452
Published on জুলাই 23, 2015প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ’র উদ্দেশ্যে বলেন, ‘গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সরকারের প্রতিটি কার্যক্রম জনকল্যাণে প্রণীত ও বাস্তবায়িত হয়। এজন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জনসম্পৃক্ততা বজায় রেখে দায়িত্ব ও জনপ্রত্যাশার মাঝে সমন্বয়ের মাধ্যমে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের সার্থকতার স্বাক্ষর রাখতে হবে।’
তিনি বৃহস্পতিবার তাঁর কার্যালয়ে এসএসএফ’র ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এ বাহিনীর সদস্যদের এক দরবারে ভাষণকালে একথা বলেন। এই এলিট ফোর্স রাষ্ট্র প্রধান, সরকার প্রধান ও সরকার ঘোষিত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি তাঁর কাজের প্রতিটি দিন, ঘণ্টা ও মুহূর্তকে দেশের উন্নয়ন, জনগণের কল্যাণ ও দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করার চেষ্টা করছেন। এজন্য তাঁর সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী প্রত্যেককে কাজের বাড়তি চাপ নেয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, ‘আমার সঙ্গে দায়িত্ব পালনকারী প্রত্যেকের বাড়তি চাপ ও পরিশ্রম তখনই সার্থক হবে যখন আমাদের প্রয়াসের ফলশ্রুতিতে একটি সমৃদ্ধ দেশ গড়ে উঠবে। দেশ অর্থনৈতিকভাবে উন্নত হওয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীও এর সুফল পাবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, সুযোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং এ বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের নিষ্ঠা, শ্রম ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ’র উত্তরোত্তর উন্নতি অব্যাহত থাকবে।
এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মোহাম্মাদ আমান হাসান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, তিন বাহিনীর প্রধানগণ, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), আইজিপি, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও এসএসএফ’র জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা এসএসএফ সদস্যদের আনুগত্য, পেশাদারিত্ব ও দক্ষতার প্রশংসা করে আশা প্রকাশ করেন যে, ভবিষ্যতেও এই বাহিনীর সদস্যরা নির্ভরতার সাথে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করবে।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকারও প্রশংসা করে বলেন, তারা জাতিসংঘে অন্যান্য দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে খুবই দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছে।
দেশের ও বিদেশে বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা বিবেচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, এই বাহিনীকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে আধুনিকায়ন, জ্ঞানসমৃদ্ধ ও দক্ষ বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। এ লক্ষ্যে বর্তমান সরকার সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকায়নে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
সরকার আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব এটা তাঁর সরকার প্রমাণ করেছে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার বিপরীতে সফল উত্তরণের মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে এখন দৃঢ় অর্থনৈতিক ভিত ও মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন খাতে বর্তমান সরকারের বাস্তবমুখী পরিকল্পনার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার দারিদ্র্য বিমোচনে শিক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। বিগত সাড়ে ৬ বছরে বাংলাদেশ দারিদ্র্য হ্রাসে অসামান্য দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছে।
তিনি বলেন, আগামী সাড়ে ৩ বছরে দারিদ্র্যের হার আরো কমিয়ে ১৪-১৫ ভাগে নামিয়ে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত ঘোষণা করা হবে এবং বাংলাদেশ আর নিম্ন আয়ের অন্তর্ভুক্ত থাকবে না।
আগামী ৩ বছরে আমাদের কমপক্ষে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হতে হবে একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ লক্ষ্যে তাঁর সরকার নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জনগণ দীর্ঘ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছে। এ ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করা এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এসএসএফ সদস্যদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলীর বিষয়গুলো গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে একটি চিত্রকর্ম উপহার দেয়া হয়।
দরবারের পর প্রধানমন্ত্রী এসএসএফ সদস্যদের সঙ্গে এসএসএফ অফিসার্স মেসে এক মধ্যাহ্ন ভোজে যোগ দেন।