2129
Published on আগস্ট 22, 2022২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের এক সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা অল্পের জন্য বেঁচে গেলেও নিহত হন আইভি রহমানসহ ২৪ নেতাকর্মী। হামলায় আরও প্রয় চার-শতাধিক ব্যক্তি আহত হন। আহতদের অনেকেই চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেছেন। তাদের কেউ কেউ আর স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাননি। এই ঘটনায় মানববর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে প্রাণে রক্ষা করেন দলের নেতাকর্মীরা। প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার।
পরবর্তীতে জজ মিয়া নামের এক ব্যক্তিকে দিয়ে গ্রেনেড হামলার বিষয়ে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বিএনপি-জামায়াত সরকার। তবে ২০০৭ সালের সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ওই হামলার ঘটনায় পুনরায় তদন্ত হয়। সেখানে নিষিদ্ধ সংগঠন হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি আবদুল হান্নান এবং তৎকালীন বিএনপি সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুর নাম আসে। অপরাধীদের স্বীকারোক্তির মাধ্যমে বিএনপি'র অন্যতম শীর্ষ নেতা তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ বেশ কয়েকজন বিএনপি নেতা এবং সরকারি কর্মকর্তার নাম ফাঁস হয়ে পড়ে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞরা জানান, হামলায় ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড এসেছিল পাকিস্তান থেকে।
এই ঘটনার বিষয়ে পরবর্তীতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিবিসি বাংলাকে বলেছেন, 'আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতেই ২১শে অগাস্টের হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে এবং এই হত্যাকাণ্ডে রাষ্ট্রযন্ত্র জড়িত ছিল বলে রায়ের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন- ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের মতোই ২০০৪ সালের ২১ অগাস্টের হামলার মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বশূন্য করতে চাওয়া হয়েছিল৷ আর এই ষড়যন্ত্রে তখনকার সরকার ও রাষ্ট্রযন্ত্র জড়িত। তারেক রহমানের হাওয়া ভবনে বসে এই হামলার ষড়যন্ত্র হয়েছে৷'
এমনকি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ভাগ্নে ও তার একান্ত সচিব সাইফুল ইসলাম ডিউক জানিয়েছেন, ২১ আগস্ট হামলার অস্ত্র ও বোমা সরবরাহকারী মাওলানা তাজউদ্দীন সম্পর্কে তৎকালীন প্রতিমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুর ভাই। শেখ হাসিনার ওপর হামলার পর তারেক রহমানের নির্দেশে তাকে পাকিস্তানে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেছে তৎকালীন বিএনপি সরকার। এমনকি মুফতি হান্নানও এই হামলার আগে তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের কথা স্বীকার করেছে।
২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদ হয়েছিলেন যারাঃ
আইভি রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
ল্যান্স করপোরাল (অবঃ) মাহবুবুর রশিদ, আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তা দলের প্রধান
রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা), উপদেষ্টা ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ
মোশতাক আহমেদ সেন্টু, সহ সম্পাদক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটি
হাসিনা মমতাজ রিনা, সভাপতি, ঢাকা ১৫নং ওয়ার্ড মহিলা আওয়ামী লীগ
সুফিয়া বেগম, কর্মী, ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) মহিলা আওয়ামী লীগ
বেলাল হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক, ঢাকা ৬৯নং ওয়ার্ড যুবলীগ
লিটন মুন্সী, যুবলীগ নেতা, মাদারিপুর
মোঃ হানিফ, শ্রমিক নেতা, ৩০নং ওয়ার্ড
আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, যুবলীগ কর্মী
আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারী, স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী
মোমেন আলী, আওয়ামী লীগ কর্মী
জাহেদ আলি আওয়ামী লীগ কর্মী
আবুল কাশেম, আওয়ামী লীগ কর্মী
ইসহাক মিয়া, আওয়ামী লীগ কর্মী
শামসুদ্দিন, আওয়ামী লীগ কর্মী
মামুন মৃধা, ছাত্রলীগ কর্মী, সরকারী কবি নজরুল কলেজ ঢাকা
রতন শিকদার, ব্যবসায়ী
রেজিয়া বেগম, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেত্রী
আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, বালুঘাট ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ঢাকা
নাসির উদ্দিন সরদার, শ্রমিক লীগ কর্মী
আতিক সরকার, যুবলীগ নেতা
অজ্ঞাত-১
অজ্ঞাত-২