প্রতিদিন প্রায় ৪০০ পরিবারে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন 'সাধারণ'

1425

Published on মে 14, 2020
  • Details Image

সালমান হাসান ডেভিডের নের্তৃত্বে 'সাধারণ' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ঘরে ঘরে সাহায্য পৌঁছাচ্ছে।

জানা যায়, করোনা ভাইরাস উদ্ভুত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সালমান ডেভিডের উদ্যোগে উলিপুর উপজেলার ১৮টি স্বেচ্ছাসেবি সংগঠন, উপজেলা যুবলীগ এবং ছাত্রলীগের সমন্বয়ে এই সংগঠনটি যাত্রা শুরু করে যার বর্তমান সদস্য সংখ্যা প্রায় সাড়ে পাচ হাজার।

সাধারণের একজন নির্বাহী সদস্য জানান, অন্য সংগঠনগুলোর থেকে কিছুটা আলাদাভাবে পরিচালিত হয় এটি। প্রথমেই সংঠনের সদস্যগণ নিজ নিজ এলাকায় কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের একটি তালিকা তৈরি করেন। পরে সরকারি সুবিধাভোগী এবং সাহায্য প্রাপ্তদের তালিকার সাথে সমন্বয় করে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করা হয়, যাতে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সাহায্য করে।

আরেকটি টিম খাবার সামগ্রী প্যাকিংয়ের দ্বায়িত্ব পালন করে যা প্রতিদিন সকাল থেকে ইফতারি পর্যন্ত চলে। ইফতারির পর অপর একটি টিম বেড় হয় খাবার সামগ্রী সাধারণ মানুষের ঘরে পৌঁছানোর জন্য যা চলে সেহরির আগে পর্যন্ত। এভাবে প্রতি রাতে প্রায় ৩৫০-৪০০ পরিবারে কাছে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হচ্ছে। এছাড়া ফেসবুক অথবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করা হলে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে দ্রুত যাচাই করে সাহায্য পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত সাহায্য কেন 'দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপহার' এই নামে প্রদান করা হচ্ছে জানতে চাইলে সালমান বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশের কয়েক কোটি দুস্থ এবং কর্মহীন মানুষের খাবার ব্যবস্থা করতে পরিশ্রম করছেন। সেখানে আমরা অল্প কয়েক হাজার পরিবারকে তার নামে সাহায্য করতে পারাটা আমাদের কাছে অনুপ্রেরণার।

খাবার কেন রাতে দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শুধু রাতে দেয়া হয় এটা ভুল। কিছু পরিবার আছে যারা সরকারি ভাতা, রেশন ইত্যাদির অন্তর্ভুক্ত না কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের সাহায্য দরকার। এছাড়া কর্মহীন শ্রমিক এবং দিনমজুরদের আমরা প্রথমেই সাহায্য করার চেষ্টা করি। আমাদের তালিকা আগেই নির্দিষ্ট করা থাকে এবং রাতে শুধু সেই বাড়িগুলোয় উপহার পৌঁছানো হয়। সাহায্য গ্রহণকারীর সম্মতি ছাড়া তাদের পরিচয় প্রকাশ করা হয় না। রাতে দিলে ভীড় কম হয় এবং দ্রুত কাজ করা যায়।

ভবিষ্যত পরিকল্পনার ব্যাপারে সালমান বলেন, যেহেতু আমাদের প্রায় সাড়ে পাচ হাজার স্বেচ্ছাসেবী উপজেলার সব ইউনিয়নে অবস্থান করছে তাই এদের মাধ্যমে আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা নিম্নমধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির এগারো হাজার পরিবারের একটা ডাটাবেজ প্রস্তুত করতে চাই। এই শ্রেণির মানুষদের এখনো সাহায্যের প্রয়োজন না হলেও, বর্তমান পরিস্থিতি চলমান থাকলে অদূর ভবিষ্যতে তারা সংকটে পড়তে পারেন।

ভবিষ্যতের জন্য পর্যাপ্ত তহবিল আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করে যাব। আমাদের সংগঠনের নিয়ম হলো কারও কাছে সাহায্য না চাওয়া। কিন্তু কেউ স্বেচ্ছায় সাহায্য করতে চাইলে গ্রহণ করব এবং সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা রাখতে উলিপুর উপজেলা প্রশাসককে সভাপতি, আমাকে সদস্য সচিব এবং উপজেলা বণিক সমিতির একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি তহবিল তৈরির কার্যক্রম চলছে।

সালমান বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। তিনি ছাত্রজীবনে কানাডা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। এরোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের উপর লেখাপড়া করেছেন যুক্তরাজ্য এবং কানাডায়। চাকরি করতেন জার্মানির মহাকাশ গবেষণ কেন্দ্রে (DLR)।

তিনি কুড়িগ্রাম-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক এম এ মতিনের পুত্র এবং রেলমন্ত্রী জনাব নুরুল ইসলাম সুজনের জামাতা। সালমানের মা অধ্যক্ষ নাসিমা বানু কুড়িগ্রামের একজন জনপ্রিয় নেত্রী ছিলেন যিনি ২০১৫ সালে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান।

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত