306
Published on এপ্রিল 24, 2016এ বিষয়ে তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক পাসপোর্টসহ নিরাপদ ভ্রমণ ডকুমেন্ট চালুর মাধ্যমে দেশের ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট পদ্ধতি সম্পূর্ণ আধুনিক করে তুলতে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।
রোববার ঢাকার আগারগাঁওয়ে ডিপার্টমেন্ট অব ইমিগ্রেশন অ্যান্ড পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ ২০১৬ এবং বিভাগীয় ও আঞ্চলিক ১০টি পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের নব নির্মিত ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।
এই খাতকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল করার ক্ষেত্রে সরকার গত সাত বছরে অসামান্য সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইলেকট্রনিক পাসপোট চালু হওয়ার পরে পাসপোর্ট ইস্যুতে প্রতারণার অবসান ঘটবে।
শেখ হাসিনা বলেন, পাসপোর্ট হলো একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রতীক। এটি জাতির মর্যাদা বহন করে। হয়রানি ছাড়া পাসপোর্ট পাওয়া প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। এ ক্ষেত্রে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিস নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাসপোর্ট সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে অব্যাহত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিটি জেলায় একটি করে পাসপোর্ট অফিস থাকবে।
তিনি আশা করেন, নতুন উদ্বোধন করা পাসপোর্ট অফিস জনগণের দোরগোড়ায় উন্নত সেবা পৌঁছে দিতে সহায়ক হবে।
নতুন এই পাসপোর্ট অফিসগুলো হলো- ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস এবং আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসগুলো হলো কিশোরগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, পটুয়াখালি, ফেনী, মুন্সীগঞ্জ, কুষ্টিয়া, পাবনা ও দিনাজপুর।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি,স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান এবং ডিআইপির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
‘পাসপোর্ট নাগরিক অধিকার : নিঃস্বার্থ সেবাই অধিকার’এই শ্লোগান নিয়ে ২৮এপ্রিল পর্যন্ত পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ পালিত হবে।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট খাতের উন্নয়নে নেয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে তাঁর সরকার যেসব জেলা থেকে বেশী মানুষ বিদেশে যায় যেসব স্থানে পাসপোর্ট সেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা নেয়।
তিনি বলেন, ডিআইপি এ পর্যন্ত ১ কোটি ৪০ লাখ মেশিন রিডেবল পার্সপোর্ট এবং ৩ লাখ ২৬ হাজার মেশিন রিডেবল ভিসা দিয়েছে। এটি একটি যুগান্তকারী ঘটনা। অনেকে এই পদক্ষেপের সম্ভাব্যতা নিয়ে সন্ধিহান ছিলেন। কিন্তু ডিআইপি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরলস প্রচেষ্টায় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হয়েছে।
শেখ হাসিনা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অনেক মিডিয়া বিষয়টি নিয়ে অনেক হতাশাজনক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু এ প্রকল্পে ব্যাপকসংখ্যক পাসপোর্ট দেয়ার পরও মিডিয়া এই নিয়ে কোন ইতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি।
তাঁর সরকারের আমলে মিডিয়ার উন্নতির কথা উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, মিডিয়ায় সরকারের সমালোচনার পাশাপাশি সাফল্যের প্রতিবেদনও প্রকাশ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩৩টি ইমিগ্রেশন চেক পয়েন্ট এবং ৬৫টি পাসপোর্ট ও ভিসা উইং খোলা ছাড়াও তাঁর সরকার প্রত্যেক জেলায় একটি করে পাসপোর্ট অফিস স্থাপন করেছে। এই অধিদফতরের লোকবল ৩৯৭ থেকে ১ হাজার ১৮৪ জনের উন্নীত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তাদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।
জনগণের উন্নত সেবা পাওয়ার ব্যবস্থা শীর্ষক পাসপোর্ট সেবা পক্ষের শ্লোগানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের জন্য সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা নগর আদর্শ মহিলা কলেজের নবনির্মিত একাডেমি ভবন উদ্বোধন করেন।
এ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে তিনি শিক্ষা বিশেষ করে নারী শিক্ষা ও ক্ষমতায়নে তাঁর সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, জনসংখ্যার অর্ধেক হচ্ছে নারী, এ জন্য নারীর ক্ষমতায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, বেসামরিক প্রশাসন ও বিচার বিভাগসহ সকল ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে।
অর্থনৈতিক মুক্তির প্রধান হাতিয়ার হচ্ছে শিক্ষা একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বাস্তবতা থেকে বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার পর শিক্ষার উপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষিত সমাজ গঠনের লক্ষে বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও অবৈতনিক করেছেন।
শেখ হাসিনা কলেজটির জন্য আটতলা বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণের ঘোষণা দেন। তিনি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান অন্যান্যের মধ্যে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।