করোনাসংকট মোকাবেলায় তথ্যপ্রযুক্তি

3911

Published on জুলাই 29, 2020
  • Details Image

করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরুতেই বাংলাদেশ চিকিৎসাসেবা, সুরক্ষাসামগ্রী সরবরাহ, সঠিক পরীক্ষা ইত্যাদি নিশ্চিতের লক্ষ্যে কাজ শুরু করে। কিন্তু রোগের ধরন, ভাইরাস থেকে সুরক্ষার উপায়, রোগীদেরকে কোয়ারেন্টাইনে রাখতে করণীয়, টেস্ট করানো সম্পর্কিত তথ্য ইত্যাদি জরুরী বিষয়ের সঠিক তথ্য জানার জন্য কোন নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম ছিলোনা। ইন্টারনেটে ঘেঁটে তথ্য বের করা শহরের শিক্ষিত সমাজের জন্য সহজ হলেও সারাদেশের মানুষের জন্য তা মোটেও সহজ নয়। পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের ভুয়া তথ্য, টোটকা চিকিৎসার কথা সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে মানুষকে বিপাকে ফেলে দেয়। এছাড়াও সাধারণ মানুষ এই রোগকে আমলে নিতে চায় নি। এইসব দিক মাথায় নিয়ে সরকারের আইসিটি ডিভিশন উদ্যোগী হয় এ সকল সমস্যা দুর করে মানুষের কাছে সঠিক তথ্য সহজে পৌঁছে দিতে।

করোনা পোর্টাল: কোভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের শুরুতেই নাগরিকদের করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত যেকোনো পরামর্শের জন্য করোনা পোর্টাল (https://www.corona.gov.bd) চালু করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত নাগরিকগণ ১ কোটি বার এই পোর্টালে ভিজিট করেছেন।

করোনা হেল্পলাইন ৩৩৩: করোনা বিষয়ক তথ্য সেবা, টেলিমেডিসিন সেবা, জরুরি খাদ্য সহায়তা, সেলফ করোনা টেস্টিংসহ সকল সেবার হেল্পলাইন ৩৩৩। এই হেল্পলাইন নম্বরের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ২৩ লক্ষ লোককে সহায়তা করা হয়েছে।

কন্টাক্ট ট্র্যাসিং অ্যাপ: করোনা আক্রান্ত রোগী এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের চিহ্নিতকরণে সহায়ক অ্যাপ হিসেবে ‘কন্টাক্ট ট্র্যাসিং’ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। ফলে, নাগরিকগণ আক্রান্ত এবং সন্দেহভাজনদের বিষয়ে সতর্কতামূলক সতর্কবার্তা পাচ্ছেন এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছেন।

বিএসএমএমইউ-এটুআই স্পেশালাইজড টেলি-হেলথ সেন্টার: করোনা পরিস্থিতিতে সারাদেশের নাগরিকগণকে ভিডিও এবং অডিও কলের মাধ্যমে যেকোনো চিকিৎসা বিষয়ক পরামর্শ প্রদানের জন্য টেলি-হেলথ সেন্টার (০৯৬১১৬৭৭৭৭৭) চালু করা হয়েছে। এই টেলি-হেলথ সেন্টারে প্রতিদিন ২৮ জন ডাক্তার সেবা প্রদান করছেন। ইতোমধ্যেই ২০ হাজারেরও অধিক নাগরিককে এর মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয়েছে।

প্রবাস বন্ধু কলসেন্টার: সৌদি আরব এবং বাহরাইনে বসবাসরত প্রায় ২৪ লক্ষ প্রবাসী বাংলাদেশীদের জরুরি স্বাস্থ্য পরামর্শ প্রদানে চালু করা হয়েছে ‘প্রবাস বন্ধু কল সেন্টার’। ইতোমধ্যে ৭৮জন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশী ডাক্তার এ কলসেন্টারের মাধ্যমে চিকিৎসা পরামর্শ প্রদান করছেন।

প্লাজমা ডোনেশন প্ল্যাটফর্ম ‘সহযোদ্ধা’: করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগী সুস্থ্য হওয়ার পর তাঁর প্লাজমা সংগ্রহ এবং অসুস্থ্য রোগীর চিকিৎসায় এই প্লাজমা বিতরণের লক্ষ্যে ‘সহযোদ্ধা’ (www.shohojoddha.com) নামক একটি প্লাজমা ডোনেশন নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়েছে।

ভার্চুয়াল কোর্ট সিস্টেম: ভার্চুয়াল কোর্ট সিস্টেম (MyCourt) প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে ৮৭টি নিম্ন আদালত শুরু হয়েছে। কার্যক্রম শুরু হওয়ার ৭ দিনে ৭ হাজারেরও অধিক জামিন শুনানির তারিখ নির্ধারণ এবং ৫ হাজারের অধিক ভার্চুয়াল শুনানি সম্পন্ন করা হয়েছে।

করোনা বিষয়ক অনলাইন কোর্স: করোনা বিষয়ক ই-লার্নিং কোর্সের মাধ্যমে প্রায় ২৬ হাজারেরও অধিক ডাক্তার প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার প্রশিক্ষণ শেষে সনদ গ্রহণ করেছেন।

ডিজিটাল ক্লাসরুম: করোনা প্রেক্ষাপটে দেশব্যাপী লকডাউনে শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমে মোট অনলাইন ক্লাস প্রচারিত হয়েছে ৬৫০টি এবং আপদকালীন সময়ে শিক্ষা কার্যক্রমে ৮০০ জনেরও অধিক শিক্ষক যুক্ত রয়েছেন।

ফুড ফর নেশন এবং ফোনে নিত্যপণ্য: দেশব্যাপী কৃষি পণ্য বাজারজাতকরণ এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাথে সমন্বয় করে ফুড ফর নেশন প্ল্যাটফর্মের কার্যক্রম চলছে। এছাড়া নাগরিকদের ৩৩৩৫ নম্বরের মাধ্যমে ফোনে নিত্যপণ্য সেবা প্রদানের কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

করোনা বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচার কার্যক্রম: করোনা সচেতনতায় বিভিন্ন ধরণের মোট ৫৮০টি কনটেন্ট প্রস্তুত করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সোশ্যাল মিডিয়া, বিলবোর্ড ও অন্যান্য মাধ্যমে সচেতনতামূলক কনটেন্ট প্রচারের মাধ্যমে ইতোমধ্যে সাড়ে ১০ কোটি নাগরিকের কাছে এই প্রচারণা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত