502
Published on নভেম্বর 18, 2015রাণী বলেন, নেদারল্যান্ড বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রয়াসে সহায়তা দেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত যাতে এ দেশ রূপকল্প ২০২১ অর্জন করতে পারে।
বুধবার দুপুরে এখানে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে ডাচ রাণী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককালে এই আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
বৈঠকের পর প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
জাতিসংঘ মহাসচিবের উন্নয়ন সংক্রান্ত অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন বিষয়ক উপদেষ্টা ডাচ রাণী বলেন, তিনি বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প ও আর্থিক কর্মকাণ্ড বিশেষ করে এটুআই প্রোগ্রামের ডিজিটাইজেশন প্রকল্প ও মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দেখে খুবই খুশী ও চমৎকৃত হয়েছেন।
তিনি এ তথ্য জেনে খুবই খুশী হয়েছেন যে, বর্তমানে বাংলাদেশের ২ কোটি ৯০ লাখ লোক মোবাইল ব্যাংকিং সেবা গ্রহণ করছে।
ডাচ রাণী আর্থ-সামাজিক খাতে এবং ডিজিটাইজেশন কর্মসূচিতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লাভের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে অনেক ভাল কাজ করেছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রকল্প পরিদর্শনকালে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রয়াসে বিশ্ব ব্যাংক ও ইউএনডিপি’র মতো বিভিন্ন উন্নয়ন অংশীদার সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। ডাচ রাণী বাংলাদেশে সুদৃঢ় অবকাঠামো গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
রাণী ম্যাক্সিমা উল্লেখ করেন, নেদারল্যান্ড ও বাংলাদেশ উভয়ই বদ্বীপ। এই দুটি দেশ কৃষি খাতের আরো উন্নয়নের লক্ষ্যে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারে।
বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটি বৃহৎ বদ্বীপ বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডের অনন্য ভৌগোলিক মিল রয়েছে।
শেখ হাসিনা সন্তোষের সঙ্গে উল্লেখ করেন যে, দুটি দেশ নদী ড্রেজিং,ভূমি পুনরুদ্ধার, অবকাঠামো নির্মান, উপকুলীয় অঞ্চলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা এবং অন্যান্য জলবায়ু অভিযোজন পদক্ষেপগুলোর মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান ২১০০ অনুযায়ী চলমান যৌথ কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সামাজিক ন্যায় ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জোরদার করার প্রয়াসে বর্তমান সরকার বিশেষ করে কৃষক, নারী, শিক্ষার্থী ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে।
বাংলাদেশে সেল ফোন (মোবাইল ফোন) ব্যবহারকারীদের সংখ্যা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সেল ফোন বেসরকারী খাতে উন্মুক্ত ও দেশে এ ফোনের সেট সহজলভ্য করার মাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের কাছে সেল ফোন পৌঁছে দিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাইজেশনেও তাঁর সরকারের সাফল্যের উল্লেখ করে বলেন, ৮ হাজার ডাকঘরকে ই- সেন্টারে রূপান্তরের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গ্রামীন জনগণের কল্যাণে বর্তমান সরকারের অন্যান্য উদ্যোগের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি খাতের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা জামানত ছাড়া ঋণ পাচ্ছেন এবং তারা এখন মাত্র ১০ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার সুযোগ পেয়েছেন। মাত্র ১০ টাকায় কৃষকরা প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ ব্যাংক হিসাব খুলেছেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, মুখ্য সচিব মো: আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত লিওনি কুইলেন্যারে অন্যান্যের মধ্যে এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নেদারল্যান্ডসের রানীকে ফুলের তোড়া উপহার দিয়ে গণভবনে স্বাগত জানান।
রানী ম্যাকিমা দারিদ্র্য হ্রাস, অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্জন ও নারীর ক্ষমতায়নে বৈশ্বিক প্রচেষ্টার সমর্থনে ৩ দিনের সফরে বাংলাদেশ আসেন।
ডাচ রানী উন্নয়নে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়নে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত হিসেবে বাংলাশে সরকারের আমন্ত্রণে এ সফর করছেন।