4090
Published on অক্টোবর 19, 2013নৌকা এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। দীর্ঘকাল ধরে এদেশের মানুষের জীবনযাত্রার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে নৌকা ব্যবহৃত হয়ে আসছে। যাতায়াত, ব্যাবসায়িক কাজ এবং অন্যান্য নানাবিধ কাজে নৌকা ব্যবহারের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। প্রাচীন বাংলা সাহিত্য, যেমন চর্যাগীতিকায়ও নৌকার উল্লেখ পাওয়া যায়। মনসামঙ্গল কাব্যে বণিক চাঁদ সওদাগরের বাণিজ্যতরী চৌদ্দডিঙা নির্মাণ করে বাণিজ্যে যাত্রা করেছিলেন। মহাকবি কালিদাস তার রঘুবংশে রঘুর দিগ্বিজয় সম্পর্কে বাংলাকে সম্বোধন করেছিলেন ‘নৌসাধনোদ্যতান’ বলে। তাই বলা যায় নৌকা এবং বাঙালী প্রায় সমার্থক দু’টি শব্দ।
অপরদিকে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন ও বৃহত্তম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ তার যাত্রা শুরু করেছিল এই পদ্মা-মেঘনা-যমুনা অববাহিকায় বসবাসকারী মানুষের রাজনৈতিক ভাবনার প্রতীক হিসেবে।৪৭’এর দেশ বিভাগের পর থেকে, এই অঞ্চলের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার বাস্তব প্রতিফলন ঘটাতে বার বার উচ্চকিত হয়েছে আওয়ামী লীগ। সবশেষে পশ্চিম পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মধ্য দিয়ে এই ভূখণ্ডের শতাব্দী প্রাচীন অধীনতার অবসান ঘটে এই আওয়ামী লীগের হাত ধরেই। আমরা যদি আওয়ামী লীগ এর গৌরবোজ্জ্বল অতীতের দিকে তাকাই, তাহলে দেখব ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ ধীরে ধীরে একটি শক্তিশালী রাজনৈতিক দলে পরিণত হয়। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট এর নির্বাচনী প্রতীক ছিল নৌকা। তাই পরবর্তীতে ১৯৭০ সালে আওয়ামী লীগ যখন নির্বাচন করে তখন তারা মার্কা হিসেবে নৌকাকেই বেঁছে নেয়। কারণ যেহেতু আওয়ামী লীগই একমাত্র দল যারা গণমানুষের কথা ভাবে। সুতরাং তারা এমন একটি প্রতীক বেঁছে নিয়েছিল, যা এদেশের মানুষের সবচেয়ে কাছের।
সোনালী অতীত ও সাফল্যমন্ডিত বর্তমান নিয়ে বাংলাদেশের প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির প্রতিনিধিত্ব করে চলেছে আওয়ামী লীগ। সেই গৌরবান্বিত অতীতের সূত্র ধরে, আওয়ামী লীগ আজও সাম্প্রদায়িক এবং স্বৈরাচারী শক্তির বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। আর এই আওয়ামী লীগের মার্কা হচ্ছে নৌকা। এই নৌকা শুধু আওয়ামী লীগের নৌকা নয়। এই নৌকা বাঙালী জীবনের নৌকা, বাংলার ইতিহাসের নৌকা।