453
Published on জানুয়ারি 17, 2016আইসিটি বিভাগ ২০১৬ সালকে ইন্ডাস্ট্রি, আই-স্ট্রাকচার, ই-গভ., এইচআরডি, ল্যাব ও সার্ভিস—এই ৬টি ভাগে ভাগ করে অগ্রসর হতে চায়। মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) ভবনে সরকারের আইসিটি বিভাগের দুই বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত ‘এগিয়ে যাওয়ার আরও দুই বছর’ অনুষ্ঠানে আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এই রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
রোডম্যাপের ইন্ডাস্ট্রি অংশে বলা হয়েছে, সহস্র ইনোভেশন ও ২০২১ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার রফতানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং গেমিং শিল্পের জন্য ইকো-সিস্টেম তৈরি করা হবে। এছাড়া ইনোভেশন ও এন্টারপ্রেনারশিপ একাডেমিও তৈরি করা হবে। জুনাইদ আহমেদ পলক এ প্রসঙ্গে বলেন, ডিপিপির জন্য এগুলো অর্থমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ২০১৬ সালে দেশের তথ্যপ্রযুক্তিতে যা হবে
আই-স্ট্রাকচার বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আমরা এরই মধ্যে উপজেলা পর্যন্ত ফাইবার অপটিক সংযোগ পৌঁছতে পেরেছি। আমাদের লক্ষ্য, ২০১৬-১৮ সালের মধ্যে দেশের সব ইউনিয়নে এই সেবা পৌঁছানো। তিনি আরও বলেন, একই সঙ্গে আমরা সারাদেশে বিভাগ থেকে উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ৫০০-এর অধিক (৫৫৪টি) বিপিও সেন্টার (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) গড়ে তুলব। তিনি আরও জানান, এ বছরই বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডাটা সেন্টারের (টিয়ার ফোর) নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
পলক জানান, আইসিটি বিভাগ ও বিচার বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ২০১৮ সালের মধ্যে ‘বাংলাদেশের বিচারিক ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজেশনে সহায়তা প্রদান’ শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে, সারাদেশের আদালতপাড়ায় প্রতি দিন ১০ হাজার মানুষ অপেক্ষায় থাকেন। প্রায় ৩০ লাখ মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে। এই প্রকল্পের কাজ শুরু হলে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, বিচার কাজে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে গেলে সংশ্লিষ্ট আইন এবং বিধিতে বেশ কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিচারিক কাজে অন্তত ১০০টি জায়গায় প্রযুক্তি ব্যবহার করা সম্ভব। সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় আমরা সেগুলো চিহ্নিত করেছি। আশা করি প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলাজট এড়ানো যাবে।
ই-গভ. নিয়ে আইসিটি বিভাগের আরেকটি উদ্যোগ হলো ইআরপি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারি অফিসে কম কাগজের ব্যবহার। এজন্য ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে দেশীয় সফটওয়্যার কোম্পানির সহযোগিতা নেওয়া হবে।
এইচআরডি তথা মানবসম্পদ উন্নয়নে আইসিটি বিভাগ ঢাকার বাইরে ৭টি ইনকিউবেটর ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলবে। এরই মধ্যে কোর্স কারিকুলাম ঠিক করে তা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে পলক জানান।
আরেকটি প্রকল্প রয়েছে ডিজিটাল বাস নামে। এই প্রকল্পে ছয়টি বাসে গড়ে তোলা হবে আধুনিক প্রশিক্ষণ ল্যাব। প্রশিক্ষকসহ বাসগুলো সারাদেশে পরিভ্রমণ করবে। মোবাইলফোন অপারেটর রবি এবং হুয়াওয়ে বাংলাদেশ যৌথভাবে এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন করবে বলে জানানো হয়। জানানো হয়, অনলাইন এডুকেশনে খান একাডেমির শিক্ষামূলক ভিডিও টিউটোরিয়ালগুলো বাংলায় ভাষান্তর করা হচ্ছে। আগামী ফাউন্ডেশন ভিডিও কনটেন্টগুলো স্থানীয়করণের কাজ করছে। এটি সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা বাংলা খান একাডেমির তথ্য ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান পলক। তিনি আরও জানান, এ ছাড়াও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব ও সফটওয়্যার কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স ল্যাব তৈরি করবে আইসিটি বিভাগ।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাদেশে ৩ হাজার কম্পিউটার কাম ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাব তৈরি করব। সারাদেশে যে ১ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখান থেকে বেছে নিয়ে ল্যাবগুলো করা হবে। যদিও ল্যাব সংখ্যা অপ্রতুল। এ কারণে এর পরের ফেজে আমরা লো-কস্ট ডিভাইস দিয়ে ল্যাব তৈরি করব। সেসব ল্যাবে রাসবেরি পাই এবং গুগল ক্রোম ব্যবহার করব।
সার্ভিসের কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, আরা এরই মধ্যে ইনফো লেডি নামের একটি প্রকল্প চালু করেছি। এই প্রকল্পে নারীরা বাই-সাইকেলে করে তথ্যপ্রযুক্তি ডিভাইস নিয়ে গিয়ে বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নারীদের তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার শেখাবে। ন্যাশনাল হেল্পলাইন চালুর বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা একটি শর্টকোড ব্যবহার করে ন্যাশনাল হেল্পলাইন চালু করব। এই হেল্পলাইনে ফোন করে সবধরনের সহযোগিতা চাওয়া যাবে। জানা যায়, জুনাইদ আহমেদ পলক ১৯৭১ ও ২০২১ নম্বরে দুটি শর্টকোড চেয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসিতে আবেদন করেছেন।
এছাড়া, তিনি আরকেটি উদ্যোগের কথা বলেছেন, সেটি হলো ই-শপ। এতে করে মধ্যস্বত্তভোগীদের দৌরাত্ম্য কমবে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এই ই-শপের মাধ্যমে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পাবেন।
Courtesy: Bangla Tribune