জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে অংশগ্রহণ বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমুর্তিকে উজ্জ্বল করেছেঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

496

Published on অক্টোবর 4, 2015
  • Details Image

জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে বাংলাদেশের অর্জন সম্পর্কে রোববার গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এবারের অধিবেশনে নতুন ও টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বা সাস্টেইন্যাবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) চূড়ান্তের ক্ষেত্রেও আমাদের অগ্রণী ভূমিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের মত ক্ষতির সম্মুখীন দেশগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয় আলোচনায় বিশেষভাবে উঠে এসেছে।

২৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস জঙ্গিবাদ দমনে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসেবে স্বীকৃতি অর্জন এবং শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় বিশেষ মর্যাদা লাভের কথা উল্লেখ করেন।

৩০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক থেকে লন্ডনে একদিন যাত্রাবিরতির পর গতকাল ৩ অক্টোবর দেশে ফিরে এবছর জাতিসংঘে অনন্য অর্জনের জন্য আওয়ামী লীগ ও ১৪ দল এবং শিল্পী, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষের বিপুল সংবর্ধনায় অভিষিক্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে ৭০তম অধিবেশনে তাঁর ভাষণের উল্লেখ করে বলেন, এবার তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসবাদ ও সহিংস চরমপন্থা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে বিশ্ব সংস্থাটির ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এস ডি জি বাস্তবায়নে বিশ্ব জুড়ে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম ও প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম অন্যান্যের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৭০তম অধিবেশন দু’টি কারণে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। প্রথমতঃ এ অধিবেশনে এমডিজি’র ধারাবাহিকতায় নতুন ও উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা এসডিজি চূড়ান্তভাবে অনুমোদিত হয়েছে এবং দ্বিতীয়তঃ এ বছরের শেষ দিকে প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন সম্মেলনে একটি কাক্সিক্ষত ও গঠনমূলক সমঝোতায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ জোরালো রাজনৈতিক বার্তা দিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে বাংলাদেশ যে উচ্চতায় আসীন হয়েছে, সেই অনুপ্রেরণা থেকেই সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা বাস্তবায়নের পথে আমরা দ্রুত এগিয়ে যাব। দেশের এই অগ্রযাত্রায় গণমাধ্যম সব সময়ই তাঁর সরকারের পাশে থাকবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষ্যে নিউ ইর্য়কে অবস্থানকালে সেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় ও ও যৌথ বৈঠক এবং মার্কিন কংগ্রেস প্রতিনিধি দল, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক ও কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচার প্রদানসহ সামগ্রিক বিষয় উল্লেখ করেন।

প্রধানমন্ত্রী ২৪ সেপ্টেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর দ্বিপাক্ষিক আলোচনার কথা উল্লেখ করে বলেন, বৈঠকে উভয় নেতাই স্থলসীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। এতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানি বন্টন চুক্তির ব্যাপারে তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগের কথা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জানান।

এ সময় শেখ হাসিনা দক্ষিণ এশিয়ার নেতৃবৃন্দের মধ্যে ঘন ঘন অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাতের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বিকেলে তিনি ঈদুল আজহা উপলক্ষে এক সংবর্ধনায় প্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।

এবার জাতিসংঘ অধিবেশনের মূল আয়োজন ২৫ ও ২৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। ২৫ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ১৮০টিও বেশি দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একযোগে এসডিজি-২০৩০ অনুমোদন করেন। উল্লেখ্য, এর আগেও তিনি ২০০০ সালে এমডিজি শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

একই দিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সংস্থা বিজনেস কাউন্সিল ফর ইন্টারন্যাশনাল আন্ডারস্টান্ডিং আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বলেন, বাংলাদেশ শিগগিরই ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ক্লাবে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশে একশ’টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি তাঁর দেশের তৈরি পোশাক, জাহাজ নির্মাণ ও তথ্যপ্রযুক্তির খাতের বিকাশ ও সম্ভাবনার বিষয় তুলে ধরে বিভিন্ন খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান।

সভায় আয়োজক সংস্থাটিসহ বোয়িং, সিটি গ্রুপ, মেটলাইফ, মাস্টার কার্ড ইন্টারন্যাশাল, স্কাই পাওয়ার গ্লোবাল, ট্রান্সফাস্ট, এ্যামেরিকান পাওয়ার করপোরেশন, এক্সেলেরেট এনার্জি, জেফার ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

স্কাই পাওয়ার গ্লোবাল বাংলাদেশে ২ হাজার মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৪ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করে।

ওই দিন বিকেলে শেখ হাসিনা কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘গার্লস লিড দ্য ওয়ে’ শীর্ষক এক প্রাণবন্ত লেকচারে বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নে রাজনৈতিক দর্শন ও উন্নয়ন ভাবনা তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রেসিডেন্ট, অনুষদ সদস্যবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তিনি তরুণ শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

২৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেলের সাথে ফস্টারিং সাসটেইনেবল ইকোনমিক গ্রোথ, ট্রান্সফরমেশন এন্ড প্রমোটিং সাসটেইনেবল কমজামসন এন্ড প্রোডাকশন শীর্ষক সেশনে যৌথ সভাপতিত্বে তাঁর সূচনা বক্তব্যে টেকসই লক্ষ্যমাত্রার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সম্পদ ও প্রযুক্তি চাহিদা পূরণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

একই দিন বিকেলে চীনের রাষ্ট্রপতি শি চিনপিং ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের যৌথ সভাপতিত্বে হাই লেভেল রাউন্ড টেবিল অন সাউথ-সাউথ কো-অপারেশনে শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে দক্ষিণের দেশগুলোর মধ্যে যোগাযোগ, উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন ও প্রযুক্তি বিনিময়ের ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করেন।

পরে তিনি মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের কো-চেয়ারম্যান জোসেফ ক্রাউলি, সদস্য ক্যারোলিন বি এ্যালোনি ও হাউজ ফরেন এ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য এলিয়েট এল আঙ্গেলের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অবিশ্বাস্য উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণ, ৬ শতাংশেরও বেশি হারে বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, জঙ্গীবাদ দমনে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অনন্য অবদান ও মিয়ানমার শরণার্থীদের প্রতি মানবিক সহায়তার প্রশংসা করেন।

মার্কিন কংগ্রেসের সদস্যবৃন্দ যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি সুবিধা পুনর্বহালের ব্যাপারে বাংলাদেশের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

পরে চীনের রাষ্ট্রপতি শি চিনপিং-এর সাথে এক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী চীনের বাজারে আরো অধিকসংখ্যক বাংলাদেশী পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশ অধিকার দিতে চীনের রাষ্ট্রপতিকে আহবান জানান।

একই দিন তিনি সন্ধ্যায় জাতিসংঘ সদর দফতরে ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়ন প্রদত্ত আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট এ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করেন। দেশের তরুণদের উদ্দেশ্যে এই পুরস্কার উৎসর্গ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই পুরস্কার হচ্ছে- ডিজিটাল বাংলাদেশ রূপায়নে সরকারের অব্যাহত সাফল্যের আরেকটি উল্লেখযোগ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি।

২৭ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে গ্লোবাল লিডার্স মিটিং অন জেন্ডার ইকুয়ালিটি এন্ড উইম্যান্স এ্যামপাওয়ারমেন্টে তাঁর ভাষণে নারীর ক্ষমতায়ন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকারের উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, তাঁর সরকার নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য ও সহিংসতা দূর, বাল্যবিবাহ নিরোধ এবং মাতৃস্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে যাবে।

একই দিন দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ইউএন সামিট ফর দ্য এডাপশন অব দ্য পোস্ট-২০১৫ ডেভেলপমেন্ট এজেন্ডার প্লেনারি সেশনে বলেন, বাংলাদেশ এমডিজি অর্জনের ক্ষেত্রে যে ধরনের অঙ্গীকার ও সাফল্য দেখিয়েছে ২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজি অর্জনেও একই ধরনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাবে।

