আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের প্রতিফলন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট

1058

Published on জুন 11, 2022
  • Details Image

স্কোয়াড্রন লীডার (অবঃ) সাদরুল আহমেদ খান:

গত ৯ জুন ২২, দেশের ইতিহাসে রেকর্ড পরিমাণ ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করলেন অর্থ মন্ত্রী আহম মোস্তফা কামাল।

আওয়ামী লীগের ইশতেহার অনুযায়ী ২০৩০ সালে এসডিজি অর্জনের লক্ষ রেখেই বাজেট সাজানো হয়েছে। সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশের সাফল্যের ঝুড়িতে নতুন পালক যুক্ত হলো এবারের রেকর্ড পরিমান ইতিহাসের সর্বোচ্চ ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট।

ইশতেহারে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রশাসনের কথা ছিল। এবারের বাজেটে তাই বিজনেস ইন্টিলিজেন্স সফটোয়ার ব্যবহারের তাগিদ এসেছে। ইলেক্ট্রনিক ফিস্ক্যাল ডিভাইসের ব্যবহার ও ক্ষেত্র বাড়ানো হচ্ছে।

ইশতেহার অনুযায়ী জেলাওয়ারী বাজেট কে প্রধান্য দেয়া হচ্ছে, তাই এ বাজেট গণমুখী। শুধু গ্রামীণ জনজীবনের উন্নয়নই নয়, গ্রামে শহরের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে গ্রামকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ রয়েছে এই বাজেটে, গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে শতভাগ বিদ্যুৎয়নের সুফল পেয়েছে গ্রামগুলো। খাদ্য ও কৃষিখাতে ভূর্তুকী দিয়ে গ্রামীন মেরুদণ্ড শক্ত রাখছে এবারের বাজেট। দুনিয়া জুড়ে সারের দাম ৫৮% বৃদ্ধি পেলেও এবারের বাজেটে ১৫ কোটি টাকা ভূর্তুকী দেশে সারের দাম না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মুজিব বর্ষের উপহার আশ্রায়ন প্রকল্পের প্রায় নয় লক্ষ বাড়ি অসহায় পরিবারের জন্য সম্মান ও নিরাপত্তার নিদর্শন।

ইশতেহারে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তীমূলক উন্নয়নের কথা বলে ২০২৩-২৪ সালে ১০ ট্রিলিয়ন ডলারের বাজেটের প্রত্যশা ব্যক্ত করা হয়েছিল, এবারের বাজেট ৬.৭৮ ট্রিলিয়ন সে পথেরই নতুন মাইল ফলক। ২০৩০ সালে রপ্তানি আয় ১৪২ বিলিয়ন ডলারে উন্নিত করার আভাষ ছিল, সে অনুযায়ী এবারের বাজেটে রপ্তানি পণ্য বহুমুখীকরণ ও নতুন রপ্তানি বাজার সংস্থানে প্রনোদনা দেয়া হয়েছে।

ইশতেহারে ছিল, তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের সমৃদ্ধি। এবারের বাজেটে যুব উন্নয়ন, যুব শিক্ষা, যুব কর্মসংস্থান এর তাগিদ দেয়া হয়েছে। যুব নীতির বাস্তবায়ন, যুব গবেষণা, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির উদ্যোগ ধারাবাহিকতা থাকছে। প্রতিটি জেলায় যুব স্পোর্টস কমপ্লেলেক্স ও প্রতিটি উপজেলায় মিনি স্টেডিয়াম করার প্রস্তাব থাকছে বাজেটে। তারুণ্যের শক্তিতে সমৃদ্ধ হতে চায় আওয়ামী লীগ।

নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা চালুর প্রস্তাব করা হয়েছে। নির্বাচনি ইশতেহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বয়স্ক জনগোষ্ঠীকে একটি টেকসই ও সুসংগঠিত সামাজিক নিরাপত্তা কাঠামোর আওতায় বৃদ্ধকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয়ভাবে একটি সর্বজনীন পেনশন পদ্ধতি প্রবর্তনের অঙ্গীকার করেছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় সরকার জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলপত্রে একটি ব্যাপকভিত্তিক সমন্বিত অংশগ্রহণমূলক পেনশন ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রস্তাব করে। আগামী অর্থবছরে এটি চালু হচ্ছে।

ইশতেহারের জ্বালানী নিরাপত্তার পথেই এবারের বাজেট। বাংলাদেশ ইতিমধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা দিতে সক্ষম হয়েছে, এখন নিরবিচ্ছন্ন বিদ্যুৎ দেবার তাগিদে এবারের বাজেটে বিদ্যুৎ এ সর্বোচ্চ ১৮ হাজার কোটি টাকা। এলএনজি আমদানিতে থাকছে ১৭ হাজার কোটি টাকা ভূর্তুকী। এনার্জি ডিপ্লোম্যাসিকে প্রাধান্য দিয়ে জল বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টিও প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। "গ্যাস উন্নয়ন তহবিল, এনার্জি সিকিউরিটি ফান্ড"কে সচল করে নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান ও গ্যাস লাইন স্থাপনের কাজ চলমান।

ইশতেহারে, ২০৩০ সালে গড় প্রবৃদ্ধি ১০% করার আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে, এবারের বাজেটে ধরা হয়েছে ৭.৫%। কালক্রমে এই হার অভিষ্ট স্থানে পৌছাবে ইনশাআল্লাহ।

কাজেই সার্বিক বিবেচনায়, এবারের বাজেট আওয়ামী লীগের ইশতেহারের বাস্তব প্রতিফলন।

লেখকঃ সদস্য, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত