোয়া সেই বৈঠক চলাকালে, ওয়ার্ড কমিশনার ও বিএনপি নেতা হাসান আহমেদের নেতৃত্বে গুলি ও বোমা হামলা চালায় বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের সন্ত্রাসী হামলায় নারী নেত্রী শিলা মালেক-সহ মোট ৬ জন আওয়ামী লীগ কর্মী গুরুতর আহত হন। জিল্লুর রহমানের গাড়িসহ ১২-১৩টি গাড়ি ভাংচুর করে বিএনপির নেতাকর্মীরা।

২০০১ সালের ১৬ অক্টোবরের দৈনিক সংবাদ পত্রিকার প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। আরো জানা যায়, বিএনপির গুলি ও বোমা হামলার মধ্যে কর্মীদের সহায়তায় পুলিশ প্রহরায় স্থান ত্যাগ করে প্রণ বাঁচান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান। পরে ঘটনাস্থল থেকে বোমা ও আলামত উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতেও বাধা দিয়েছে বিএনপি সরকার

২০০১ সালের অক্টোবরে বিএনপি-জামায়াত সরকার গঠনের পর সদ্য-সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিতেও বাধা দিতে শুরু করে। সম্পূর্ণ শিষ্টাচার বহির্ভূতভাবে দেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেত্রীকে পারিবারিক সম্পর্কের জায়গা থেকে বিয়ের অনুষ্ঠানে যেতেও বাধা দেয় খালেদা জিয়ার সরকার। ২০০২ সালের ১৭ মার্চ জনকণ্ঠ পত্রিকার সংবাদ থেকে এই তথ্য জানা গেছে।

ঘটনাটি হলো, সাবেক সচিব মির্জা এম এ জলিল তার ছেলের বিবাহত্তোর সংবর্ধনার জন্য বিমান বাহিনীর 'ফ্যালকন হল' বুক দেন। অনুষ্ঠানে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ সমাজের অনেক গণ্যমান্য ব্যক্তি থাকবেন বলে তথ্য দিয়ে হল বুকিংয়ের অনুমতি চান তিনি। বিমান বাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু অনুষ্ঠানের দুই ঘণ্টা আগে জানানো হয়, আমন্ত্রিত অতিথিদের ব্যাপারে ক্লিয়ারেন্স না থাকায় তাদের আসার ব্যাপারে অনুমতি দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। খালেদা জিয়া সরকারের বিশেষ নির্দেশে শেখ হাসিনা যেন বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ না দিতে পারেন, তা নিশ্চিত করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সম্মলনে অংশ নিতে ঢাকায় আসা নেতাদের গণ-গ্রেফতার করে বিএনপি-জামায়াত সরকার

২০০২ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ২৭তম সম্মেলনে ঢাকায় আসা নেতাদের গণ-গ্রেফতার করে বিএনপি-জামায়াত সরকার। সারাদেশ থেকে আসা ছাত্রলীগ নেতারা রাজধানীর ১২টি থানা এলাকার যেসব হোটেলে উঠেছিল, কোনো অভিযোগ ছাড়াই সেসব হোটেল থেকে তাদের আটক করা হয়। ৫ এপ্রিল জনকণ্ঠ পত্রিকার এক সংবাদ থেকে এই তথ্য পাওয়া যায়।

সংবাদে বলা হয়, আদালত জানিয়েছে ৩ এপ্রিল রাতে বিভিন্ন বাসা ও আবাসিক হোটেল থেকে ডিবি পুলিশ ধরেছে ২৫ জনকে, তেজগাঁও পুলিশ ধরেছে ২২ জনকে, মতিঝিল পুলিশ ধরেছে ১০ জনকে, সবুজবাগ থানা ৩ জনকে, ধানমণ্ডি থানা ৩ জনকে, সূত্রাপুর ও কোতোয়ালি থানা ২ জনকে আটক করেছে। এদের সবাইকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। এরা সবাই দেশের বিভিন্ন ইউনিটের ছাত্রলীগ নেতা। দলীয় নেতা নির্বাচনের জন্য সম্মেলনে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছিল তারা।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ভেস্তে দিতে গুলি চালাতো বিএনপির মন্ত্রী, ছাত্রদল-যুবদলের নির্মম হামলা

২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আওয়ামী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের ওপর ব্যাপক নিধন ও হত্যাযজ্ঞ চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। ২০০৬ সালে জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় তারা। পাঁচ বছর অত্যাচারের শিকার হওয়া আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। তখনও এসব কর্মসূচিতে গুলি চালাতো বিএনপি নেতারা। তাদের নির্মম হামলায় পঙ্গু হয়ে যায় সহস্রাধিক আওয়ামী লীগ সমর্থক ও নেতাকর্মী, নির্মম নির্যাতনে প্রাণ হারায় শতাধিক ব্যক্তি।

২০০৭ সালের ৯ জানুয়ারি সমকালের প্রতিবেদন জানায়, ৪ জানুয়ারি চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগ এবং ছাত্রলীগ নেতাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বিএনপির ক্যাডার সেলিম, জিকু ও কামরুলের বাহিনী। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আহত নেতাদের দেখতে যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। তখন হাসপাতাল প্রঙ্গণ ঘিরে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর আবারো হামলা চালায় বিএনপি-জামায়াত জোট। এসময় বিএনপি নেতা এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী এহসানুল হক মিলনের নেতৃত্বে গুলি চালানো হলে গুলিবিদ্ধ হয় কচুয়া ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল হোসেন টিটু।

চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার আওয়ামী লীগ ও মহাঐক্যজোটের প্রতিবাদ কর্মসূচিতে খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ও রাজাকার সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ক্যাডারদের হামলায় কমপক্ষে ২৩ জন নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। তাদের জরুরি ভিত্তিতে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে প্রাণ বাঁচানো হয়। এমনকি বাশঁখালীতে বিএনপি নেতাদের নির্মম প্রহারে ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন মারা যায়।

সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আওয়ামী লীগের দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার কারণে, বরিশালের বানারীপাড়ার বাংলাবাজার এলাকায় পাঁচ জন আওয়ামী লীগ কর্মীর ওপর নৃশংস হামলা চালায় বিএনপির ক্যাডাররা। এমনকি বাকেরগঞ্জে নিজ বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতার হাত কেটে নেওয়া হয়। বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহসভাপতি মামুনের হাত চায়নিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে কেটে নেয় বিএনপি কর্মী মাসুমের বাহিনী।

দলীয় ক্যাডারদের দিয়ে হত্যা ও নির্যাতন করেই থেমে ছিল না বিএনপি-জামায়াত জোট। তারা তাদের নিয়োগ করা দলীয় পুলিশদের দিয়ে খুলনার শতাধিক আওয়ামী নেতাকর্মীর নামে হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করে। রাতেই ছয়জনকে গ্রেফতার করে তাদের নির্যাতন চালায়। রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে দূরে রাখার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর এভাবেই হামলা এবং মামলা চলতে থাকে বিএনপি-জামায়াতের পরিকল্পনায়।




Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত