366
Published on অক্টোবর 7, 2015সম্প্রতি দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা এবং অন্যান্য ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদি জনগণ সজাগ থাকে এবং সরকারকে সহযোগিতা করে তাহলে ষড়যন্ত্র সফল হবে না।
ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের নবনির্মিত একাডেমিক ভবন উদ্বোধন এবং সশস্ত্র বাহিনীর শহীদ ও মৃত কর্মকর্তাদের পরিবারের মাঝে আবাসিক ফ্লাটের চাবি বিতরণ উপলক্ষে মিরপুর ক্যান্টনমেন্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি বুধবার এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর শহীদ কর্মকর্তা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনসহ বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত কর্মকর্তাদের পরিবারের মাঝে ফ্লাটগুলো হস্তান্তর করা হয়।
‘শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স’ নামে একাডেমিক ভবন আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ও সুসজ্জিত এবং দেশের ও বিদেশী কর্মকর্তাদের উচ্চতর প্রশিক্ষণ প্রদানের লক্ষ্যে এ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
মন্ত্রী পরিষদের সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিাদ্দিক, নৌবাহিনী প্রধান, বিমান বাহিনী প্রধান এবং সিনিয়র সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখনই জাতি কোন সাফল্যের জন্য আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে স্বীকৃতি অর্জন করে তখনই একটি স্বার্থান্বেষী মহল কিছু পরিকল্পিত ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম ঘটায়।
উন্নয়ন কার্যক্রম এগিয়ে নিতে দেশবাসীর সহযোগিতা চেয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার অব্যাহতভাবে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে, আমাদের প্রচেষ্টা ও কর্মঘণ্টার বিশাল অংশ এতে ব্যয় হচ্ছে।
‘যদি এ ধরনের হুমকির বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রয়োজন না হতো তাহলে দেশের আরো উন্নয়নে আমাদের প্রচেষ্টা ও শ্রম কাজ লাগাতে পারতাম।’
সশস্ত্র বাহিনীর উন্নয়নের জন্য তাঁর সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে তাঁর সরকার বাংলাদেশ আর্মির কর্মকর্তাদের আধুনিক প্রশিক্ষণ প্রদানে একাডেমী ও ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেন।
প্রতিরক্ষা বাহিনীর আবাসিক সমস্যা সমাধানে ২০১২-১৩ আর্থিক বছরে ৩৬৩ কোটি টাকায় ৯৭টি প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নতুন প্রকল্প ও ডিওএএইচএস’র সম্প্রসারণ। জলসিড়ি প্রকল্পের আওতায় ৬০৮০টি প্লট কর্মকর্তাদের মাঝে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
দেশ গঠনে সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর শ্রেষ্ঠ গুণ হচ্ছে যে তারা যেকোন দুর্যোগ ও দুর্ঘটনায় দ্রুত সাড়া দেয়, যা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রশংসা অর্জন করেছে।
জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশ থেকে নারী কন্টিনজেন্ট পাঠানোর অনুরোধের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সরকার বৈশ্বিক এ আকাঙ্খায় সম্মতি দিয়েছে। তিনি জাতিসংঘের এ চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে নারী কন্টিনজেন্ট গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আধুনিক সেনাবাহিনী গড়ে তোলা আমাদের লক্ষ্য একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর আন্তর্জাতিকমানের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। কারণ তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছে।
সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে সরকারী অনেক প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় তাঁর সরকারের সিদ্ধান্ত প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসব সংস্থা এখন ভালভাবে চলছে এবং তা লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তিনি বলেন, ঢাকা ভেজিটেবল অয়েল লিঃ কোম্পানি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনীর হাতে ন্যস্ত করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে পিলখানায় শাহাদাতবরণকারী সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের কল্যাণে সম্ভাব্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বজন হারানোর বেদনা আমি ভালভাবে বুঝি। পিলখানা হত্যাযজ্ঞে জড়িত অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় আনা হয়েছে এবং হত্যাযজ্ঞের শিকার পরিবারগুলোর পুনর্বাসনেরও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয় এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে তাঁর দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, অতিদরিদ্রের হার ৭.৯ শতাংশে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এগিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, সরকার উন্নয়নের ধারা বেগবান করতে আঞ্চলিক যোগাযোগ ও অর্থনৈতিক করিডোরের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে।