379
Published on জুলাই 9, 2016গুলশানে রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার পরপরই নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পাঠানো পৃথক বার্তায় এবং টেলিফোনে কথা বলার সময় ওই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা এবং জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বাংলাদেশের প্রতি সমর্থন জানান। কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতের কাছে হামলার পরও তারা সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সন্ত্রাসী হামলা ও নিরীহ মানুষের হত্যাকান্ডের নিন্দা জানিয়ে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশ থেকে জঙ্গীবাদের মূলোৎপাটনের লক্ষ্যে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের হোতাদের ধরতে সহায়তার প্রস্তাব দেন।
তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা এবং যেকোন প্রয়োজনে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন বাংলাদেশ সরকারকে আশ্বস্ত করেন, সহিংস উগ্রবাদ মোকাবিলায় সহযোগিতা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের মূলোৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশেকে যেকোন সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
সাম্প্রতিক হামলার ব্যাপারে আগের মতোই তীব্র নিন্দা জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শনিবার আবারও বলেন, সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদের মূলোৎপাদনের লক্ষ্যে বাংলাদেশেকে যেকোন সহায়তা করতে প্রস্তুত যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে পাঠানো এক বার্তায় ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী বলেন, নিরীহ বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি তাঁকে ব্যথিত করেছে। তিনি বলেন, ‘আপনার সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সফল উদ্যোগের কারণে বেশ কয়েকজন জিম্মির জীবন রক্ষা পাওয়ার কথা জেনে আমি খুবই স্বস্তি অনুভব করেছি।’
শোলাকিয়ায় হামলারও নিন্দা জানিয়ে প্রণব মুখার্জী বলেন, ঘৃণা, গোলযোগ ও অস্থিতিশীলতা ছড়ানো যাদের লক্ষ্য সেই শক্তিকে পরাজিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারকে সক্ষম করতে ভারত সরকার সম্ভাব্য সকল সহায়তা দিবে।
জাপানের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সেইজি কিহারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে সাক্ষাৎ করে জানান, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে টোকিও তাঁর সরকারের সাথে কাজ করবে। এসময় প্রধানমন্ত্রী গুলশানের ঘটনার নেপথ্য নায়কদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে টেলিফোন করেন এবং গুলশানে স্প্যানিশ রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা জানান।
এছাড়াও সন্ত্রাসী হামলার নিন্দা, সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের প্রশংসা করে বিবৃতি দিয়েছেন ব্রিটিশ হাইকমিশনার এলিশন ব্লেক, কানাডিয়ান হাইকমিশনার বেনোয়েট পিয়েরে লারাম এবং রুশ দূতাবাস।
গুলশান রেস্টুরেন্টে হত্যাকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টুস্ক এক বিবৃতিতে বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ সব ধরনের চরমপন্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ করবে।
এই সন্ত্রাসী ঘটনার প্রতিবাদে ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টবগে বলেন, তার দেশ সর্বদা বাংলাদেশের পাশে আছে। জিম্মি সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত ও শক্ত অবস্থান গ্রহণের মাধ্যমে এই বার্তা দিয়েছে যে, কোন পরিস্থিতিই সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে বরদাশত করা হবে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
ড্যানিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান জেনসন এই হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, অর্থহীন নাশকতা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা অবশ্যই প্রতিহত করতে হবে।
অস্ট্রেলিয়া সেদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী জুলি বিশপের মাধ্যমে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, ‘এটি আরেকটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা। আমরা এর প্রতিবাদ করি। আমরা বাংলাদেশের জনগণের জন্য অনুভব করি।’
তিনি মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বৈধতা ও ধ্বংসযজ্ঞের দায়িত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের বৈদেশিক ও নিরাপত্তা নীতি বিষয়ক উচ্চতর প্রতিনিধি ফেডেরিকা মগহেরিনি গুলশান রেস্টুরেন্টের সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এটি একটি জঘন্যতম কর্মকান্ড, যা বিশ্ব সম্প্রদায়কে সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছে।