বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন আইন-২০১৬ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রীসভা

466

Published on জুলাই 25, 2016
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের নিয়মিত বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে কেবিনেট সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনায় সামরিক শাসনামলে করা একটি অধ্যাদেশ বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন ছাড়া আইনটি বাংলায় প্রবর্তন করে মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়।

১৯৭০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে আইনটি রয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রি পরিষদ সচিব বলেন, রাষ্ট্রপতির আদেশ বলে ‘বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়। ওই আদেশের অনুবৃত্তিক্রমে বিভিন্ন সময়ে আইনটি সংশোধিত হয়েছে। সংশোধিত আইনগুলোকে একত্রিত করে ইংরেজি থেকে বাংলা ভাষায় নতুন আইন করার সিদ্ধান্ত হয়।

নতুন আইনে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন করা হয়নি জানিয়ে মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, অল্প কিছু সংযোজন-বিয়োজন করা হয়েছে।

চট্টগ্রামে শিপিং করপোরেশনের প্রধান কার্যালয় রাখা হলেও সরকারের অনুমতি নিয়ে ঢাকা বা অন্য জায়গায় করা যাবে বলেও আইনে উল্লেখ রয়েছে।

জাহাজ বা নৌ-যান অর্জন, ভাড়া করা, ভাড়া দেওয়া, দখলে রাখা, হস্তান্তর করা, দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে করপোরেশনের কার্যপরিধির অন্তর্ভূক্ত ব্যবসায়িক লেনদেনসহ যেকোনো কাজে নিয়োজিত করা, জাহাজ নির্মাণ বা সংযোজন করা, জাহাজ ব্যবস্থাপনায় দেশ-বিদেশে বন্দরে শিপিং এজেন্ট নিয়োগ, ব্যাংক হিসাব খোলাসহ করপোরেশনের ১২টি কাজ পরিচালনার কথা বলা হয়েছে আইনে।

৭ থেকে ১৩ জন নিয়ে একটি পরিচালনা পর্ষদের কথা বলা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, যার প্রধান হবেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী। আর সদস্য হিসেবে থাকবেন নৌ-পরিবহন সচিব, অর্থ বিভাগ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব মর্যাদার কর্মকর্তা, করপোরেশনের এমডি, নির্বাহী পরিচালক (অর্থ), নির্বাহী পরিচালক (প্রযুক্তি) ও নির্বাহী পরিচালক (বাণিজ্যিক)। এর প্রধান নির্বাহী হবেন এমডি।

করপোরেশনের ৫১ শতাংশ শেয়ার সরকারের এবং ৪৯ শতাংশ বাইরে দেওয়া থাকবে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব। আর অনুমোদিত মূলধন ৪০০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন হবে ৩৫০ কোটি টাকা। শেয়ার সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের বিধির মাধ্যমে নির্ধারিত হবেন শেয়ার হোল্ডাররা।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব জানান, এদিন মন্ত্রিসভা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের বিষয়ে ২০১৬ সালের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক (এপ্রিল-জুন) প্রতিবেদন কেবিনেটে পেশ করা হয়।

চলতি বছর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার গত বছরের তুলনায় ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ বেড়েছে।

চলতি বছর এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত মন্ত্রিসভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের হার ৭০ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত বছর একই সময়ে এই হার ছিল ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।

শফিউল আলম বলেন, ‘গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত ১১টি মন্ত্রিসভা বৈঠক হয়। এতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৯২টি। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হয়েছে ৬৫টি, বাস্তবায়নের হার ৭০ দশমিক ৬৫শতাংশ। ২৭টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।’

অপরদিকে গত বছরের একই সময়ে ১৩টি মন্ত্রিসভা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘ওই সময়ে সিদ্ধান্ত হয় ৬৮টি। এরমধ্যে ৪৪টি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হয়। বাস্তবায়নের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৭১ শতাংশ।’

শফিউল আলম জানান, গত তিন মাসে (এপ্রিল থেকে জুন) মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতি বা কর্মকৌশল ২টি, ৯টি চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে। এ সময়ে সংসদে আইন পাস হয়েছে ২০টি।

তিনি বলেন,গত বছর এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতি বা কর্মকৌশল অনুমোদিত হয়েছে ২টি। চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) অনুমোদিত হয়েছে ৯টি। এ সময়ে সংসদে ৩টি আইন পাস হয়েছে।

মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, গত ১৮মার্চ সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এশিয়ায় জাহাজে জলদস্যুতা ও সশস্ত্র ডাকাতি মোকাবেলা বিষয়ক আঞ্চলিক সহযোগিতা চুক্তি (আরএসিএএপি)’ এর-দশম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে নৌপরিবহন মন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধিদলের যোগদানের বিষয়টি বেঠককে অবহিত করা হয় ।

তিনি জানান, ভিয়েনায় গত ২০ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী রিভিউ গ্রুপের বাস্তবায়ন সম্পর্কিত সপ্তম সেশনে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের অংশগ্রহণের বিয়ষও বৈঠকে অবহিত করা হয়। বৈঠকে মন্ত্রীবর্গ এবং প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন,সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিবগণও উপস্থিত ছিলেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত