ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত

672

Published on জানুয়ারি 30, 2022
  • Details Image

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ১৮টি হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে রবিবার (৩০ জানুয়ারি)। করোনা সংক্রমণের কারণে টিএসসির ভেতরের মাঠে সীমিত পরিসরে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) অভ্যন্তরে স্থাপন করা হয় মঞ্চ। ব্যানার ও পোস্টার ও ফেস্টুন লাগানো হয় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও হলে হলে। জাতীয় সংগীত, দলীয় সংগীত ও পায়রা উড়িয়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সম্মেলনের উদ্বোধন করা হয়। 

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস। বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক বরিকুল ইসলাম বাঁধনের সভাপতিত্বে এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রওনক জাহান রাইনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার খান চাঁপা, কার্যকরী সদস্য অ্যাডভোকেট সানজিদা খানম, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উপস্থিত থাকার কথা থাকলেও অসুস্থতার কারণে তিনি আসতে পারেননি।

সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই আমাদের উত্থান। আমি নিজেই শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্ররাজনীতির অংশ ছিলাম। আমি যখন ছাত্রলীগ করতাম তখন সব ছাত্রদের রুমে রুমে যেতাম। আপনারা যারা প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি হবেন, বাকিদের সাথে আপনাদের সুসম্পর্ক থাকতে হবে। এটাই ছাত্রলীগের আদর্শ। তখন নেতাকর্মী আর শিক্ষার্থীদের মাঝে আত্মার সম্পর্ক ছিল, সেটাকে যুগ যুগ ধরে রাখতে হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ৫২ তে রক্ত দিয়েছে। ছেষট্টির ছয় দফা, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান আপনারাই করেছেন। যত ষড়যন্ত্র ও স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তিই আসুক আপনাদেরকে তাদের প্রতিহত করতে হবে। আপনাদের এগিয়ে চলার পথে একজন প্রাক্তন কর্মী হিসেবে যদি আমি কোনোভাবে পাশে দাঁড়াতে পারি তবে নিজেকে ধন্য মনে করব।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহউদ্দিন নাসিম বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো, তারাই বিএনপির বন্ধু। আমরা কীভাবে বিশ্বাস করি যে, তাদের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হওয়া যায়? তারা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে বিশ্বাস করে এটা আমরা কীভাবে বিশ্বাস করি? যারা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশে অপপ্রচার করে, যারা বিদেশে লবিস্ট নিযুক্ত করে, দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগকে তাদের কবর রচনা করতে হবে।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা যাবে না মর্মে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করে পরবর্তী সময়ে তা আইনে পরিণত করেছিল, তারাই এখন মানবাধিকারের কথা বলে। সব ষড়যন্ত্রের বেড়াজালকে ছিন্ন করে আমরা অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলবই তুলব।

ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, এ দেশের প্রতিটি ক্রান্তিলগ্নে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। আর বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নিউক্লিয়াস খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলো এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

সম্মেলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘সম্মেলন নতুন নেতা আসে। অনেকের মন ভেঙে যায়। হলের নেতা হওয়াই সবকিছু না। হল সভাপতি কেন্দ্রীয় ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় রাজনীতির সুযোগ পাবেন।’

উদ্বোধনী বক্তব্যে ঢাবি ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস নতুনদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা সবাই নেতা হতে পারবেন না। এতে আপনারা ব্যথিত হবেন না। নেতা হওয়াই একমাত্র উদ্দেশ্য নয়, সংগঠনকে এগিয়ে নিতে সকলকে কাজ করতে হবে। আপনারা যারা বিভিন্ন পদে থাকবেন,  নিজ নিজ অবস্থান থেকে ছাত্রলীগকে নেতৃত্ব দেবেন।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে সাদ্দাম হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার হাতকে শক্ত করে আমরা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের জন্য উপযোগী ছাত্রনেতৃত্ব গড়ে তুলবো। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের শুধু ছাত্রনেতা হলে চলবে না, তাদের সফল পেশাজীবীও হতে হবে। তাদেরকে বিজ্ঞানী, চিত্রশিল্পী ও উদ্যোক্তা হতে হবে এবং অন্যান্যদের চাকরি দিতে হবে। দেশের সার্বিক উন্নয়নে ছাত্রলীগকে আলো হয়ে থাকতে হবে।

 

 

 

 

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত