যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হলো জাতীয় শোক দিবস

552

Published on আগস্ট 15, 2016
  • Details Image

সোমবার ভোর থেকেই সরকার, আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন সমূহসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীগণ এবং সর্বস্তরের মানুষ ইতিহাসের নির্মম হত্যাযজ্ঞ ১৫ আগস্টের কাল রাতে শাহাদাত বরণকারী স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালো রাতে একদল স্বাধীনতাবিরোধী, পাকিস্তানপন্থী সেনা কর্মকর্তা মুক্তযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। বিশ্বের ইতিহাসের এই জঘন্যতম হত্যাকান্ডে সেদিন বঙ্গবন্ধু পত্নী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেসা মুজিব, পুত্র শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, পুত্রবধু সুলতানা কামাল, রোজি কামাল ও তাঁর আত্মীয়-স্বজন অন্যান্যরা শাহাদত বরণ করেন।

সেদিন বিদেশে থাকায় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা প্রাণে বেঁচে যান।

সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভবনসহ সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত, বেসকারি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত ভাবে এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়।

সকালে শত-শত লোক কালো ব্যাজ ধারণ করে পায়ে হেটে এসে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু জাদুঘর প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্যদিয়ে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি পালন শুরু করে।

সকাল সাড়ে ৬টায় রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এই সময় তাঁরা এই মহান নেতার প্রতি সম্মান জানাতে দাঁড়িয়ে কিছু সময়ের জন্য নিরবতা পালন করেন।

এরপর সশস্ত্র বাহিনীর গার্ড অব অনার প্রদান শেষে শাহাদাত বরণকারিদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ মোনাজাত।

এ সময় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁর কণিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, জাতীয় সংসদে উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাগণ, সংসদ সদস্যগণসহ কেন্দ্রীয় ১৪ দলের অন্যান্য নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। পরে ১৪ দল, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পক্ষে এডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পরে দলের সভাপতি হিসেবেও শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির ভেতরে যান। সেখানে ঘুরে ঘুরে তাঁর পিতার স্মৃতিচিহ্ন পরিদর্শন করেন ।

১৪ দলের পক্ষে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের নেতৃত্বে জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, ওয়র্কাস পাটির সভাপতি বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন ও সাম্যবাদী দলের সভাপতি সাবেক মন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাধারণ মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য স্থানটি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

পরে প্রধানমন্ত্রী রাজধানীর বনানী কবরস্থানে তাঁর মা ফজিলাতুন নেসা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল, ভাইদের স্ত্রী সুলতানা কামাল, রোজি কামাল ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনসহ ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। এরপর পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে শেখ রেহানা, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফ, মন্ত্রিসভার সদস্য ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও ঢাকা দক্ষিণ ও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র উপস্থিত ছিলেন।

এরপর প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গিপাড়া গিয়ে জাতির পিতার সমাধি কমপ্লেক্সে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং তিনি এই মহান নেতার প্রতি সম্মান জানাতে দাঁড়িয়ে কিছু সময়ের জন্য নিরবতা পালন করেন। এসময় শেখ রেহানা সঙ্গে ছিলেন। তখন তিন বাহিনীর একটি চৌকষ দল বিউগল বাজিয়ে গার্ড অব অনার প্রদান করেন। তিন বাহিনীর প্রধানগণও উপস্থিত ছিলেন।

মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে জাতির পিতা, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব ও তাঁর সঙ্গে ১৫ আগস্টে শাহাদাত বরণকারী সবার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

মোনাজাতে অংশ নেন সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, পরিবারের সদস্যবৃন্দ, মন্ত্রী পরিষদের সদস্যগণ ও দলীয় নেতা-কর্মীরা।

রাজধানীতে বঙ্গবন্ধু জাদুঘরে গিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, অধিদফতর, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, দূতাবাস ও সামাজিক- সাংস্কৃতিক সংগঠন। এছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের দূতাবাস ও কনস্যুলেট অফিসে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে নানান কর্মসূচি পালন করা হয়।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে দৈনিক সংবাদপত্রে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়,বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ সব বেসরকারি রেডিও এবং টিভি চ্যানেলে থেকে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি তাঁর বাণীতে বলেছেন, আমাদের দায়িত্ব হবে বঙ্গবন্ধুর অসম্পূর্ণ কাজকে সম্পূর্ণ করে বাংলাদেশকে একটি সুখী ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করে তাঁর সেই স্বপ্ন পূরণ করা।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর বাণীতে, জাতির পিতার ত্যাগ ও তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শ ধারণ করে ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত, শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।অপরদিকে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সকাল ৬টার মধ্যেই অগণিত মানুষের পদচারণায় ভরে ওঠে ৩২ নম্বর সড়ক। হাতে কালো ব্যানার ও বুকে কালোব্যাজ পরিধান করে নারী-পুরুষ, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, শিশু-কিশোরসহ সর্বস্তরের মানুষ। সকলেই পরম শ্রদ্ধায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের মাধ্যমে জাতির জনককে স্মরণ করে। সকাল সাড়ে সাতটা থেকে দুপুর ১১টা পর্যন্ত বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার মানুষ বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানায়। শোকাবহ ভাবগাম্ভীর্যের মাঝেও জোরালো কন্ঠে উচ্চারিত হয় ‘বঙ্গবন্ধুর পলাতক খুনিদের দেশে ফিরিয়ে এনে ফাঁসির রায় কার্যকর করা হোক।’ একই সাথে আগত জনতা সম্প্রতি সময়ে দেশে জঙ্গি ও সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার শপথ গ্রহণ করেন।

মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর ও দক্ষিণ, আওয়ামী যুবলীগ, আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুব মহিলা লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ, বাংলাদেশ কৃষক লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, ছাত্রলীগ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা, ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এ ছাড়াও তথ্য মন্ত্রণালয়, পিআইবি, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা শহীদ পরিবার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি, মহিলা শ্রমিক লীগ, মৎস্যজীবী লীগ, তাঁতী লীগ, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, যুব উন্নয়ন অধিদফতর, ঢাকা সিটি করপোরেশন শ্রমিক-কর্মচারী লীগ, গণপূর্ত শ্রমিক লীগ, জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা সমন্বয় পরিষদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট, একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পরিষদ, সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বাংলা একাডেমী, গণগ্রন্থাগার অধিদফতর, জাতীয় জাদুঘর, শিশু একাডেমী, খেলাঘর, বাংলাদেশ বেতার, জাতীয় গণমাধ্যম ইনস্টিটিউট, বেতার কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতি, বিনিয়োগ বোর্ড, শিল্প গবেষণা পরিষদ, ঢাকা আইনজীবী সমিতি, তথ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জাতীয় মহিলা সংস্থা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, বেসরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, জাতীয় কবিতা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু লেখক পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্ম, আওয়ামী মুক্তিযোদ্ধা লীগ, বাংলাদেশ ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, জনতা ব্যাংক, কৃষি ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক ও রূপালী ব্যাংকসহ এসব ব্যাংকের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন, পঙ্গু হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু কৃষিবিদ পরিষদ, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ, সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্যপরিষদ, ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতি, বঙ্গবন্ধু ফেডারেশন, শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, সাধনা সংসদ, আমরা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, মুক্তিযোদ্ধা সমাজকল্যাণ পরিষদ, আওয়ামী সাংস্কৃতিক ফোরাম, আওয়ামী শিল্পীগোষ্ঠী, বঙ্গবন্ধু আইন পরিষদ, মুক্তিযোদ্ধা বিসিএস অফিসার্স কল্যাণ সমিতি, বঙ্গবন্ধু ললিতকলা একাডেমি, সোনার বাংলা যুব পরিষদসহ বিভিন্ন দল ও সংগঠন।

৩২ নম্বরের আশে পাশের রাস্তাসহ রাজধানী জুড়ে শোকের প্রতীক কালো পতাকার পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন, প্লাকার্ড ও তোরণ তৈরি করা হয়েছে।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে মিলাদ মাহফিল, রক্তদান কর্মসূচি, কালোব্যাজ ধারণ ও কাঙালি ভোজের আয়োজনের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ও দেশাত্ববোধক গান বাজানো হয়।

জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার ছিল সরকারি ছুটির দিন। সমগ্র জাতি দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদার মধ্যদিয়ে পালন করেছে।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত