4273
Published on মার্চ 5, 2018আমাদের দেশের গ্রামগুলোর এ ধরনের পরিবর্তনের পেছনে গ্রামীণ অর্থনীতির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে সেখানে বৈজ্ঞানিক উপায়ে মাছের চাষ করায় মাছের উৎদন অনেক বেড়ে গেছে। গ্রামের তরুণ যুবকেরা বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মত খামার গড়ে তুলে আর্থিকভাবে সচ্ছল হচ্ছে। মৎ উৎদনে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে গেছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ২০১৬ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ জলাশয় থেকে মৎস চাষে বিশ্বে চতুর্থ এবং সার্বিকভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছে। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে মাছ উৎদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ লাখ ৫০ হাজার টন। এই লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ৪১ লাখ ৩৪ হাজার টন মাছ উৎদিত হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮৪ হাজার টন বেশি। মাছের উৎপাদন ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ৫৩ শতাংশ বেড়েছে। আনন্দের খবর হলো এই যে দেশের মৎস খাত বর্তমানে মোট জিডিপির ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ যোগান দিচ্ছে। ভবিষ্যতে এই উৎদন আরো বৃদ্ধি পাবে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদেশে রপ্তানির সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
মৎস চাষের পাশাপাশি ডেইরি শিল্প অনেক এগিয়ে গেছে। বর্তমানে সারা দেশে ছোট-বড় সব মিলিয়ে পাঁচ লাখ ২২ হাজার ২৮৯টি ডেইরি খামার রয়েছে। ডেইরি খামারগুলো প্রতিদিন যে পরিমাণ দুধ উৎপাদন করছে তাতে দেশের মোট দুধের চাহিদা মিটে যাচ্ছে। ডেইরি ফার্মগুলোর বদৌলতে দেশে মাংসের উৎপাদন আগের তুলনায় সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামের সাথে শহরের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হওয়ায় গ্রামের কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী সরাসরি শহরে নিয়ে আসছেন এবং তাদের পণ্যের ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। আমাদের দেশের গ্রামের অনেক তরুণ যুবক জীবিকার আশায় বিদেশে গেছেন। তারা বিদেশ থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছেন। এতে করে তাদের পরিবারগুলোর জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়ে গেছে। ইদানীং অনেক শিল্পপতি প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিল্প কারখানা গড়ে তুলছেন। এতে করে গ্রামের মানুষগুলো চাকরির সুযোগ পাচ্ছে। বেকার সমস্যার কিছুটা সমাধান হচ্ছে। গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে গ্রামে শিক্ষার প্রসার ঘটছে। এভাবে আমাদের গ্রামীণ অর্থনীতি ক্রমেই এগিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ব ব্যাংক প্রধান নিজেই দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের নেওয়া উদ্যোগগুলো সরেজমিনে দেখে গেছেন। এসব প্রাপ্তি আমাদের জন্য বড় গৌরবের ব্যাপার। আমাদের এই অর্জনকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে।
সৌজন্যেঃ দৈনিক ইত্তেফাক