353
Published on জানুয়ারি 5, 2016পিএমবি প্রকল্পের দ্বিতীয় রিভিশনে অতিরিক্ত ব্যয়ে এখন পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়ালো ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা।
একনেক চেয়ারপার্সন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চলতি অর্থবছরে একনেকের ১৭তম বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এ এইচ এম মুস্তফা কামাল বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, একনেক মঙ্গলবার ৩৩ হাজার ১৮৫ কোটি টাকার পদ্মা বহুমুখী সেতুসহ ১০টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে। মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে জাতীয় কোষাগার থেকে পাওয়া যাবে ৩০ হাজার ২৯২ কোটি টাকা। বাকি টাকার মধ্যে ২২.৩২ কোটি টাকা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে এবং বাকি ২ হাজার ৮৭০ কোটি টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে পাওয়া যাবে।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রী পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বলেন, কয়েকটি নতুন কাজ প্রকল্পে সংযুক্ত হয়েছে। এরমধ্যে মাওয়ায় প্রায় ১.৩ কিলোমিটার এলাকায় নদী শাসন কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, দ্বিতীয় রিভিশন অনুযায়ী প্রধান সেতুর নির্মাণ ব্যয় প্রথম রিভিশনের ৮ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকা হয়েছে। নদী শাসনের কাজের ব্যয় প্রথম রিভিশনের ৪ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৯ হাজার ৪শ’ কোটি টাকা হয়েছে।
প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সড়ক প্রশস্তকরণ, ফেরি ঘাট স্থানান্তর মাওয়া ও জাজিরা পয়েন্টে ফেরি সংযোগ সড়কসহ সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত কাজে মোট ৪০৮ কোটি টাকা ব্যয় হবে। পুনর্বাসন কাজে প্রথম রিভিশনের ব্যয় ১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৫১৫ কোটি টাকা হয়েছে। পাশাপাশি ভূমি অধিগ্রহণ ব্যয় প্রথম রিভিশনের ১ হাজার ৮৬ কোটি টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা হয়েছে।
কামাল জানান, এই প্রকল্পে নদী শাসনে সর্বোচ্চ প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
মূল সেতু নির্মাণ ছাড়াও দ্বিতীয় সংশোধনীতে জাজিরা এ্যাপ্রোচ রোড ও নির্ধারিত সেতুর সুবিধার জন্য ১ হাজার ৯৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মাওয়া এ্যাপ্রোচ রোড ও নির্ধারিত সেতুর সুবিধাদির জন্য ১৯৩ কোটি ৪০ লাখ এবং সার্ভিস এরিয়া-২-এর জন্য ২০৮ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে।
২০০৭ সালের ২০ আগস্ট এ প্রকল্পের অনুমোদনকালে প্রাথমিকভাবে এর ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছিল ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকা। অবশ্য তখন এতে রেললাইন অন্তর্ভুক্ত ছিল না। পরে ২০১১ সালের জানুয়ারিতে প্রকল্পটির প্রথম সংশোধনীতে রেললাইন যুক্ত হলে এর ব্যয় দাঁড়ায় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা।
বৈঠকে অনুমোদিত অপর প্রকল্পগুলো হচ্ছে- ১ হাজার ৭৮২ কোটি টাকায় স্কিলস এ্যান্ড ট্রেনিং এ্যানহেন্সমেন্ট প্রজেক্ট (দ্বিতীয় সংশোধনী), ১২৯ কোটি টাকায় গোপালগঞ্জ টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ প্রতিষ্ঠা (প্রথম সংশোধিত), ১৮০ কোটি টাকায় বিলুপ্ত ছিটমহলগুলোর পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, ৫২ কোটি ২৫ লাখ টাকায় বাংলাদেশ ফিশারিজ একাডেমির উন্নয়ন ও শক্তিশালীকরণ (দ্বিতীয় সংশোধিত), ৪৮ কোটি ২৭ লাখ টাকায় জাতীয় কৃষি প্রশিক্ষণ একাডেমি শক্তিশালীকরণ এবং ২৮২ কোটি ৮৩ লাখ টাকায় বাগেরহাট জেলায় পোল্ডার নম্বর ৩৬/১ পুনর্বাসন, ৮০৭ কোটি টাকায় নিউ হরিপুর বিদ্যুৎ কেন্দ্র উন্নয়ন প্রকল্প (হরিপুরে ৪১২ মেগাওয়াট কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সার্ভিস এগ্রিমেন্ট ও অন্যান্য সহায়ক সার্ভিস, ৭২ কোটি ২৬ লাখ টাকায় টেস্টিং ফ্যাসিলিটিজসহ বিটাকের শক্তিশালীকরণে টুল ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ১ হাজার ৩৬ কোটি ২৬ লাখ টাকায় ভান্ডাল জুরি পানি সরবরাহ প্রকল্প।
মন্ত্রীগণ, প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ এবং পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সচিবগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।