স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-সাংবাদিকদের মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার

1149

Published on নভেম্বর 16, 2016
  • Details Image

এই গেজেটের মাধ্যমে ১০৮ জন শিল্পী, সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও বেতারকর্মী মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেলেন। তাঁরা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ সম্মানী ভাতা ও রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবেন। যাঁরা স্বীকৃতি পেলেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন প্রয়াত সমর দাস, কামাল লোহানী, সৈয়দ হাসান ইমাম, লায়লা হাসান, সুজেয় শ্যাম, প্রয়াত বেলাল মোহম্মদ, শেখ সাদী খান, প্রয়াত বাদল রহমান, প্রয়াত বিপুল ভট্টাচার্য, প্রয়াত নঈম গওহর, প্রয়াত শওকত ওসমান, বুলবন ওসমান, প্রয়াত আবুল কাশেম সন্দ্বীপ, প্রয়াত শেফালী ঘোষ, আসাদ চৌধুরী, প্রয়াত অজিত রায়, আশরাফুল আলম, রথীন্দ্রনাথ রায়, মহাদেব সাহা, কাদেরী কিবরিয়া, মাহবুব তালুকদার, নির্মলেন্দু গুণ, লাকী আখন্দ্, শাহীন সামাদ, বুলবুল মহলানবীশ, ডালিয়া নওশিন প্রমুখ।

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী অপারেশন সার্চলাইটের মাধ্যমে ঢাকা শহরের কয়েক হাজার নিরস্ত্র বাঙালি নিধন করে এবং একই সঙ্গে শেখ মুজিবকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের আগে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা এবং একটি সংক্ষিপ্ত বার্তা প্রদান করে যান। বার্তাটি চট্টগ্রাম পৌঁছালে চট্টগ্রামের কালুরঘাট ট্রান্সমিশন কেন্দ্র থেকে ২৬ মার্চ দুপুরে প্রথমে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান এরপর মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করেন। তখন ওই বেতার কেন্দ্রের নাম দেওয়া হয়েছিল স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। পরবর্তী সময়ে নামকরণ করা হয় ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’। মুজিবনগর সরকার গঠিত হওয়ার পর কলকাতা থেকে এই বেতার কেন্দ্রের সম্প্রচার শুরু হয়। এই বেতার কেন্দ্রের সংবাদ, গানসহ অনুষ্ঠানমালা রণাঙ্গনে সম্মুখ সমরে ঝাঁপিয়ে পড়তে মুক্তিযোদ্ধাদের অফুরান উসাহ জোগায়। এ ছাড়া অবরুদ্ধ দেশের মুক্তিকামী মানুষ ও শরণার্থী শিবিরের উদ্বাস্তুদের উজ্জীবিত রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে এই বেতার কেন্দ্র।

মুক্তিযুদ্ধে অতুলনীয় ভূমিকা পালন করলেও এত দিন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলীদের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি ছিল না। এই স্বীকৃতির ফলে তাঁরা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রতি মাসে সম্মানী ভাতা, অসুস্থ হলে বিনা খরচে সরকারি হাসপাতালে চিকিসা, মারা গেলে রাষ্ট্রীয় সম্মান পাবেন। তাঁদের সন্তান ও নাতি-নাতনিরাও চাকরি ও শিক্ষাঙ্গনে ভর্তির ক্ষেত্রে বিশেষ কোটার সুযোগ পাবে।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছি। একই সঙ্গে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদেরও চিহ্নিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বাধীন বাংলা বেতারের সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করলেও এত দিন তাঁদের আলাদাভাবে কোনো স্বীকৃতি ছিল না। এখন দেওয়া হলো। এর পরও দু-একজন বাদ পড়েছেন বলে আমাদের নজরে এসেছে। তাঁদেরও স্বীকৃতি দেওয়া হবে।’

এর আগে বিচ্ছিন্নভাবে ৮৭ জন শব্দসৈনিক মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পেয়েছেন। এবার প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ১০৮ জন শব্দসৈনিককে স্বীকৃতি দেওয়া হলো। এ নিয়ে গেজেটপ্রাপ্ত মোট শব্দসৈনিক মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা দাঁড়াল ১৯৫।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত