2204
Published on জুলাই 18, 2020ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের কারণে হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলায় ২৫ জুন থেকে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে বন্যার্তদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় ও দ্রুত ত্রাণ সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়। বড় কোনো ক্ষতি হওয়ার আগেই ত্রাণ সহায়তা ও আশ্রয় পেয়ে বন্যার্তদের মুখে ফুটেছে হাসি।
জানা গেছে, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, বিশ্বম্ভরপুর, ছাতক, দিরাই, শাল্লা, দোয়ারাবাজার, জগন্নাথপুরসহ ১১টি উপজেলায় নিম্নাঞ্চলের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান,স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাটু পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বন্যার্তদের শিক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। দুর্ভোগ পোহাতে হয় এসব উপজেলার কয়েক লাখ মানুষকে। এরইমধ্যে ত্রাণ সহায়তা নিয়ে প্লাবিত এলাকায় ছুটে যান এমপি, চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ জনপ্রতিনিধিরা। দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেন ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে।
ধর্মপাশার মধ্যনগর গ্রামের বাসিন্দা মমিন মিয়া বলেন, এক তো করেনা, এরমধ্যে আবার বন্যা। কাজকর্ম না থাকায় এই বন্যায় খাবার জোগানো খুবই কঠিন হয়ে পড়েছিল। সরকারি সহায়তা পেয়ে অনেক উপকার হয়েছে।
তাহিরপুরের রামজীনবপুরের সাকিল মিয়া বলেন, বন্যায় আমার বাড়িঘর পানিতে ডুবে গেছে। পরিবার নিয়ে নৌকায় ঘর বানিয়েছি। সরকারি সহায়তা পাওয়ায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। সহায়তার পরিমাণ আরো বাড়াতে হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় জানায়, সুনামগঞ্জে বন্যায় এক লাখ সাতহাজার ৭২৯টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৩৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে তিন হাজার ১৩৩টি পরিবার রয়েছে। এ পর্যন্ত ত্রাণ সহায়তা হিসেবে ৮৬৫ মেট্রিক টন চাল, ৪৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা, এক হাজার ৯০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, দুই লাখ টাকার শিশুখাদ্য, দুই লাখ টাকার গো-খাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সবিবুর রহমান জানান, সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় কমতে শুরু করেছে সুরমা নদীর পানি। তবে হাওরের বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
সুনামগঞ্জের ডিসি মো. আব্দুল আহাদ জানান, বন্যার শুরু থেকে প্রশাসনের সবাই ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন। প্রতিটি উপজেলায় নতুন নতুন আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে শুকনো খাবার, জিআর চাল, আর্থিক সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া একটি কন্ট্রোল রুম খোলা রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।