তিনি বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য উন্নত বিশ্ব আন্তর্জাতিকভাবে যেসব প্রতিশ্রুতি দেয় তা বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার আহবান জানিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য আধুনিক উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার সহজ করতে হবে।

এ সেশনে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এ বিশ্বকে অতি দারিদ্র্য ও ক্ষুধার অভিশাপ থেকে মুক্ত করার যে সুযোগ দেখা দিয়েছে তা যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে।

ওইদিন বিকেলে তিনি বাংলাদেশ কমিউনিটি আয়োজিত আরেকটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় দেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কার্যকর ভূমিকা রাখার জন্য পলিসি লিডারশীপ ক্যাটাগরিতে এবার তাঁকে জাতিসংঘের পরিবেশবিষয়ক সর্বোচ্চ পুরস্কার চ্যাম্পিয়ন্স অব দ্য আর্থ প্রদান করা হয়েছে।

একই দিন সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ইউএনইপি’র নির্বাহী পরিচালক অ্যাচিম স্টেইনারের কাছ থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করে তা বাংলাদেশের মানুষের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, দেশের জনগণের পূর্ণ সহযোগিতা ছাড়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া মোকাবেলা করা সম্ভব নয়। অনুষ্ঠানে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্বের প্রথম সোলার নেশন হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনা মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত লিডার্স সামিট অন ইউএন পিস কিপিং-এ যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া ও রুয়ান্ডার রাষ্ট্রপতি এবং জাপান, নেদারল্যান্ডস, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, উরুগুয়ের প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে যৌথ সভাপতিত্বে তাঁর ভাষণে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে আরো অধিকসংখ্যক সৈন্য, পুলিশ ও সরঞ্জাম সরবরাহের ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিংকে একটি সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলা এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের বিষয়ে একটি জাতীয় কৌশলপত্র প্রণয়নেরও ঘোষণা দেন।

একই দিন তিনি জাপানের প্রধানমন্ত্রীর সাথে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী এমডিজি অর্জনে অভূতপূর্ব সাফল্যের জন্য শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানান এবং এসডিজি বাস্তবায়নে বাংলাদেশের সাথে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন।

ওই দিন বিকেলে নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট্টের সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়। এতে নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী তাঁর দেশ সফরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানান। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে এ সফর অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

২৯ সেপ্টেম্বর তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা আয়োজিত লিডার্স সামিট অন কাউন্টারিং ভায়োলেন্ট এক্সিট্রিমিজম-এ যোগ দেন।

একই দিন বাংলাদেশ আয়োজিত ‘এমডিজি টু এসডিজি : এ ওয়ে ফরওয়ার্ড’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা। এতে নেদারল্যান্ডের রাজা ভিলেম আলেকজান্ডার, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লফভেন ও বেনিনের প্রধানমন্ত্রী লিওনেল জিনসু যৌথ সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্যের মধ্যে জাতিসংঘ ৭০তম সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট মগেনস লাইক্কেটফটস ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির প্রশাসক হেলেন ক্লার্ক বক্তৃতা করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বাংলাদেশকে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শেখ হাসিনার সরকারের বলিষ্ঠ অঙ্গীকারকে সকল উন্নয়নশীল দেশের জন্য একটি অনন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।

একই দিন বিকেলে লেদারলেন্ডসের রানী মাক্সিমার সাথে এক সৌজন্য সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রী রানীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। নেদারলেন্ডসের রানী এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন।

৩০ সেপ্টেম্বর সাধারণ পরিষদের জেনারেল ডিবেটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য রাখেন। প্রতিবারের মতো এবারো তিনি বাংলায় বক্তৃতা করেন।

শেখ হাসিনা তাঁর বক্তব্যে জাতিসংঘের ৭০ বছরের পথপরিক্রমায় আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠায় বিশ্ব সংস্থাটির ভূমিকার কথা স্মরণ করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সন্ত্রাসবাদ, সহিংস চরমপন্থা ও জঙ্গীবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকলকে একযোগে কাজ করার আহবান জানান।

তিনি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে বিশ্ব জুড়ে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত