যুদ্ধাপরাধী এবং বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে প্রস্তাবনা সংসদে গৃহীত

391

Published on সেপ্টেম্বর 30, 2016
  • Details Image

বঙ্গবন্ধু হত‌্যা মামলার রায় কার্যকর শুরু এবং একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বহু প্রতীক্ষিত বিচার শুরুর জন‌্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব‌্যুনাল গঠনের ছয় বছর পর বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে এই সিদ্ধান্ত এল।

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের সর্বোচ্চ সাজার দাবিতে আন্দোলন করে আসা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, গণজাগরণ মঞ্চসহ বিভিন্ন সংগঠন যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার দাবি জানিয়ে এলেও প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো না থাকায় এখনও তা সম্ভব হয়নি।

তবে শিগগিরই এ বিষয়ে আইন করা হবে বলে গত বছর আশ্বাস দিয়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধুর খুনি ও দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করার এই প্রস্তাব জাতীয় সংসদে তোলেন। এর ওপর সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাবটি সংসদে গৃহীত হয়।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশন শুরুর পর বেরিয়ে যাওয়ায় এ সময় সভাপিতত্বে ছিলেন ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া।

বৃহস্পতিবার সন্ধ‌্যায় সাংসদ বাপ্পি তার প্রস্তাব সংসদে তোলার আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, “এটা অত্যন্ত সময়োপযোগী প্রস্তাব। মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামিদের ফিরিয়ে আনতে একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়েছে।
ওই টাস্কফোর্সের সভার সিদ্ধান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, “দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের নামে-বেনামে থাকা সম্পত্তি খুঁজে বের করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু অতীতে দেখা গেছে, বাজেয়াপ্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হলেই কাগজপত্র বদলে যেতে পারে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের কোনো সম্পত্তি এ দেশে রাখার অধিকার নেই। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।”

তারপরও কিছু জটিলতা থাকার কথা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের সম্পত্তি ওয়ারিশের হাতে চলে গেছে। ফলে আইনের মাধ্যমে তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সময় লাগবে।

“তবে যারা পলাতক রয়েছে, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে কোনো অসুবিধা নেই। তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে সময় লাগবে না। পলাতকদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।”

পরে ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীদের সব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হউক’ সিদ্ধান্ত প্রস্তাবটি সংসদে উত্থাপন করেন। এ সময় বঙ্গবন্ধু হত্যার পূর্বাপর ঘটনাবলী তিনি সংসদে তুলে ধরেন।

আইনমন্ত্রী জানান, প্রথমে বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। তারপরে দণ্ডপ্রাপ্ত খুনিদের মধ‌্যে যাদের ফাঁসি হয়েছে, তাদের সম্পত্তি আইনের মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করা হবে।

“যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে তাদের যেমন সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে, তেমনি যারা একাত্তরে ৩০ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, সেই যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তিও বাজেয়াপ্ত করা হবে।”

যুদ্ধাপরাধীদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করতে আইন করার কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অবিলম্বে তা সংসদে উপস্থাপন করা হবে।

আইনমন্ত্রী বলেন, “বঙ্গবন্ধুর খুনীদের যতই ফাঁসি দেওয়া হোক, তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হোক না কেন, তারপরও রক্তক্ষরণ বন্ধ হবে না। যতদিন দেশ থাকবে, ততদিন তা বন্ধ হবে না।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত