পথশিশুদের খাদ্য, শিক্ষা নিশ্চিত করতে মন্ত্রণালয়কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশ

428

Published on অক্টোবর 11, 2015
  • Details Image

তিনি বলেন, কোন শিশু রাস্তায় জীবনযাপন করবে না। আমরা ১৬ কোটি লোকের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। তাই, প্রায় ৩৪ লাখ পথ শিশুকে খাওয়ানোর সক্ষমতা সরকারের রয়েছে।

প্রতিটি শিশুকে তাদের এলাকার স্কুলে ভর্তি নিশ্চিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুরা যে এলাকায় বসবাস করে সেখানকার স্কুলগুলোতে ভর্তির সুযোগ পাওয়া তাদের অধিকার। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে তদারকি ও সমন্বয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।

রোববার এখানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমী মিলনায়তনে বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০১৫, উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, শিক্ষা যেন শিশুর জন্য বোঝা না হয় বরং স্কুলগুলোতে ও পরিবারে এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে তারা নিজেরা শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হবে এবং পড়াশোনায় উৎসাহ বোধ করবে।

শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীনভাবে বলেন, গৃহকর্মী নির্যাতন এবং কোন ঝুঁকিপূর্ণ কাজে শিশু নিয়োগ সরকার কোনভাবেই মেনে নিবে না। তিনি বলেন, সরকার কোন ধরনের শিশু নিপীড়ন বরদাস্ত করবে না।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ইউনিসেফ’র আবাসিক প্রতিনিধি এডোয়ার্ড বেইগবিডার।

বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর চেয়ারম্যান ও বিশিষ্ট সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, এমওডব্লিউসিএ সচিব ড. নাসিমা বেগম, বর্তমানে শিশু কল্যাণ প্রকল্পে আশ্রয় প্রাপ্ত সুবিধা বঞ্চিত দুই শিশু এম হাশেম ও সানজিদা আফরোজ স্মৃতি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।

‘শিশু গড়বে দেশ, যদি পায় পরিবেশ’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশে আজ এ দিবস পালিত হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা সরকারের দায়িত্ব। কারণ, তারা আগামীতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেশকে নেতৃত্ব দেবে। পাশাপাশি প্রত্যেক শিশুকে দেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে হবে।

তিনি বলেন, দেশের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস না জানলে, আগামী প্রজন্ম জীবন সংগ্রামে জয়ী হতে অনুপ্রাণিত হবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার শিশুদের কল্যাণ নিশ্চিত করতে অব্যাহত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টি দেশের সংবিধান, জাতিসংঘ শিশু অধিকার সনদ ও শিশু আইন-১৯৭৪-এ সন্নিবেশিত রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে ১৯৮৯ সালে শিশু অধিকার সনদ গৃহীত হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের জাতির পিতা ১৯৭৪ সালে শিশু অধিকার আইন প্রণয়ন করেছেন। ১৯৭৪ সালের শিশু নীতির আলোকে শিশু নীতি-২০১১ প্রণীত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার প্রত্যেক শিশুর খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি এবং মায়েদের পুষ্টির উপর বিশেষ নজর দিয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে শিশু ও মাতৃ মৃত্যু হার কমছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবজাত শিশুরা যাতে বেশি দিন মায়ের যত্ন পেতে পারে এলক্ষ্যে কর্মজীবী নারীদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ৬ মাস করা হয়েছে। তিনি সরকারি ও বেসরকারি উভয় সেক্টরের প্রত্যেক অফিসে ডে-কেয়ার সেন্টারের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

শিশুদের যথাযথ শারীরিক ও মানসিক বিকাশের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, সকল শিশুর খেলাধূলা ও বিনোদনমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের প্রয়োজন রয়েছে। এ লক্ষ্যে তিনি প্রত্যেক ফ্লাট ও আবাসিক এলাকায় খেলাধূলার জন্য পর্যাপ্ত খোলা জায়গা রাখার আহ্বান জানান।

প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসুস্থ শিশুদের চিকিৎসা ও কাউন্সিলিংয়ের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা তাঁর সরকারের রয়েছে।

শেখ হাসিনা চলতি বছরের (২০১৫) জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজনীতির নামে দেশের মানুষ এবং নির্দিষ্টভাবে শিশুদের উপর কিছু রাজনৈতিক দলের সন্ত্রাসের পুনরাবৃত্তি রোধে সজাগ থাকতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত