859
Published on সেপ্টেম্বর 18, 2015জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের আগামী অধিবেশনে ১৫ বছর মেয়াদী টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী যথার্থই বলেছেন, এমডিজিতে সাফল্যের উদ্যম এসডিজি অর্জনে কাজে লাগবে। এসডিজি বাস্তবায়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করবে বাংলাদেশ।
এটা উল্লেখ করা জরুরী যে, বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই এমডিজি অর্জনে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ। চরম দারিদ্র্য ও ক্ষুধা নির্মূলকরণ, সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়ন, শিশুমৃত্যু হার কমানো, মাতৃ স্বাস্থ্যের উন্নয়ন, এইচআইভি-এইডস ম্যালেরিয়া ও অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশ সাফল্যজনক অগগ্রগতি অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
ইতিবাচকভাবে বদলে যাওয়া বাংলাদেশের উন্নততর আত্মশক্তি প্রতিষ্ঠার জন্য এসডিজি হবে এক নতুন সুযোগ। বিদ্যমান বাস্তবতার আলোকে নিঃসন্দেহে এটি হবে এক বড় চ্যালেঞ্জ। টেকসই অর্থনীতি, টেকসই সমাজ ও টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করাই হবে এর মূল উদ্দেশ্য এবং ২০৩০ সালের মধ্যে লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে সরকারকে। সঙ্গত কারণেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রয়োজন পড়বে পর্যাপ্ত দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ সম্পদের যোগান বাড়ানোর প্রয়োজন পড়বে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, টেকসই উন্নয়নের জন্য স্বচ্ছতা, নজরদারি, নাগরিকদের অংশগ্রহণ ও বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে।
এসডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে দেশী ও বিদেশী বিনিয়োগ দুটিরই প্রবাহ জোরদার করার প্রয়োজন পড়বে। এটা অনস্বীকার্য যে, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং আমলাতান্ত্রিক জটিলতা বিদেশী বিনিয়োগকারীদের ভেতর অনাগ্রহ সৃষ্টি করে। চলতি বছরের প্রথম কয়েকটি মাস বিএনপির চরম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশের অর্থনীতিকে সাময়িকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। আশার কথা, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রয়েছে এবং রফতানি আয়েও তার প্রভাব পড়েছে। নতুন অর্থবছরের দ্বিতীয় মাসেই ঘুরে দাঁড়ায় রফতানি খাত। আয় বাড়ে ২৮ শতাংশ। এক মাসে এত বেশি হারে রফতানি বৃদ্ধির রেকর্ড নিকট অতীতে নেই।
১৯৯০ সালে জাতিসংঘ সম্মেলনের ভিত্তি ধরে ২০০০ সালে উন্নয়ন অধিকার, শান্তি ও নিরাপত্তা, লিঙ্গ সমতা, শিক্ষার বহুমাত্রিকতা, দারিদ্র্য হ্রাস এবং স্থায়ী মানবসম্পদ উন্নয়ন শক্তিশালী করার অঙ্গীকার ঘোষণার মাধ্যমে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার যাত্রা শুরু হয়। ২০০১ সালে বিশ্বের ১৯৩টি দেশ এমডিজিতে তাদের অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়। একইভাবে ২০১২ সালের জুনে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ আয়োজিত টেকসই উন্নয়ন সম্মেলনে এমডিজির ওপর ভিত্তি করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। ২০১৫ পরবর্তী বছরগুলো হবে এসডিজির বাস্তবায়নকাল। এসডিজির জন্য ১৭টি লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এর লক্ষ্যসমূহ অর্জন করতে হবে। আর সে লক্ষ্যেই এখন দেশগুলো কৌশল প্রণয়নের কাজ করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের অতীতের অভিজ্ঞতা কাজে লাগানোর সুযোগ রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা এমডিজি অর্জনে সাফল্যের ধারাবাহিকতা এসডিজি অর্জনেও বজায় থাকবে