660
Published on জানুয়ারি 3, 2016“বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ করতে হলে কাউকে অবহেলিত রেখে তা পারব না। কে কোন কোণায় আছে, সকলের উন্নয়ন করতে হবে,” বলেন সরকারপ্রধান। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এ অনুষ্ঠানে ৩৬০ জন শিক্ষার্থীকে ২৫ হাজার টাকা করে বৃত্তি দেওয়া হয়। এ বছর মোট ৭০ লাখ টাকা বৃত্তি হিসেবে দিচ্ছে সরকার।
এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং ভবিষ্যতে টাকার অংক ও সুবিধাভোগী শিক্ষার্থীর সংখ্যা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে অধ্যয়নরত বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বৃত্তিপ্রাপ্ত ৩৬০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ২০ কৃতি শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে চেক নেন এ অনুষ্ঠানে। প্রধানমন্ত্রী তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ধারণ করে এগিয়ে যেতে এবং স্বকীয়তা বজায় রাখতে বলেন।
দেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের সংখ্যা ৩০ লাখ ৮৭ হাজার, যা মোট জনসংখ্যার ১.০৪ শতাংশ। এর মধ্যে ১৫ লাখ ৮৭ হাজার পার্বত্য চট্টগ্রামে এবং ১৫ লাখ সমতলে বসবাস করছেন।
১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘বিশেষ এলাকার জন্য উন্নয়ন সহায়তা (পার্বত্য চট্টগ্রাম ব্যতীত)’ কর্মসূচি নেওয়া হয়, যার মূল লক্ষ্য সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সদস্যদের সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা।
২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পর অসংখ্য উন্নয়ন কর্মসূচির মতো এই কর্মসূচিও স্থবির হয়ে যায় মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, “২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর উন্নয়ন সহায়তা কর্মসূচিটি আবার চালু করে, যার আওতায় প্রতিবছর মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, গত অর্থবছর ১১৭ জন ছাত্র-ছাত্রীকে ২২ লাখ টাকা বৃত্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীভুক্ত ২৭টি জেলার গ্রাম পর্যায়ে ২৭টি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্র থেকে এ পর্যন্ত ১৪ হাজার ৫০০ শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণ নিয়েছে।
শিক্ষা খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই দেওয়ার কথা বলেন।
এ বছরের প্রথম দিনে মোট ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২টি বই বিতরণ করা হয়েছে এবং ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৯৩ কোটি বই বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এক হাজার কোটি টাকা ‘সিড মানি’ দিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড’ গঠনের কথাও অনুষ্ঠানে তুল ধরেন।
তিনি বলেন, “অনেক সময় দেখা যায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাবা-মা সহায়তা দিতে পারে না। অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবন শেষ হয়ে যায়। এই ফান্ডের ইন্টারেস্ট থেকে এরকম অসহায় শিক্ষার্থীদের আমরা সহায়তা দিচ্ছি।”
সরকারি কর্মকর্তাদের অবসরের বয়স ৫৯ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ করার বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন।
মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালক কবীর বিন আনোয়ার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।
ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসনের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র রাজু দেশোয়ারা বক্তব্য দেন।
ছবিঃ ফোকাস বাংলা নিউজ