অপরাধ করে পার পেয়ে যাওয়ার সংস্কৃতি থেকে বাংলাদেশ বের হয়ে এসেছেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

408

Published on ডিসেম্বর 17, 2015
  • Details Image

তিনি বলেন, জিয়া লাখো মুক্তিযোদ্ধার রক্ত ও মা-বোনদের সম্ভ্রমের সঙ্গে বেইমানী করে রাজাকারদের মন্ত্রীসভায় স্থান দেন। এরই ধারাবাহিকতাতেই বেগম জিয়া শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী নিজামী, মুজিাহিদদের গাড়িতে জাতীয় পতাকা তুলে দেন।

তিনি আরও বলেন, বেগম জিয়ার মন্ত্রী সভার সদস্য মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এখন দন্ডিত হয়েছে। তিনি এখন কি জবাব দেবেন? এর জন্য বাংলার মাটিতে তাকেও একদিন বিচারের সম্মুখীন হতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনষ্টিটিউশনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় একথা বলেন।

সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সুরঞ্জিত সেন গুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, আওয়ামী লীগ প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ, ডা. দীপুমনি, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, বীর বিক্রম অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, খুনী খুনিই। আর খুন করে কেউ পার পাবে না। খুনের বিচার এদেশের মাটিতে হবেই হবে। ২১ আগষ্টের গ্রেনেড হামলা, শাহ এম এ কিবরিয়া হত্যা মামলা, আহসানউল্লাহ মাষ্টার হত্যা মামলা, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলনের নামে সাধারণ মানুষ, বাসের হেলপার-কন্ট্রাক্টর, পুড়িয়ে হত্যা, যানবাহন তথা রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের হত্যা মামলার বিচার এদেশেই হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে দেশে বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় হয়েছে। জেল হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধীদের মামলা শুরু হয়েছে। এক একটি মামলার রায় হচ্ছে আর জাতি অভিশাপ মুক্ত হয়ে এক ধাপ করে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, মানুষ পোড়ানোর জন্য হুকুমদাতা, অর্থ সংস্থানকারী, পরিকল্পনাকারীদের প্রত্যেকের বিচার এই বাংলার মাটিতে হবে। মানুষের জীবন নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ে ’৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকারগুলোকে অবৈধ ঘোষণা করায় জিয়া বা এরশাদ আর কেউই পূর্ব রাষ্ট্রপতি হিসেবে নিজেদের দাবি করতে পারেন না। বাংলাদেশের মানুষকেও বিষয়টি স্মরণ রাখতে হবে। আদালতের রায়ের প্রতি সম্মান জানাতে হলে এসব সামরিক জান্তাদের আর সাবেক রাষ্ট্রপতি বলা যাবে না।

তিনি বলেন, সামরিক শাসক জিয়াউর রহমানই এদেশে হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতির সূচনা করেন। ’৭৫ পরবর্তী সময়ে তার জারি করা কার্ফ্যু ’৮৬ সালের নির্বাচনের আগ পর্যন্ত বহাল ছিল।

শেখ হাসিনা রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি’র সৃষ্টি এবং সামরিক শাসক জিয়ার ‘হাঁ’ ও ‘না’ ভোটের রাজনীতির সমালোচনা করে বলেন, দুঃখের বিষয় এখন তাদের কাছেই নীতি নৈতিকতা ও গণতন্ত্রের কথা শুনতে হয়।

শেখ হাসিনা বক্তৃতার শুরুতেই একাত্তরের ১৭ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ করে বলেন, ১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী রেসকোর্সের ময়দানে আত্মসমর্পন করায় জনগণের মধ্যে তখন বিজয় উল্লাস চলছিল। যে রেসকোর্সের ময়দানে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের মাধ্যমে স্বাধীনতা ঘোষণা করেন সেখানেই তাদের আত্মসমর্পন। কিন্তু আমরা জানতাম না কি আমাদের ভাগ্যে রয়েছে। ১৮ নম্বর বাড়িতে তখনও আমরা পাকবাহিনীর হাতে বন্দী অবস্থায় মৃত্যুর প্রহর গুণছি। এরপর মিত্রবাহিনী বাড়িটির দায়িত্ব বুঝে নিলে ১৭ ডিসেম্বর আমরা বন্দীদশা থেকে মুক্ত হই।

তিনি লাখো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা যেকোন মূল্যে রক্ষা করে ২০২১ সালের মধ্যেই মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে পরিণত হবার লক্ষ্য পূরণে সকলকে নিয়ে একযোগে এগিয়ে যাবারও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত