490
Published on ডিসেম্বর 31, 2016ডোমেইন উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ডট বাংলা কেবল একটি ডোমেইন নয়, বাঙালি জাতির আত্মপরিচয়ের প্রতীক। এই ডোমেইন ভাষা শহীদদের বিজয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়, সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের বিজয়।
গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এই ডোমেইনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘ডট বাংলা’ ডোমেইনটির সার্ভিস আনুষ্ঠানিকভাবে শুরুর ফলে এখন বাংলা ভাষায় ওয়েবের ঠিকানা নিবন্ধন করা যাবে। এটি ডট বিডির মতো বাংলাদেশের নিজস্ব দ্বিতীয় ডোমেইন সিস্টেম।
ডট বাংলা ডোমেইন বাংলা ভাষার আরেকটি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত সরকারের মাধ্যমে পশ্চিমবঙ্গ এবং সিয়েরা লিওনও ডট বাংলার জন্য আবেদন করেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডট বাংলা’ (.বাংলা) চালুর ফলে বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষ বাংলায় ইন্টারনেটে প্রবেশ ও ব্যবহার করতে পারবেন। এটি চালুর ফলে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষার চাহিদা ও ব্যবহার বৃদ্ধিসহ বাংলা কনটেন্ট তৈরি উৎসাহিত হবে। সর্বস্তরে বাংলা ভাষা প্রচলনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে আমি ডট বাংলাকে আইডিএন (ইন্টারন্যাশনালাইজড ডোমেইন নেটওয়ার্কে) নেটওয়ার্কে অন্তর্ভুক্তির ঘোষণা দিয়ে ছিলাম।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে সময় সাপেক্ষ নানা প্রক্রিয়া শেষে বাংলা স্ট্রিং, ইভল্যুশন, রুট জোন ডেলিগেশন সার্ভার ও সফটওয়্যার স্থাপনসহ কারিগরি প্রস্তুতি, ইন্টারনেট অথোরটি (আইএএনএ), আইসিএএনএন এবং যুক্তরাষ্ট্র এর ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অনুমোদন নেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডট বাংলা ডমেইন এর অ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ কন্টাক্ট এবং টেকনিক্যাল কন্টাক্ট-এর দায়িত্ব পালন করবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেন্স কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল)।
তিনি বলেন, বিটিসিএল’এর ওয়েবসাইট www.btcl.com.bd-তে এখন থেকে ইন্টারনেট ব্রাউজারের এড্রেস বারে ‘বিটিসিএল.বাংলা’ লিখেও প্রবেশ করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষায় ওয়েব সাইটের এড্রেস দেয়া যেতো না। এখন থেকে ইন্টারনেটে বাংলা ভাষায় ওয়েব সাইটের ঠিকানা দেওয়া যাবে এবং শুধুমাত্র বাংলা ওয়েব এড্রেসের মাধ্যমে ওয়েবসাইট পরিচালনা করা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ আর স্বপ্ন নয়, দৃশ্যমান বাস্তবতা। যারা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণার সমালোচনা করেছিলেন, তারাও ডট বাংলা ডোমেইন ব্যবহার করতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে দ্রুত অগ্রসরমান। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। জাতির পিতার ভাষায়, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না।’
ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসনুল হক ইনু, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি, নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচটি ইমাম এবং তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন।
রাষ্ট্র মালিকানাধীন টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) দীর্ঘ প্রক্রিয়ার পর গত ৪ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে বরাদ্দ পাবার পর গ্রাহকদের মধ্যে ডট বাংলা ডোমেইন বিতরণ শুরুর সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
ডট বাংলা ডোমেইন ব্যবহারের অধিকার পাবার পর ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেছিলেন, বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এটি জনগণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।
সরকারি সূত্র জানায়, বিটিসিএল ডোমেইনের জন্য দরখাস্ত আহবান করবে। তারা বলেন, আগ্রহীরা অন লাইনের মাধ্যমে ডট বাংলার জন্য সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে। রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন মোবাইল কোম্পানি টেলিটক-এর রেজিষ্ট্রেশন ফি গ্রহণ করবে।
ইন্টারন্যাশনাল কর্পোরেশন অব এ্যাসাইন্ড ন্যাম এ্যান্ড নাম্বার্স (আইসিএএএন) বাংলাদেশকে ডট বাংলা (.বাংলা) ইন্টারনেট ডোমেইন বরাদ্দ দেয়।
আইসিএএনএন গত ৪ অক্টোবর ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে পত্র দিয়ে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দেয়।
এর আগে আইসিএএনএন ডট বিডি অথবা বিডি হিসেবে বাংলাদেশের জন্য অপর একটি ডোমেইন অনুমোদন করে। এটি এখন বাংলাদেশের নিজস্ব ইউনিকোড ডোমেইন লেভেল। বাংলা ওয়েব সাইটের জন্য এটি দ্বিতীয় কান্ট্রি কোড শীর্ষ পযার্য়ের ডোমেইন ।
বিটিসিএল সূত্রে জানা যায়, বিডির বর্তমান নিবন্ধিত গ্রাহকের সংখ্যা ৩৬ হাজার ৫শ’।
গ্রাহকেরা বাংলা ফ্রন্টে টিসিএল .বাংলা টাইপ করে বিটিসিএল’র ওয়েব সাইটে (ডব্লিউ ডব্লিউ ডব্লিউ.বিটিসিএল.কম.বিডি) যেতে পারেন।