514
Published on আগস্ট 5, 2015তিনি বলেন, জাতিকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরার জন্য বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী প্রয়োজন এবং শেখ কামাল ছিল এ ধরনের প্রতিভার অধিকারী।
তিনি আরো বলেন, শেখ কামাল ছিল নির্লোভ। সে সাধারণ জীবন-যাপন করতো। তার একমাত্র লক্ষ্য ছিলো যুবসমাজকে খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া এবং জাতির সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।
প্রধানমন্ত্রী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা শেখ কামালের ৬৬তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে গতকাল বিকেলে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আবাহনীর ক্লাব পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারমান সালমান এফ রহমান। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ক্লাবের পরিচালক কাজী নাবিল আহমেদ এমপি।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ক্লাবের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু ও হারুন-অর রশিদ, শেখ কামাল স্পোর্টস কমপ্লেক্সের চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন এবং আবাহনী সমর্থক গোষ্ঠীর সভাপতি মীর নিজামউদ্দিন আহমদ।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, কর্মকর্তা ও বিভিন্ন ক্লাবের খেলোয়াড় এবং আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী ক্লাব প্রাঙ্গণে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। তিনি আবাহনী লিমিটেড একাডেমির ভিত্তিপ্রস্তরের ফলক উন্মোচন করেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী ৬ জন ক্রীড়া ব্যক্তিত্বের হাতে ‘শেখ কামাল স্বর্ণপদক’ তুলে দেন। এরা হলেনÑ বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের স্কিপার মামুনুল ইসলাম, বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার শাকিব আল হাসান, জাতীয় হকি দলের গোলরক্ষক অসীম কুমার গোপ, আবাহনী ক্লাবের সাবেক সভাপতি শামসুল ইসলাম খান (মরণোত্তর), সংগঠক ড. কাজী আনিস আহমেদ এবং নাজমুল হাসান পাপন।
তিনি টেবিল টেনিস লীগে হ্যাটট্রিককারী আবাহনী টেবিল টেনিস দলের কাছে ক্রেস্টও হস্তান্তর করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শেখ কামাল তাঁর ২ বছরের ছোট হলেও খুবই মেধাবী এবং বুদ্ধিমান ছিল। রাজনীতি ও খেলাধুলার পাশাপাশি সে গান গাইতো ও সেতার বাজাতো।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একজন সদস্য হিসেবে মুক্তিযুদ্ধসহ সকল আন্দোলন-সংগ্রামে শেখ কামাল অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে।
শেখ কামাল কর্তৃক দেশের সবচেয়ে আধুনিক স্পোর্টস ক্লাব প্রতিষ্ঠার পটভূমি তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এ ক্লাব ছিল তার হৃদয়।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর ধানমন্ডি এলাকার যুবসমাজকে ক্রীড়া ও সংস্কৃতিমনস্ক করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ কামাল আবাহনী ক্রীড়া চক্র প্রতিষ্ঠা করে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাহনীর প্রতি শেখ কামালের অগাধ ভালোবাসার একটি দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ৩১ জুলাই জার্মানী যাওয়ার সময় আমি শেখ কামালকে জিজ্ঞেস করি তার কি প্রয়োজন। জবাবে সে আবাহনীর খেলোয়াড়দের জন্য এডিডাস বুট আনতে বলে।’ এসব কথা বলার সময় শেখ কামালের বড় বোন শেখ হাসিনার কন্ঠ বাকরুদ্ধ হয়ে আসে। তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ও শেখ কামাল শহীদ হওয়ার পর টিকে থাকার জন্য আবাহনী ক্লাবকে বহু ঝড় ও কঠিন সময়ের মোকাবেলা করতে হয়েছে। ১৯৭৫ সালের বর্বরোচিত ঘটনার পর এই ক্লাবকে কেউ-ই ছেড়ে যায়নি। তাদের ত্যাগ ও একনিষ্ঠতায় ক্লাব বেঁচে ছিলো।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা দুঃসময় ক্লাবের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এর কর্মকর্তা, খেলোয়াড় ও আবাহনী সমর্থক গোষ্ঠীকে ধন্যবাদ জানান।
ধানমন্ডি মাঠে শেখ কামাল স্পোর্টস কমপ্লেক্স পরিকল্পনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে এ এলাকার জনগণের জীবনে পরিবর্তন আসবে। তিনি বলেন, এ কমপ্লেক্স নির্মাণের ফলে জনগণের সুন্দর জীবন-যাপনের বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ কমপ্লেক্সে নারী ও শিশুদের জন্য সবধরনের খেলাধুলার সুযোগ থাকছে। এ ছাড়া শরীর চর্চারও চমৎকার ব্যবস্থা থাকছে।
তিনি বলেন, এটি একটি বিশাল পরিকল্পনা ও ব্যয়বহুল প্রকল্প হলেও যারা আবাহনীকে ভালোবাসেন তারা এগিয়ে আসলে এর নির্মাণে কোনো সমস্যা হবে না।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল যেভাবে বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের সূচনা করেছিলেন সেভাবে এটিও দেশে একটি আধুনিক কমপ্লেক্স হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।