রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এঁর ৭৩তম জন্মদিন পালিত

699

Published on আগস্ট 6, 2022
  • Details Image

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে ৫ আগষ্ট ২০২২ খ্রি. বেলা ১১.০০ টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল-এঁর ৭৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনা সভা আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক সহযোগে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে পালিত হয়।

রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অনিল কুমার সরকার-এঁর অসুস্থতাজনিত কারনে অত্র দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আমানুল হাসান দুদু। সার্বিক পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩ তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত আজকের দোয়া ও বিশেষ প্রার্থনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা এ্যাড.মোঃ মতিউর রহমান,সহ-সভাপতিমন্ডলীঃ-মোঃ আমানুল হাসান দুদু, এ্যাড. ইব্রাহিম হোসেন, মোঃ সাইফুল ইসলাম দুলাল, এ্যাড. মোঃ শরিফুল ইসলাম শরিফ এবং আলহাজ্ব মোঃ জাকিরুল ইসলাম সান্টু।
সম্পাদক মন্ডলীঃ-যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব এ্যাড. মোঃ লায়েব উদ্দিন লাভলু এবং অধ্যক্ষ মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মানজাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মন্ডলী-এ.কে.এম. আসাদুজ্জামান আসাদ, এ্যাড. মোঃ আব্দুস সামাদ মোল্লা এবং মোঃ আলফোর রহমান, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক প্রফেসর ডাঃ চিন্ময় কান্তি দাস, দপ্তর সম্পাদক প্রদ্যুৎ কুমার সরকার, যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মোস্তাক হোসেন, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোঃ কামরুল ইসলাম, তথ্য ও গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মেহবুব হাসান রাসেল, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মাহবুবুর রহমান, উপ-দপ্তর সম্পাদক মোঃ আব্দুল মান্নান।
সদস্যমন্ডলীঃ-মোঃ নকিবুল ইসলাম নবাব, অধ্যক্ষ মোঃ গোলাম ফারুক, আলহাজ্ব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, মোসাঃ মর্জিনা পারভীন, প্রভাষক রোখসানা মেহবুব চপলা, এ্যাড. নাসরিন আক্তার মিতা এবং ডাঃ আনিকা ফারিয়া জামান অর্ণা। চারঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মোঃ আনোয়ার হোসেন, পুঠিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব অধ্যক্ষ(অবঃ)মোঃ নজরুল ইসলাম, জেলা যুবলীগ সভাপতি মোঃ আবু সালেহ এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোঃ আলী আজম সেন্টু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড সভাপতি মোঃ মাহমুদ হাসান ফয়সাল(সজল), জেলা কৃষকলীগ আহবায়ক অধ্যক্ষ মোঃ তাজবুল ইসলাম, জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি অধ্যাপিকা নার্গিস শেলী এবং সাধারণ সম্পাদক বিপাশা খাতুন, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ সাধারণ সম্পাদক এম. মিজানুর রহমান রানা, জেলা তাঁতীলীগ সভাপতি মোঃ মাজদার রহমান মকুল, জেলা মৎস্যজীবী লীগ আহবায়ক মোঃ আবুল কালাম আজাদ, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি মোঃ সাকিবুল ইসলাম রানা এবং সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাকির হোসেন অমি প্রমুখ নেতা-কর্মী-সমর্থকবৃন্দ।

দোয়া পরিচালনা করেন জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আলহাজ্ব মাওলানা মোঃ রেজওয়ানুল হক পিনু মোল্লা।

আজকের দোয়া অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থাৎ রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আমানুল হাসান দুদু এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক এমপি আলহাজ্ব মোঃ আব্দুল ওয়াদুদ দারা তাঁদের বক্তৃতায় বলেন, "জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠপুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল। ১৯৪৯ সালের আগস্ট মাসের এই দিনে তাঁর জন্ম হয়। শেখ কামাল ছিলেন একাধারে মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, রাজনীতিবিদ, ক্রীড়া সংগঠক, সাংস্কৃতিক সংগঠক এবং সমাজসেবী। তাঁর স্ত্রী সুলতানা কামালও বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ ছিলেন। বিবাহিত জীবনে প্রবেশের মাত্র এক মাসের মাথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে গোটা পরিবারের সঙ্গে তাঁকেও শাহাদাৎ বরণ করতে হয় বাংলাদেশ বিরোধী হানাদের হাতে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক হিসেবে রাজনীতির মাঠে তাঁর প্রয়োজনীয়তা যখন অনিবার্য হয়ে উঠে ঠিক তখনই তাঁকে পাওয়া গেছে খেলার মাঠে, গানের আসরে, নাটকের মঞ্চে, সেতারের সুরে, বন্ধুদের আড্ডায় ও ছাত্ররাজনীতির স্লোগানে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী জাতির পিতাকে আটক করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়ার পর মা-মাটি এবং মাতৃভূমির সম্ভ্রম রক্ষায় মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ কামাল। মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক আতাউল গনি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দেশকে স্বাধীন করতে তিনি রাখেন বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা।

একজন ছাত্র সংগঠক হিসেবে তিনি কখনোই নেতৃত্বের শীর্ষে আসতে চাননি। তিনিই ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতেন, প্রেরণা জোগাতেন। মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ছাত্ররাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা, পরবর্তীতে জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা। মহান মুক্তিযুদ্ধের পর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশ পূণর্গঠনের কাজে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন, তখন পিতার কাজে সহায়তা করার পাশাপাশি বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়নে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। তাঁর হাতের ছোঁয়ায় নিমেষেই বদলে গিয়েছিল বাংলাদেশের ফুটবল, ক্রিকেট, হকিসহ বিভিন্ন খেলাধুলার অঙ্গন। আবাহনী ক্রীড়াচক্রের মত একটি ক্রীড়া প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তাঁরই হাতে।

ঢাকার শাহীন স্কুলে অধ্যয়নকালে শেখ কামাল ছিলেন স্কুলের প্রতিটা খেলার পরিচিত মুখ। নিখুঁত লাইন-লেন্থের একজন ফাস্ট বোলার হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। তিনি আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলেছেন দীর্ঘদিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর তিনি ছিলেন সলিমুল্লাহ মুসলিম হলের বাস্কেটবল টিমের অধিনায়ক। শুধুমাত্র খেলাধুলাতেই নয়- সঙ্গীত, বিতর্ক, অভিনয়, উপস্থিত বক্তৃতা থেকে শুরু করে সর্বত্রই বিচরণ ছিলো শেখ কামালের। ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’ প্রতিষ্ঠা করে তিনি বাংলা গানে নতুন ধারার সৃষ্টি করেছিলেন। ফিরোজ সাঁই, ফেরদৌস ওয়াহিদদের মতো জনপ্রিয় পপসঙ্গীত শিল্পীরা এসেছেন এই সংগঠনের মধ্য দিয়েই। বলা যেতে পারে, বাংলাদেশে পপ সঙ্গীতের সূচনা হয়েছিল শেখ কামালের হাত ধরে।

পাকিস্তান সরকার যখন রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ করতে উঠেপড়ে লেগেছিল, তখন শেখ কামাল বিভিন্ন প্রতিবাদী সভায় নিজে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়ে বাঙলা ও বাঙালির প্রাণের রবীন্দ্রসঙ্গীতকে টিকিয়ে রাখার সংগ্রামে নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। ছায়ানটের সেতারবাদনের ছাত্র হিসেবে সেতার বাজানোতেও তিনি তালিম নিয়েছিলেন।

সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম. হামিদ যখন ডাকসুর সাংস্কৃতিক সম্পাদক, তখন ‘নাট্যচক্র’ নামে একটি নাটকের সংগঠন গড়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেই নাট্য সংগঠনের প্রতিষ্ঠাকালীন যুগ্ম-আহ্বায়ক ছিলেন শেখ কামাল। এই নাট্য সংগঠনের অভিনয়শিল্পী হয়েই নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদারের সঙ্গে কলকাতায় মঞ্চনাটকে অভিনয় করতে গিয়েছিলেন তিনি। নাটক শেষে ফেরদৌসী মজুমদার ও শেখ কামালের অটোগ্রাফ নিতে সেদিন দর্শকরা হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল।

তিনি বেঁচে থাকলে হয়তো বাংলাদেশের ছাত্ররাজনীতি, জাতীয় রাজনীতি, সংস্কৃতি, অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন সূচিত হতো। দেশরত্ন শেখ হাসিনাকে আজ যে কণ্টকাকীর্ণ দীর্ঘপথ পাড়ি দিতে হচ্ছে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিণির্মানে, শেখ কামাল বেঁচে থাকলে হয়তো জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এতোটা বন্ধুর পথ তাঁকে পাড়ি দিতে হতোনা।

মাত্র ২৬ বছরের ক্ষুদ্র জীবনে শেখ কামাল যেসব অসামান্য কর্ম দিয়ে প্রিয় এ মাতৃভূমিকে সাজিয়েছিলেন, তা প্রজন্মের পর প্রজন্ম এদেশের মানুষ স্মরণ রাখবে শ্রদ্ধা-ভালোবাসা এবং গভীর আন্তরিকতায়"।

শেখ কামালের জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন সহ দোয়া/প্রার্থনা করেন রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপস্থিত সকল নেতা-কর্মী এবং সমর্থকবৃন্দ।

উল্লেখ্য-রাজশাহী জেলাধীন সকল উপজেলার সকল সাংগঠনিক স্তরে আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগের সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতীম সংগঠনের নেতা-কর্মী-সমর্থক সহযোগে একই কর্মসূচি পালন করার জন্য জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যথাসময়ে আহবান জানানো হয়েছে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত