8975
Published on ফেব্রুয়ারি 1, 2016প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার তাঁর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব মো. শফিউল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বলেন, ‘নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫১’ এবং ‘বাংলাদেশ সিটিজেনশীপ টেম্পরারি প্রভিশন্স অর্ডার, ১৯৭২’ এর সমন্বয় ও হালনাগাদ করার মাধ্যমে নতুন আইনের এ খসড়া প্রণীত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ আইনে ৬ অধ্যায়ে ২৮টি ধারা রয়েছে। এতে নাগরিকত্ব লাভ, নাগরিকত্ব পেতে অযোগ্যতা ও নাগরিকত্ব বাতিলের বিধান রয়েছে। এতে প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। বিদ্যমান আইনে কেবল যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাজ্যে প্রবাসী বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য দ্বৈত নাগরিকত্বের সুযোগ রয়েছে। সচিব বলেন, মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত খসড়া আইনে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গেজেট নোটিফিকেশনের মাধ্যমে নাগরিকত্ব লাভে নিষিদ্ধ ঘোষিত রাষ্ট্র ছাড়া কূটনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে এমন যে কোন দেশে বসবাসকারী কোন বাংলাদেশী নাগরিক দ্বৈত নাগরিকত্ব লাভের সুযোগ পাবেন।
তবে বিচারক, জাতীয় সংসদ সদস্য বা সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত বা শৃঙ্খলা বাহিনীতে বা প্রজাতন্ত্রের অসামরিক কর্মে নিয়োজিত থাকাকালে কোন ব্যক্তি দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন না।
দ্বৈত নাগরিকরা জাতীয় সংসদের সদস্য পদে নির্বাচন, রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচন, বিচারকসহ প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মে নিয়োগ লাভ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন ও কোনো রাজনৈতিক দল করতে পারবেন না।
বিদেশী কোনো নাগরিক বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণ করলে তারাও নির্বাচন বা প্রজাতন্ত্রের কোনো কাজে নিয়োগ পাবেন না।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব বলেন, এ আইনের আওতায় কোনো বিদেশী নাগরিককে সামাজিক, বিজ্ঞান, সাহিত্য, বিশ্বশান্তি, মানব উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিশেষ যোগ্যতা কিংবা বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য বাংলাদেশের সম্মানসূচক নাগরিকত্ব প্রদান করা যাবে।
বৈবাহিক সূত্রে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পেতে কোনো বিদেশী নাগরিককে বাংলাদেশে কমপক্ষে ৫ বছর বসবাস করতে হবে।
দ্বৈত নাগরিকত্ব ছাড়া যদি কোনো ব্যক্তি বিদেশী রাষ্ট্রের প্রতি প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আনুগত্য প্রকাশ, বিদেশী রাষ্ট্রের কোনো বাহিনীতে যোগদান বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা অন্য কোনোভাবে অন্য দেশকে সহায়তা করে এবং এমন কোনো রাষ্ট্রর নাগরিক যে রাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে যুদ্ধে লিপ্ত ছিল বা আছে এবং বাংলাদেশে বেআইনি অভিবাসী হিসেবে বসবাস করছে এমন ব্যক্তিরা নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব¡ পরিত্যাগকারীদের কেউ পুনরায় বাংলাদেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের আবেদন করলে সরকার সে আবেদনের যৌক্তিকতা বিবেচনা করতে পারবে।
আইন অমান্যের সাজার বিষয়ে তিনি বলেন, এ আইনে মিথ্যা বা বিকৃত তথ্য প্রদান বা তথ্য গোপন সংক্রান্ত অপরাধের জন্য এক লাখ টাকা জরিমানা বা অনধিক ৫ বছরের কারাদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান রয়েছে। তবে পরবর্তীতে জরিমানার বিষয়টি আইনমন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত কমিটি বৃদ্ধি করতে পারবে।
মন্ত্রিসভা বৈঠকে মার্চের শেষ বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে ১০ মার্চ জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তÍতি দিবস পালনের প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠকে চীনের বেইজিংয়ে ১৬ থেকে ১৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) বোর্ড অব গভর্ণরসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এবং বোর্ড অব ডাইরেক্টরসের প্রথম বৈঠকে যোগদান সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।
এছাড়া ৫ থেকে ৮ জানুয়ারি সৌদি আরবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফর এবং গত বছরের ৩ থেকে ৪ ডিসেম্বর বুলগেরিয়ার সোফিয়াতে ৫ম এশিয়া-ইউরোপ সম্মেলনে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রীর অংশগ্রহণ সম্পর্কেও মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।
মন্ত্রীবর্গ ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।