ছয়টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

475

Published on আগস্ট 13, 2016
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশের ৪৬৫টি উপজেলাকে খুব শিগগিরই শতভাগ বিদ্যুৎ দেবো। ৭৮ শতাংশ মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পারছি। অচিরেই শতভাগ মানুষকে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করে দেবো’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৬টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কার্যক্রমের উদ্বোধন এবং আরো বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধনকালে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধিতে তাঁর সরকার বেশ কিছু স্বল্পমেয়াদি এবং দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করায় এর সুফল ইতোমধ্যে জনগণ পেতে শুরু করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এই পদক্ষেপের ফলে দেশের ৭৮ শতাংশ মানুষ এখন বিদ্যুৎ পাচ্ছে। দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা এখন ১৫ হাজার মেগাওয়াট।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয়ের দিকটি তুলে ধরে সবার উদ্দেশে বলেন, ‘আশা করি, বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই একটু মিতব্যয়ী হবেন, সাশ্রয়ী হবেন। তাতে বিলও আপনাকে কম দিতে হবে।’

বিদ্যুতায়িত ৬টি উপজেলা হচ্ছে- গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া, নারায়ণগঞ্জ বন্দর, নরসিংদীর পলাশ, চট্টগ্রামের বোয়ালখালি, কুমিল্লা আদর্শ সদর এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট।

প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মইনুদ্দিন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। স্বাগত বক্তৃতা বিদ্যুৎ ও জ্বলানি মন্ত্রণালয়ের সচিব মনোয়ার ইসলাম।

বিদ্যুৎ চাহিদা মেটাতে কয়লা, নবায়নযোগ্য বহুমুখী বিদ্যুৎ উৎপাদনে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কর্মসূচি বাস্তবায়নের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা হচ্ছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটান থেকেও বিদ্যুৎ উৎপাদন ও আমদানির আলোচনা চলছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের সব মানুষের কাছে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে সরকারের লক্ষ্য অর্জনের প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে ছয়টি উপজেলার শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পেলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিকে মজবুত করার ব্যাপারেও উদ্যোগ নিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। এর মধ্যে একটি পল্লীবিদ্যুৎ। যুদ্ধবিধ্বস্ত একটি দেশের হাল ধরেছিলেন তিনি। বাংলার মানুষের ভালো চেয়েছিলেন তিনি। সেটাই আমরা এগিয়ে নিয়ে চলেছি। এজন্য যখনই কোনো ভালো কাজ করি আমি অনুভব করি, আমার বাবার আত্মা শান্তি পাবে’।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ-বঞ্চনা থেকে মানুষকে মুক্ত করতে এবং মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে আজীবন সংগ্রাম করেছেন। স্বাধীনতার পর তিনি দেশ গড়ার কাজে হাত দিয়েছিলেন। মাত্র নয় মাসের মাথায় তিনি দেশকে সংবিধান উপহার দেন’।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বাড়িয়েছিলাম। পরবর্তীতে ২০০৮ সালে ফের ক্ষমতায় এসে দেখলাম, যা রেখে গিয়েছিলাম, তার চেয়েও উৎপাদন আরও কমে গেছে। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার উৎপাদনতো বাড়ায়ইনি, উল্টো কমিয়ে দিয়েছে।’

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ আশা করছেন, ২০১৮ সালের মধ্যেই ৯৫ শতাংশ জায়গায় বিদ্যুতায়ন করতে পারবেন তারা।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের মাধ্যমে প্রতি মাসে প্রায় সাড়ে তিন লাখ গ্রাহককে বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের মোট ৪৬৫ উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়ে যাবে।

তিনি জানান, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অধীনে ৫৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে শতভাগ মানুষকে বিদ্যুৎ সুবিধা দেয়ার এই কাজ হয়েছে, যার গ্রাহক সংখ্যা ২ লাখ ৩৮ হাজার ৫০ জন।

ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত