5264
Published on আগস্ট 28, 2019ড. এ কে আব্দুল মোমেনঃ
ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত একটি সমৃদ্ধ দেশ গঠনের স্বপ্ন আজীবন লালন করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে তার সেই স্বপ্নের বীজ আজ পরিণত হয়েছে সুবিশাল বটবৃক্ষে। শেখ হাসিনার সরকার দেশের দারিদ্র্য দূরীকরণ, বৈষম্য হ্রাস এবং সামাজিক নিরাপত্তাবলয় সুসংহত করে জনসাধারণের জীবনমানের উন্নয়নে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। বাংলাদেশের সংবিধানেও দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে সমাজের আর্থসামাজিক মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমকে রাষ্ট্রের মৌলিক দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত করেছে। বর্তমান সরকার এ লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সরকারের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০১০-২১ তথা রূপকল্প ২০২১-এ এবিষয়ে সুস্পষ্ট প্রতিফলন ও পথনির্দেশ সন্নিবিশিত হয়েছে। এ প্রতিশ্রুতির অভীষ্ট লক্ষ্য হলো দারিদ্র্য হ্রাসে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের অর্জিত অগ্রগতিকে ভিত্তি করে এগিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি দারিদ্র্যের প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন ও তার টেকসই সমাধান। পাশাপাশি, দরিদ্র জনগণ যে সব ঝুঁকিতে রয়েছে তার প্রভাব হ্রাসের মাধ্যমে এ অগ্রযাত্রাকে আরো সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করাও এর লক্ষ্য। সরকার টেকসই দারিদ্র্য বিমোচনে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর মৌলিক চাহিদায় প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের ব্যাপ্তি বাড়ানোর নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। কেবল ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরেই সামাজিক নিরাপত্তাবলয়ের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে ১১ লাখ মানুষ।
গরিব, অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সহায়তাসহ সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থাই হলো সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী। বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা সরকারই প্রথম সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কার্যক্রম গ্রহণ করেন। ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর শেখ হাসিনার সরকার তার প্রবর্তিত সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর পরিধি বাড়িয়ে দেশকে একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র গড়ার উদ্যোগ নেন। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, অতিদরিদ্রদের জন্য ভিজিডি, ভিজিএফ কার্ড, মাতৃত্বকালীন ভাতা কোটায় উপকারভোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি, হিজড়াদের তৃতীয় লিঙ্গের স্বীকৃতি এবং তাদের জীবনমানের উন্নয়নে নানা উদ্যোগসহ বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সহায়তার ক্ষেত্রই শুধু বাড়াননি, বাড়িয়েছেন অর্থের পরিমাণও।
শেখ হাসিনার সরকার, কল্যাণমুখী সরকার। দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সর্বোচ্চ সামাজিক কল্যাণ নিশ্চত করাই তার উন্নয়নের নীতি। একারণে বাংলাদেশ সরকার দারিদ্র্যবিমোচন, অসমতা দূরীকরণ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে সব সময়ই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। চরম দরিদ্র জনগণের জীবনের ঝুঁকিগুলো মোকাবিলার মাধ্যমে তাদের চরম দারিদ্র্যের বলয় থেকে মুক্ত করা হচ্ছে। দারিদ্র্য হ্রাসে গ্রামীণ অর্থনীতিতে অর্জিত গতিশীলতা এবং হতদরিদ্রদের জন্য টেকসই নিরাপত্তাবেষ্টনীর মাধ্যমে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা, অতি দরিদ্র ও দুস্থদের জন্য বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ, কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) ও টেস্ট রিলিফ (টিআর), জিআর ছাড়াও সরকার উদ্ভাবিত একটি বাড়ি একটি খামার, আশ্রয়ণ, গৃহায়ন, আদর্শ গ্রাম, গুচ্ছগ্রাম, ঘরে ফেরা প্রভৃতি কর্মসূচির পাশাপাশি ওএমএস, ফেয়ার প্রাইস কার্ড, ভিজিডি, বিধবা, স্বামী নিগৃহীতা, দুস্থ মহিলা ভাতা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা, চর জীবিকায়নসহ বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের জন্য ক্ষুদ্রঋণ, ভিক্ষাবৃত্তিতে নিয়োজিত জনগোষ্ঠীর পুনর্বাসন ও বিকল্প কর্মসংস্থান কর্মসূচি বাস্তবায়িত হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীকে আরো যুগোপযোগী ও কার্যকর করতে এবং টেকসই দারিদ্র্যবিমোচন এবং রূপকল্প-২০২১ ও ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি ফলপ্রসূ করার লক্ষ্যে নীতি ও কৌশল নির্ধারণপূর্বক একটি ‘জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল’ গ্রহণ করা হয়েছে। এই কৌশলে পাঁচ বছর মেয়াদি লক্ষ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি অভীষ্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে, যখন দেশে অর্থনীতিতে ত্বরিতযোগে প্রবৃদ্ধি বাড়ে তখন ধনী-দরিদ্রের ফারাক অনেক বাড়ে; কিন্তু সৌভাগ্যের বিষয় বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধির হার যদিও অভাবনীয় কিন্তু এতসব সামাজিকবেষ্টনীর কারণে প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহ যেমন ভারত, শ্রীলঙ্কা, ভুটান ইত্যাদির তুলানায় বাংলাদেশের গুণাঙ্ক এখনো কম।
বর্তমান সরকারের আমলে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় জনপ্রতি মাসিক ৫০০ টাকা হারে ১৭ লাখ সুবিধাভোগীকে বিধবা ভাতা প্রদান করা হয়েছে। ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিধবা দুস্থ নারীকে ভাতা প্রদানের জন্য বাজেট রাখা হয়েছে ১ হাজার ২০ কোটি টাকা। এ সময়ে বয়স্কভাতার সুবিধাভোগী হলো ৪৪ লাখ মানুষ। চলতি বাজেটে বয়স্কভাতার জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। বর্তমান সরকার প্রতিবন্ধীভাতার আওতায় মাথাপিছু ৭৫০ টাকা হারে ভাতা প্রদান করেছে ১৫ লাখ ৪৫ হাজার প্রতিবন্ধীকে। এই খাতে চলতি বাজেটের বরাদ্দ ১ হাজার ৩৫০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। জনপ্রতি মাসিক ৭৫০-১৩০০ টাকা হারে প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি প্রদান করেছে ১ লাখ সুবিধাভোগীকে। বিগত অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচির আওতায় উপকারভোগীর মোট সংখ্যা ছিল ৮৬ লাখ। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ৮টি খাতে মোট ৭৫ লাখ মানুষকে ভাতা দেওয়া হয়েছে।
রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে এগিয়ে যাচ্ছে সরকার। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি রূপকল্প-২০২১ এর অবিচ্ছেদ্য অংশ। ধারাবাহিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এখন এদেশের অর্থনীতির খুব সাধারণ চিত্র। সরকারের আন্তরিক ও স্বতঃস্ফূর্ত প্রচেষ্টার ফলে দেশের দারিদ্র্য ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে। ১৯৯১-৯২ অর্থবছরে বাংলাদেশে দারিদ্র্য যেখানে ছিল ৫৬.৭%, সেটি ২০০০ সালে হ্রাস পেয়ে ৪৮.৯%-এ নেমে আসে। বর্তমান সরকার কর্তৃক বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের ফলে দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম ত্বরান্বিত হয়েছে। ২০১০ সালে দারিদ্র্য যেখানে ছিল ৩১.৫% তা ২০১৪ সালে আরো কমে দাঁড়িয়েছে ২৪.৩% শতাংশে। দেশ জুড়ে দরিদ্রমানুষের সংখ্যা যেমন কমেছে তেমনি বর্তমান সরকারের সময়ে দারিদ্র্যবিমোচনের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৫-১০ মেয়াদে যেখানে গড়ে প্রতিবছর ১.৭% হারে দারিদ্র্য কমেছে, সেখানে ২০১০-১৪ মেয়াদে দারিদ্র্য কমেছে প্রতিবছর গড়ে ১.৮% হারে। বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫(ঘ) অনুযায়ী বর্তমান সরকার বেকারত্ব, ব্যাধি বা দৈহিক অসামর্থ্যজনিত কিংবা বৈধব্য, মাতৃপিতৃহীনতা বা বার্ধক্যজনিত কিংবা অনুরূপ অন্যান্য পরিস্থিতিজনিত আয়ত্তাতীত কারণে অভাবগ্রস্তদের জন্য টেকসই সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী নিশ্চিতকরণ এবং বিপুল সম্পদ বিনিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে।
দারিদ্র্য, শোষণমুক্ত এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনের লক্ষ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এদেশের জনগণ ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল। সে লক্ষ্যে এদেশের সংবিধান দরিদ্র ও অসহায় জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণকে রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করেছে। সেই দায়িত্ব পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে পালন করে যাচ্ছে বর্তমান উন্নয়নের সরকার। সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর ‘সামাজিক নিরাপত্তা’, ‘সামাজিক ক্ষমতায়ন’ ও ‘সামাজিক সুরক্ষা’ শিরোনামে বিভিন্ন কার্যক্রম চালু রেখেছে। নগদ হস্তান্তর, খাদ্য নিরাপত্তা ও কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি গৃহীত হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের বিভিন্ন কর্মসূচি, কার্যক্রম ও প্রকল্প মিলিয়ে মোট ১৩০টি খাতে এ বছর বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক সুরক্ষাবাবদ বরাদ্দ ছিল ৬৪ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৩ দশমিক ৮১ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরের মূল বাজেট ব্যয় পরিকল্পনায় সামাজিক সুরক্ষায় বরাদ্দ ছিল ৫৪ হাজার ২০৬ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৩ দশমিক ৫৪ শতাংশ ও জিডিপির ২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। যদিও পরে সংশোধিত বাজেটে এর পরিমাণ কমিয়ে ৪৮ হাজার ৫২৪ কোটি টাকা করা হয়, যা সংশোধিত বাজেটের ১৩ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ১৭ শতাংশ। বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার শতকরা প্রায় ৭ ভাগ মানুষ বয়স্ক। এদের মধ্যে ২০ ভাগ মানুষ এ বেষ্টনীর আওতাভুক্ত। এ কর্মসূচির আওতায় বিধবা ও দুস্থ নারী ভাতা পান ৭ লাখ উপকারভোগী। দৈহিক অক্ষমতাসম্পন্ন দুস্থ ভাতায় ২ লাখ মানুষ উপকারভোগী।
২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ জন্য বাজেটে সম্ভাব্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৫ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এতে সুবিধা পাবেন প্রায় ৮৯ লাখ দরিদ্র মানুষ। বর্তমান সারাদেশে প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ সামাজিক সুরক্ষার আওতায় সুবিধা ভোগ করছেন। সরকার নতুনভাবে আরো প্রায় ১৩ লাখ দরিদ্র মানুষকে এ সুরক্ষার আওতায় আনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ।
এ ছাড়া নতুন করে ৫ লাখ অসচ্ছল প্রতিবন্ধী যুক্ত হবে প্রতিবন্ধীভাতার আওতায়। এতে ভাতা পাবেন ১৫ লাখ ৪৫ হাজার প্রতিবন্ধী। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ১ হাজার ৩৯০ কোটি ৫০ হাজার টাকা। নতুন বাজেটে এই কর্মসূচিতে নতুন করে ৭০ হাজার উপকারভোগী বাড়ানো হচ্ছে। বর্তমানে ৭ লাখ দরিদ্র মাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়া হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে এ সুবিধা দেওয়া হবে ৭ লাখ ৭০ হাজার জনকে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হচ্ছে ৭৩৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তার আওতায় ২ লাখ ৭৫ হাজার মাকে সুবিধা দেওয়া হবে। বর্তমানে এ সুবিধা পাচ্ছেন আড়াই লাখ কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার। আগামী বাজেটে এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২৬৪ কোটি টাকা। বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, এ সময় সুযোগ-সুবিধা যাতে যথার্থ লোকজন পায় তার জন্য প্রতিনিধিদের সচেতন থাকা প্রয়োজন। নতুবা এসব অনুদানের টাকা বেহাত হবার সম্ভাবনা রয়েছে।
এর বাইরে চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সুবিধা দিতে নতুন করে আরো ১০ হাজার চা শ্রমিককে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। বর্তমান এ কর্মসূচির আওতায় সুবিধা ভোগ করছেন ৪০ হাজার চা শ্রমিক, যা আগামী অর্থবছরে ৫০ হাজারে উন্নীত করা হবে। এ জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ২৫ কোটি টাকা।
সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীতে জেন্ডার সমতা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিত করতে জাতীয় সামাজিক নিরাপত্তা কৌশলসংশ্লিষ্ট জেন্ডারনীতি মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নকারী ৩৫টি মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিবগণের সমন্বয়ে গঠিত ‘সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় ব্যবস্থাপনা কমিটি’ শীর্ষক আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি কর্তৃক ২০১৮ সালের মে মাসে পর্যালোচিত ও অনুমোদিত হয়েছে। বাংলাদেশি নারী ঐতিহ্যগতভাবেই কঠোর পরিশ্রমী। অথচ জেন্ডার বৈষম্যমূলক নিয়মনীতি ও প্রথার কারণে অধিকাংশ আর্থসামাজিক সূচকে তারা পুরুষের তুলনায় পিছিয়ে আছে। নারীকে এগিয়ে নিতে নিরলস কাজ করছে সরকার। দারিদ্র্য, কর্মসংস্থান, মানব উন্নয়ন, নিরাপত্তা ও অভিঘাতসহনশীলতাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারী-পুরুষ বৈষম্য কমিয়ে আনতে একটি সুগঠিত সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর।
‘দারিদ্র্য ও অসমতা কমাতে নিয়মিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম হলো অন্যতম হাতিয়ার। সে কারণেই বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার আলোকে হতদরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দিকে লক্ষ রেখে প্রতিবছর সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা বাড়িয়ে চলেছেন। এ দেশের সর্বস্তরের গণমানুষের জন্য একটি নিশ্ছিদ্র সামাজিক নিরাপত্তাবলয় তৈরিকরণ নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সরকারের এ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
লেখক :মন্ত্রী, পররাষ্ট্রবিষয়ক মন্ত্রণালয়
সৌজন্যেঃ দৈনিক ইত্তেফাক