5072
Published on নভেম্বর 3, 2018প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বার বার তাঁকে বিএনপি’র পক্ষ থেকে অপমান করা সত্ত্বেও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে অবাধ ও সকলের অংশগ্রহণমূলক একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে জন্য তিনি ঐ দলের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপে বসেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রকম অপমান তারা করেছে, হয়তো আমরা ভুলতে পারবো না। তারপরও, আগামীতে সকলের অংশগ্রহণমূলক, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা দায়িত্ব মনে করে আমরা সংলাপে গিয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চাই সকলের অংশগ্রহণে একটা সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এদেশের মানুষকে যাতে ঐ জ্বালাও-পোড়াও- এ ধরনের ঘটনার সম্মুখীন হতে না হয়।’
তিনি বলেন, ‘এত অপমান এতকিছু সব সহ্য করেও আমরা শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষ শান্তিতে থাকুক, দেশের মানুষ তাঁর ভোটটা শান্তিতে দিতে পারুক, দেশের মানুষ তাঁর মন মত সরকার বেছে নিক- সেই চিন্তাটা করেই আমরা এই সংলাপে বসেছি।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সময়ে দেশের নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা ক্ষমতায় আছি কাজেই আগামীর নির্বাচন যে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, আমরা সরকারে আসার পরে এই পর্যন্ত ৬ হাজারের বেশি নির্বাচন হয়েছে, এরমধ্যে স্থানীয় সরকারের নির্বাচন, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, পৌরসভা নির্বাচন এবং আওয়ামী লীগের প্রায় ১৫ জন সংসদ সদস্য মারা যাওয়ায় সেসব আসনে উপনির্বাচন হয়েছে। কিন্তু সেসব নির্বাচন নিয়ে কেউ প্রশ্ন তুলতে পারেনি।
তিনি বলেন, এক সময় আমরা ৫টি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে হেরেছি, সিলেটে হেরেছি, বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন হবার পরে নির্বাচন কমিশন ২৫৪টি ভোট কেন্দ্রের ভোটের পুনঃতদন্ত করে প্রায় দেড় মাস পর ফল ঘোষণা করেছে, সেখানে আমরা কোনরকম হস্তক্ষেপ করিনি। কারণ, জনগণ ভোটের মালিক, জনগণ ভোট দেবে এবং স্বাধীনভাবে নির্বাচন কমিশন কাজ করছে।
এই নির্বাচন কমিশনকে সকল দলের প্রতিনিধি নিয়ে এমনকি বিএনপি’রও প্রতিনিধি নিয়ে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক গঠিত সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে গঠন করা হয়েছে উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘কাজেই এই নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে কোন অভিযোগ থাকার সুযোগ আছে বলে মনে করি না এবং এই সার্চ কমিটি দ্বারা গঠিত নির্বাচন কমিশন প্রতিটি নির্বাচন করেছে স্বচ্ছতার সাথে এবং তাঁরা যা ফলাফল দিয়েছে আমরা সেটাই মেনে নিয়েছি।’
তাঁর সরকার জায়গায় যদি বিএনপি ক্ষমতায় থাকতো তাহলে দেশে এত সুষ্ঠুভাবে কি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারতো, তারা কি পরাজয়গুলো মেনে নিত? প্রশ্ন তোলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘সিলেট এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে হারার পরও আমরা মেনে নিয়েছি। কারণ, এত উন্নয়ন কাজ করেছি তারপরও যদি জনগণ ভোট না দেয় আমাদের করার কিছু নেই, এটা জনগণের বিচার। তাঁরা যেটা বিচার করবে সেটাই হবে।’
দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু এবং বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, ক্যাপ্টেন মনসুর আলীর পুত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম এবং তাজউদ্দিন আহমেদ কন্যা সিমিন হোসেন রিমি স্মরণ সভায় বক্তৃতা করেন।
আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি একেএম রহমতউল্লাহ এমপি এবং আবুল হাসনাতও সভায় বক্তৃতা করেন।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির পিতার ঘাতকরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী এবং মুজিব নগরের প্রবাসী সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমেদ এবং বঙ্গবন্ধুর অপর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগী এএইচএম কামারুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে নির্মমভাবে হত্যা করে।
প্রধানমন্ত্রীর এদিনের ভাষণে বাংলাদেশের স্বাধীনতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী ১৯৭৫ এর ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নিহত জতীয় চারনেতার অবদানের প্রসঙ্গ উঠে আসার পাশাপাশি তাঁর সম্প্রতিক জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এবং যুক্তফ্রন্ট নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সংলাপ প্রসঙ্গ ঘুরে ফিরে আসে।
জিয়াউর রহমানের ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স জারি করে জাতির পিতার বিচারের পথ রুদ্ধ করা, খুনীদের পুরস্কৃত করে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরী প্রদান, সেই খুনীদেরকেই আবার ১৫ই ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে খালেদা জিয়ার সংসদে নিয়ে আসা, রাজাকার-যুদ্ধাপরাধীদের মন্ত্রী বানানো, জিয়ার সময়ে ১৯টি ক্যু সৃষ্টি করে সশস্ত্র বাহিনীর শত শত সদস্য হত্যা এবং ২০০১ সাল পরবর্তী বিএনপি-জামায়াতের দু:শাসনের প্রসংগও উঠে আসে। অতীতে ব্যক্তিগত উদ্যোগে সংলাপের প্রচেষ্টা চালাতে গিয়ে খালেদা জিয়া এবং বিএনপি’র অমানবিক আচরণের প্রসংগ তোলেন তিনি।
একটা নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হোক তাঁর সরকারের এটাই প্রত্যাশা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সামনে নির্বাচন সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে যখন আমাদের কাছে ঐক্যফ্রন্ট (জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট) চিঠি দিল দেখা করতে চান, আমি সাথে সাথে স্বাগত জানাই। অনেক ব্যস্ততার মাঝে, এমনকি ময়মনসিংহে জনসভা করে এসেও সংলাপে সময় দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যারাই দেখা করতে চাচ্ছেন ঐক্যফ্রন্ট এবং যুক্তফ্রন্ট-দুটি গ্রুপের সাথে মিটিং হয়ে গেছে। এরপর অন্যদের সঙ্গেও আমরা সংলাপ করবো। তারা আলাপ করতে চেয়েছেন, সংলাপ করতে চেয়েছেন, আমরা করেছি।’
সংলাপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সুন্দর পরিবেশেই আলোচনা হয়েছে। তারা যেসব দাবিদাওয়া দিয়েছে যেসব দাবি আমাদের পক্ষে মেটানো সম্ভব আমরা বলেছি আমরা করবো, তারা রাজবন্দীদের মুক্তি চান- আমরা রাজবন্দিদের তালিকা চেয়েছি।’
তাদের বিরুদ্ধে যদি কোন খুনের মামলা না থাকে, কোন ক্রিমিনাল অফেন্স না থাকে তাহলে অবশ্যই বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়ে তাঁর সরকার কাউকে রাজবন্দি করে নাই বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরাতো কাউকেই রাজনৈতিক কারণে কোন রাজবন্দি করি নাই। তাই যদি করতাম তাহলে খালেদা জিয়া যখন ২০১৫ সালে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা শুরু করলো তখনই তাকে গ্রেফতার করতে পারতাম। সেটাওতো আমরা করি নি।’
প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন এবং তারেক রহমানের মামলার প্রসঙ্গে বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা এবং তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা তাঁর সরকার করেনি বরং তাদেরই আপনজন তাঁদের বানানো রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদ, সেনাপ্রধান মইনউদ্দিন এবং তাদের বানানো বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফখরুদ্দিন সাহেবরা। প্রধানমন্ত্রী এসব মামলার দেওয়ার ক্ষেত্রে বিএনপি’র উপদেষ্টা এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আইন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকা মইনুল হোসেনের ভূমিকা থাকারও উল্লেখ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তাদের দেওয়া এই মামলা ১০টি বছর ধরে চলেছে, আর সরকারের কোন দুরভিসন্ধি থাকলে এই একটা মামলা শেষ হতেতো আর ১০ বছর লাগার কথা নয়।
তিনি বলেন, বিচার বিভাগ এখন স্বাধীন সেই স্বাধীন বিচার বিভাগে ১০ বছর ধরে যে মামলা চলেছে সেই মামলার রায় হয়েছে সেই মামলায় তিনি সাজাপ্রাপ্ত (খালেদা জিয়া)। আর তারেক জিয়ার জন্য আমেরিকার এফবিআই এসে সাক্ষ্য দিয়ে গেছে এবং খালেদা জিয়ার কয়েকটি মামলায় তারা সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত হয়ে আছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আন্তর্জাতিকভাবেও প্রমাণিত যে, এরা দুর্নীতিতে জড়িত। সেখানে আমাদের কি করণীয় রয়েছে।’
সংলাপের বৃত্তান্ত তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় দুই ঘন্টা এই জোটের যারা তারা কথা বলেছেন। এরপর আমাদের পক্ষ থেকে কথা বলা হয় এবং সমাপ্তির জন্য যেটুকু বলার আমি শুধু সেটুকুই বলেছি।
তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছি কোনটা কোনটা আমরা করতে পারি, কোনটা নির্বাচন কমিশনের, কোনটা রাষ্ট্রপতির এবং কোনটা কিভাবে করা যায় আমরা সেইভাবে সমাপ্তি টেনে অনেকগুলি দাবি আমরা মেনেও নিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী সংলাপের মাঝেই আন্দোলনের হুমকি দেয়ায় বিএনপি নেতৃবৃন্দের সমালোচনা করে বলেন, ‘যখনই এই আলোচনা চলছে তখনই দেখলাম আন্দোলনের কর্মসূচি দেয়, তাহলে একদিকে আলোচনা করবে আর একদিকে আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া, তাহলে এটা কি ধরনের সংলাপ আর কি ধরনের কথা আমাদের কাছে এটা বোধগম্য নয়।’ জানিনা জাতি ও দেশবাসী এটা কিভাবে নেবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার হত্যাকান্ডের বিচার করেছি, যুদ্ধাপরাধের বিচার চলছে এবং অনেক মামলার রায় ও কার্যকর হয়েছে এবং ৩রা নভেম্বর জেল হত্যাকান্ডের বিচার চলছে এরমধ্য দিয়ে বাংলাদেশ শাপমুক্ত হয়েছে। কিন্তু এখন বাংলাদেশে কিছু লোক রয়ে গেছে কারণ বাংলাদেশের জনগণ যখন ভালো থাকে, বাংলাদেশের মানুষের ভেতর যখন স্বস্তি আসে, বাংলাদেশের মানুষ যখন খেয়েপড়ে একটু সুখের মুখ দেখতে শুরু করে তখনই তাদের মনে অনেক যন্ত্রণা শুরু হয়, বাংলাদেশের মানুষ ভাল থাকলে এই শ্রেণীটার ভাল লাগে না, যোগ করেন তিনি। তিনি বলেন, তারা এই মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, অগ্নি সন্ত্রাস-কি তান্ডব করেছে এই বাংলাদেশে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে হত্যার চেষ্টা, ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রামে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালায় এবং এরজন্য যে পুলিশ কর্মকর্তা দায়ী তাকেই খালেদা জিয়া নিয়ে একটার পর একট প্রমোশন দিয়ে পুরস্কৃত করেছিলেন।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যার সঙ্গে জিয়ার যে সম্পৃক্ততা আছে সেটাতো ফারুক, রশিদের স্বীকারোক্তিই রয়েছে।
এতকিছুর পরেও দেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা অব্যাহত রাখার স্বার্থে তিনি ব্যক্তিগত উদ্যোগে অতীতে সমঝোতার পদক্ষেপ নেন উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এত বারবার আমার ওপর আঘাত এতবার হত্যার প্রচেষ্টা, তারপরেও আমি শুধু দেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে, বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ধারাটা অব্যাহত রাখার জন্য এবং দেশের মানুষের আর্থসামাজিব উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য আমি নিজে টেলিফোন করি।’ ‘আমার ফোন ধরেননি, বার বার চেষ্টা করি। তারপর আমার এডিসি এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তাকে দিয়ে ফোন করিয়ে চেষ্টা করেছি। ফোনতো ধরেনইনি বরং ভদ্রতার খাতিরেও একটা পাল্টা ফোন করেননি। সেই ভদ্রতাটুকুও আমি পাইনি। একটা সময় দেওয়া হয়েছিল যে সে সময় ফোন করলে খালেদা জিয়া ফোন ধরবেন, কিন্ত ধরেননি,’যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।
২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে তাঁর একাধিক ফোনের পর খালেদা জিয়া একবার ফোন ধরলেও তাকে অপমান করেছিলেন উল্লেখ করে বলেন, ‘অবশেষে ফোন করার পর যে ঝারি টারি খেলাম তা নিশ্চয়ই আপনাদের মনে আছে, যে আচরণ পেলাম।’ তিনি বলেন, তারপরেও আমি কেন করেছি, কারণ তারা যেন এই জ্বালাও পোড়াও, মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা বন্ধ করে, তারা যেন এই ধরনের পথে না যায়। কারণ সাড়ে ৩ হাজারের মত মানুষ তারা আগুন দিয়ে পুড়িয়েছে।
সরকার প্রধান বলেন, প্রায় ৫শ’এর মত মানুষ তারা হত্যা করেছে, ৩ হাজার গাড়ি পুড়িয়েছে, ৫৮২টি স্কুল পুড়িয়েছে, ৭৯টি সরকারী অভিস পুড়িয়েছে, ৬টি ভূমি অফিস পুড়িয়েছে, ২৮-২৯ জনের মত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যকে হত্যা করেছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়ে সেখানে বিদ্যুতের প্রকৌশলীকে ফেলে দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা করেছে, স্বুলগামী শিশু, এসএসসি পরীক্ষার্থীরাও পেট্রল বোমা থেকে রেহাই পায়নি।
তিনি তাদের চিকিৎসা ও পুনবার্সনে সম্ভাব্য সব রকামের পদক্ষেপ নিয়েছেন উল্লেখ করে বলেন, এরপর জনগণ যখন রুখে দাঁড়িয়েছে তখন তারা থেমেছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি এ সময় ২০০১ নির্বাচন পরবর্তী বিএনপি’র সন্ত্রাস তুলে ধরে বলেন, তারা হাজার হাজার আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে, বাড়িঘর পুড়িয়েছে, তাঁদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে। ক্ষমতায় থাকার সময় তারা ৫শ’ জায়গায় বোমা হামলা, গ্রেনেড হামলা, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশ সহ সিলেটে দুই দুইবার গ্রেনেড হামলা, সুনামগঞ্জে গ্রেনেড হামলা, বোমা হামলা- সারা বাংলাদেশে এভাবে একটা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েই তারা যেন আনন্দিত হয়, ফূর্তি করে- এরকমই মনে হয়েছে আমার কাছে। এটাই কি তাদের রাজনীতি- এই প্রশ্ন উত্থাপন করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এইভাবে যারা দেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যেতে চেয়েছে তারপরেও আমি খালেদা জিয়ার ছেলে যখন মারা গেল, তিনি যখন অফিসে বসা, তিনি যখন হুমকি দিয়েছেন আমাদের সরকারকে উৎখাত না করে ঘরে ফিরবেন না, তখন আমি একজন মা হিসেবে অপর একজন ছেলেহারা মা’কে গিয়েছিলাম সমবেদনা জানাতে।’ ‘আপনারা জানেন, কিভাবে মুখের ওপর দরজা বন্ধ করে দিল, আমাকে ঢুকতে দিল না। বড় গেট খুলবে না, গাড়ি ঢুকতে দেবে না, আমি বললাম ঠিক আছে ছোট গেট দিয়েই আমি যাব। সে গেটও বন্ধ করে দিল।’