1398
Published on জানুয়ারি 28, 2016এ গ্রন্থের একটি কপি চাই ঝি আজ গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুরোধে চাই ঝি এটি চীনা ভাষায় অনুবাদ করেন। চাই ঝি ১৫ বছর ঢাকায় চীনা দূতাবাসে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন।
অনুষ্ঠানে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খানও বক্তৃতা করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই এলাহী চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিদ্যুৎ সচিব মনোয়ার ইসলাম, প্রেস সচিব ইহ্সানুল করিম, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি আবদুস সোবহান গোলাপ এবং মাহবুুবুল হক শাকিল উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কারাগারে বসে বঙ্গবন্ধুর এ লেখা শুধু বাংলাদেশ নয়Ñ উপমহাদেশের ইতিহাসের জন্যও একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। তিনি ঔপনিবেশিক শাসকদের হাত থেকে বঙ্গবন্ধুর এ ডায়েরী রক্ষায় তাঁর মা মঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ভূমিকার কথা স্মরণ করেন।
১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে বঙ্গবন্ধুর চিন সফর এবং ১৯৫৬ সালে চিনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই-এর ঢাকা সফরের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু এসব সফরের কথা তাঁর ডায়েরীতে লিখেছেন। সে লেখায় তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, চিন একটি অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আভির্ভূত হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর ভবিষ্যদ্বাণী সত্যে পরিণত হয়েছে। চিন এখন বিশ্বে একটি বিরাট অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তি। বঙ্গবন্ধুর চিন সফর নিয়ে আলাদা আরেকটি বই প্রকাশিত হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সেটিও চিনা ভাষায় অনুবাদ করার জন্য চাই ঝিকে অনুরোধ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্ব দিয়ে থাকে। আমরা এতদঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে শান্তিপূর্ণ আঞ্চলিক সহাবস্থান এবং এ অঞ্চলকে দারিদ্র্য মুক্ত করতে চাই।
চীনের সাবেক রাষ্ট্রদূত প্রধানমন্ত্রীকে জানান, চীনা সংস্করণের গ্রন্থ বিক্রির সকল অর্থ বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরকে প্রদান করা হবে। বাংলাদেশে তার ১৫ বছর চাকরির কথা উল্লেখ করে চাই ঝি বলেন, তিনি ইতোমধ্যে বাংলাদেশের প্রেমে পড়ে গেছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোম’।
চাই ঝি ২০০৩ থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে চিনের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। ছাত্র হিসেবে ১৯৭৬ সালে তিনি প্রথম বাংলাদেশ সফর করেন।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বশেষ চিন সফরকালে বইটি চিনা ভাষায় অনুবাদ করার জন্য তাকে অনুরোধ করেন। সে সময় চাই ঝি বলেছিলেন, ‘আপনি যদি বলেন, তাহলে অবশ্যই আমি করবো। এটি আমার জন্য একটি বড় সম্মানজনক বিষয় হবে।’ ঝি আরো বলেন, বঙ্গবন্ধু একজন মহান নেতা এবং চীনের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন।
চীনা ভাষায় বইটি অনুবাদ প্রসঙ্গে চাই ঝি বলেন, ‘এ কাজটি সম্পন্ন করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমি মনে করি একটি ভালো কাজ করেছি।’ তিনি প্রধানমন্ত্রীকে আরো জানান, এই বইয়ের ওপর চীনে একটি প্রকাশনা অনুষ্ঠান হবে।
তিনি বলেন, বইটি চীনা ভাষায় অনুদিত হওয়ার কারণে চীনের জনগণ বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি এই মহান নেতা সম্পর্কে জানতে পারবে।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ৮ বছর পর বাংলাদেশে এসে গত কয়েক বছর ধরে ৬ শতাংশের ওপর জিডিপি প্রবৃদ্ধি বজায় রয়েছে দেখতে পেয়ে তিনি খুবই আনন্দিত। বিশ্বের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে এটি সহজ কাজ নয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।