বাগেরহাটে বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক

485

Published on মে 5, 2015
  • Details Image

মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী সভায় (একনেক) খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণ প্রকল্পসহ ১৯১০ কোটি টাকায় মোট ১০টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৮টি নতুন এবং ২টি সংশোধিত এবং এর মোট ব্যয়ের ১৭৯৬ কোটি টাকা সরকারি কোষাগার থেকে ও সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে ১১৪ কোটি টাকা।

সভা শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের ব্রিফকালে একথা বলেন।

তিনি বলেন, খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মিত হলে বৃহত্তর খুলনার ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, পর্যটন শিল্পের প্রসার এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় ত্রাণ সরবরাহ নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করবে। ২০১৮ সালের জুন নাগাদ এ নির্মাণ কাজ শেষ হবে। বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এর মোট ব্যয়ের ৫৪৪ কোটি টাকার মধ্যে সরকার দেবে ৪৯০ কোটি টাকা এবং অবশিষ্ট ৫৪ কোটি টাকা বেসামরিক বিমান চলাচল কতৃপক্ষের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে।

বিমান বন্দর নির্মাণের গুরুত্ব তুলে ধরে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, মংলা বন্দর, ইপিজেড, চিংড়ি শিল্প ও রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে ঘিরে এখন এ অঞ্চলে ব্যবসা বাণিজ্যের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে তা সম্প্রসারণের জন্য দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রয়োজন।

মুস্তফা কামাল বলেন, অনুমোদিত এ বিমানবন্দর থেকে খুলনা শহর ও মংলা সমুদ্রবন্দর উভয়েরই দুরত্ব মাত্র ২০কিলোমিটার। এটি নির্মিত হলে সুন্দরবন, ষাট গম্বুজ মসজিদ, খান জাহান আলীর মাজারকে কেন্দ্র করে পর্যটন শিল্পের প্রসারের পাশাপাশি উপকূলীয় অঞ্চলে দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা পরিচালনাও সহজতর হবে।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, এ প্রকল্পের জন্য ১৬৩ হেক্টর ভুমি অধিগ্রহণ, ৭,২০,১৭৩ ঘনমিটার ভুমি উন্নয়ন, ৭ হাজার মিটার রানওয়ে ও ৪ হাজার মিটার ট্যাক্সিওয়ে এবং ১৮,৫৬৪ বর্গমিটার আবাসিক ভবন নির্মাণ করা হবে।

সভায় গুলশান, বনানী ও বারিধারা এলাকার রাস্তা, নর্দমা এবং ফুটপাত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণের জন্য কন্সট্রাকসন এন্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব রোডস, ড্রেইনস এন্ড ফুটপাথস অব গুলশান, বনানী এন্ড বারিধারা ডিপ্লোমেটিক এরিয়াস প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

প্রকল্পটি সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, এসব এলাকায় আগে কখনো উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাস্তা, নর্দমা এবং ফুটপাত নির্মাণ ও পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এখানকার অধিকাংশ রাস্তা নর্দমা এবং ফুটপাত বেহাল দশায় রয়েছে। এ সঙ্গে রয়েছে জলাবদ্ধতা । এছাড়া এ তিন এলাকায় বিদেশী কূটনীতিকগণ বসবাস করেন।

তিনি বলেন, এ প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০কি.মি. নতুন রাস্তা নির্মাণ, ৫৬ কি.মি. ফুটপাতের উন্নয়ন, ২৫ কি.মি. পাইপ ড্রেন নির্মাণ ও ৫৫ কি.মি. খোলা ড্রেন নির্মাণ করা হবে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২শ’ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকার ১৪০ কোটি এবং বাকি ৬০ কোটি টাকা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে দেবে। ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে।

সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে আজকের একনেক সভায় মহিপাল ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং সোনাগাজী-ওলামাবাজার-চরদরবেশপুর-কোম্পানীগঞ্জ সড়কে ৬ষ্ঠ কিলোমিটারে ছোট ফেনী নদীর উপর ৪৭৮.১৭১ মিটার পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ নামে দু’টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

৬ লেন বিশিষ্ট এ ফ্লাইওভার ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ফেনীর মহিপালে নির্মাণ করা হবে। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নে ১৫৮ কোটি টাকায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে এর কাজ সম্পন্ন করবে।

পিসি গার্ডার সেতু নির্মাণ প্রকল্পটিও বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৩ কোটি টাকা। ২০১৮’র জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।

সভায় রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি এই তিন পার্বত্য জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়নে ৩৮০ কোটি টাকা ব্যয়ে পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। ২০১৯’র ডিসেম্বরের মধ্যে এর কাজ শেষ হবে ।

একনেক সভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এরমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পের মাধ্যমে ২৪২ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশের ৬১ জেলার ৩৫০ উপজেলার ৩ হাজার ইউনিয়নে ১৬,৫০০টি প্রদর্শনী পুকুরে উন্নত মৎস্যচাষ প্রযুক্তি প্রয়োগে মাছের উৎপাদন বাড়ানো হবে। এর মেয়াদকাল হচ্ছে ২০১৫’র মার্চ থেকে ২০২০’র জুন পর্যন্ত। অপর দু’টি প্রকল্প হচ্ছে টিকা উৎপাদন প্রযুক্তি আধুনিকায়ন ও গবেষণাগার সম্প্রসারণ (২য় সংশোধিত) এবং মহিষ উন্নয়ন (কম্পোনেন্ট এ + বি) (২য় সংশোধিত)।

সভায় ৬ জেলায় পাবলিক লাইব্রেরির উন্নয়ন এবং ১৫ জেলা শিল্পকলা একাডেমির নবায়ন, সংস্কার ও মেরামত প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়।

ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত