7657
Published on মে 9, 2019বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বামী প্রয়াত ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বৃহস্পতিবার (০৯ মে)। ২০০৯ সালের এইদিনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করে না ফেরার দেশে চলে যান।
প্রয়াত এই পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুবার্ষিকী পালনে ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, এম এ ওয়াজেদ ফাউন্ডেশ, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
এসব কর্মসূচিতে থাকছে বিশিষ্ট এই বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি, ফাতেহা পাঠ ও জিয়ারত, স্মৃতিচারণ ও মিলাদ মাহফিল ও ইফতার মাহফিল। সকালে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে লালদীঘির ফতেহপুরে জয়সদনে প্রয়াত বিজ্ঞানীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলিসহ দিবসের কর্মসূচি শুরু করা হয়। এছাড়া ফতেহপুরের জয়সদন প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।
বিকেলে উপজেলা সদরে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠন এবং ১৪ দলের উদ্যোগে বিজ্ঞানীর স্মৃতিচারণে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
এছাড়াও ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ মৃত্যু বার্ষিকী পালন উপলক্ষে দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় পীরগঞ্জের ফতেপুরে কবরে পুষ্পমাল্যদান, কবর জিয়ারত ও ফাতেহা পাঠ অনুষ্ঠিত হয়। বাদযোহর বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ ও দোয়া, বিকেল ৫টায় রাজা রাম মোহনক্লাব মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও ইফতার পার্টির আয়োজন সভার করা হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি থাকবেন রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. মোস্তাফিজার রহমান, বিশেষ অতিথি থাকবেন রংপুর মেডিকেল কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. নূর ইসলাম। সভায় সভাপতিত্ব করবেন ড. ওয়াজেদ স্মৃতি সংসদ সভাপতি ওমুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. হামিদুল হক খন্দকার।
বর্ণাঢ্য কর্মময় জীবনের অধিকারী বিজ্ঞানী ওয়াজেদ মিয়া ১৯৪২ সালের ১৬ ফ্রেরুয়ারি লালদিঘীর ফতেহপুরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক এই চেয়ারম্যান মেধা, মনন ও সৃজনশীলতা দিয়ে জনগণের কল্যাণে কাজ করে গেছেন।
পিতা মরহুম আব্দুল কাদের মিয়া ও মাতা মরহুমা ময়জুনেসার চার পুত্র ও তিনকন্যার মধ্যে ওয়াজেদ মিয়া ছিলেন সর্বকনিষ্ঠ। গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণিও পীরগঞ্জ থানার হাইস্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন শেষে তিনি ১৯৫২ সালে রংপুর শহরের সরকারি জিলা স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন।
১৯৫৬ সালে ওই স্কুল থেকে ডিস্টিংশনসহ ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তিনি রাজশাহী সরকারি কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন। ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক (সম্মান) পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে দ্বিতীয় স্থান লাভ করেন এবং ১৯৬২ সালে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালে তিনি ফজলুল হক হলের আবাসিক ছাত্র ছিলেন এবং ছাত্রলীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ১৯৬১-৬২ শিক্ষাবর্ষে হল ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হন। ১৯৬৩ সালের ১ এপ্রিল তিনি তৎকালীন পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনের চাকরিতে যোগদান করেন। ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষা বছরে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ‘ডিপ্লোমা অব ইম্পেরিয়াল কলেজ কোর্স’ কৃতিত্বের সঙ্গে সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে যুক্তরাজ্যের ‘ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়’ থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করে স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলে তাকে ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে ঢাকার আণবিক শক্তি গবেষণা কেন্দ্রে পদস্থ করা হয়।
ওয়াজেদ মিয়া ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।