প্রাথমিক ও জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষা চালু রাখতে মন্ত্রীসভায় সিদ্ধান্ত

1268

Published on জুন 27, 2016
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে প্রথমিক শিক্ষাস্তরে আরো যাচাই বাছাই করে পরবর্তীতে প্রস্তাবটি পেশ করার জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে নিদের্শ দেয়া হয়েছে।

বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদের সভাকক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, মন্ত্রিসভা প্রস্তাবটি অনুমোদন করেনি। এটি আরো যাচাই বাছাই করে দেখতে বলা হয়েছে। তিনি বলেন, মন্ত্রিসভা প্রস্তাবটি আরো পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখতে মন্ত্রনালয়কে নিদের্শ দিয়ে বলেছে, নতুন করে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়া পযর্ন্ত পঞ্চম শ্রেণীতে প্রাথমিক পরীক্ষার এবং অষ্টম শ্রেণীতে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষার বর্তমান পদ্ধতি বহাল থাকবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মন্ত্রিসভার অভিমত হিসাবে বলেন, মন্ত্রিসভা মনে করে, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বর্তমান পরীক্ষা পদ্ধতি পৃথক। ফলে ২০১৬ সালে নতুন পদ্ধতিতে প্রাথমিক পরীক্ষা নেয়া সম্ভব নয়। এ জন্য আরো প্রস্তুতির প্রয়োজন।

বৈঠকে মন্ত্রিসভা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে বাংলাদেশ ও রাশিয়ার মধ্যে আন্তঃরাষ্ট্রীয় ঋণ চুক্তির খসড়াসহ তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। অপর দুটি প্রস্তাব হলো জাতীয় টলিকমিউনিকেশন নীতি-২০১৬ এবং বাংলাদেশে বিদেশী জাহাজের উন্মুক্ত নিবন্ধন বাতিল।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঋণ চুক্তির খসড়ায় বলা হয়েছে, মোট ১২.৬৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে প্রতিটি ১২০০ মেগাওয়াটের দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য বাংলাদেশকে রাশিয়া ১১.৩৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেবে। আগামী আগস্ট অথবা সেপ্টেম্বরে এই চুক্তিটি স্বাক্ষর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ২০১৭ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এই ঋণ পাবে। ঋণের সুদ হার ৪ শতাংশের বেশি হবে না। ঋণের প্রথম কিস্তি বিতরণের তারিখ থেকে দশ বছর মেয়াদ শেষে ৩০ বছরের মধ্যে সমপরিমাণ কিস্তিতে এই ঋণ পরিশোধ করা হবে।

২০২৭ সালের ১৫ মার্চ থেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা শুরু হবে। প্রতি বছরে দুটি কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। একটি ১৫ মার্চ এবং অপরটি ১৫ সেপ্টেম্বর কিস্তি পরিশোধের তারিখ। উন্নয়ন এবং বৈদেশিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়ক রাশিয়ান ব্যাংকে এই অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ সরকারকে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ি রাশিয়ার নির্মাণ ফার্মকে মোট ব্যয়ের কমপক্ষে দশ শতাংশ অর্থ অগ্রিম প্রদান করতে হবে।

সচিব আরো বলেন, জাতীয় টেলিযোগাযোগ নীতি-২০১৬ বর্তমান টেলিযোগযোগ নীতি-১৯৯৮ এর স্থলাভিষিক্ত হবে। তিনি আরো বলেন, জাতীয় আইসিটি নীতি-২০১৫, জাতীয় ব্রডব্যান্ড নীতি-২০০৯, এবং আন্তর্জাতিক লং ডিসট্যান্স টেলিকমিউনিকেশন সাভির্স নীতি-২০১০ নতুন টেলিযোগাযোগ নীতিতে একিভূত হয়ে যাবে।

জাতীয় টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে এবং নতুন বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের সংযুক্ত হতে দশ বছর মেয়াদি টেলিকমিউনিকেশন নীতি প্রণীত হয়। দেশের টেলিযোগাযোগ এবং ইন্টারনেট সেবা উন্নয়নে পর্যায়ক্রমে ২০১৮, ২০২১ এবং ২০২৫ সালের জন্য স্বল্প, মাঝারি ও দীর্ঘ মেয়াদি নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।

তিনি জানান, মন্ত্রিসভা টেলিগ্রাফ আইন- ১৮৮৫, ওয়ালেস টেলিগ্রাফ আইন-১৯৩৩, রেডিও ট্রান্সমিশন আইন-১৯৭৫ ও ১৯৯২, টেলিভিশন ট্রান্সমিশন আইন- ১৯৬৫ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন ২০০৬, এবং পর্নোগ্রাফি আইন-২০১২ ও টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি আইন-২০০১-সহ টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত বর্তমান সকল আইনের সমন্বয়ে একটি একক আইন প্রণয়নের সুপারিশ করেছে।

সাইফুল আলম বলেন, মন্ত্রিসভা বাংলাদেশে বৈদেশিক জাহাজের উন্মুক্ত নিবন্ধনের বর্তমান প্রভিশন বাতিল করে দিয়েছে। ১৯৮৯ সালে এটি চালু হয়েছিল। অপরাধমূলক কর্মকান্ড ও অন্যান্য সমস্যা সৃষ্টির সাথে জাহাজ ও জাহাজের ক্রুদের জড়িত থাকার ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশে বৈদেশিক জাহাজের মর্যাদা পরিবর্তন হবে এবং এখন থেকে জাহাজ নিবন্ধনের ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য দেশকে অনুসরন করা হবে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র পানামা, লাইবেরিয়া ও মার্শাল দ্বীপ-এর মতো কয়েকটি দেশে বিদেশী জাহাজের উন্মুক্ত নিবন্ধন হয়।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত