আফ্রো এশিয়ান সম্মেলনে অংশগ্রহণ সফলতা ও অগ্রযাত্রায় মাইলফলক সূচিত হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

416

Published on এপ্রিল 26, 2015
  • Details Image

তিনি বলেন,সম্মেলনে যোগদানের মধ্যদিয়ে দক্ষিণ-ক্ষক্ষিণ সহযোগিতার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি সুসংহত করা এবং জাতীয় ও আন্তজার্তিক পর্যায়ে সরকারের বহুমুখী সফলতা ও অগ্রযাত্রা তুলে ধরার ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক সূচিত হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী ২২ ও ২৩ এপ্রিল ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জার্কাতায় আফ্রো এশিয়ান দ্বিতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণের ওপর তার সরকারী বাসভবন গণভবনে আজ এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

সম্মেলনের সাইডলাইনে অনুষ্ঠিত দ্বিপাক্ষিক বৈঠকসমূহের মধ্যদিয়ে সংশ্লিস্ট দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে -উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ার সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছে। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ এবং পৃথিবীর বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ককে সামনের দিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওযার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন,সম্মেলনের প্রথম দিন আমি বক্তব্য প্রদান করি। ১৯৫৫ সালে বান্দুং সম্মলেনর মূল বিষয় ছিল দারিদ্র,বৈষম্য ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে উন্নয়নকামী দেশগুলোর সংগ্রাম। এই প্রেক্ষিতে আমি আমার বক্তব্যে এশিয়া ও আফ্রিকার দেশসমূহের রাজনৈতিক,অর্থনৈতিক ও সামাজিক সম্পর্ক উন্নয়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতা বৃদ্ধির উপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করি। তিনি বলেন,দারিদ্রমুক্ত,ন্যায়ভিত্তিক ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার আহবান জানাই। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরন,সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গীবাদ নির্মূল,গণতন্ত্র ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপদ অভিভাবাসনের উপর জোর দিই।

সম্মেলনে নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রনী ভূমিকা,শিক্ষা ও তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়ন এবং দারিদ্র বিমোচনে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ তৃুলে ধরার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন,সম্মেলনে আমি বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সাথে বৈঠক করি। ইন্দোনেশিয়া,চীন,ইরান,মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতিগণ,জাপান, সিঙ্গাপুর, প্যালেস্টাইন ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী এবং কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রীর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে স্বার্থ-সংশ্রিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন,জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ দেশ বাংলাদেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির আহবান জানাই। নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু তহবিল গঠনের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুপ প্রতিক্রিয়া মোকাবেলায় আমাদের উদ্যোগের বিষয়টি তুলে ধরেছি। ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর স্বার্ধ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ বিশেষভাবে সস্মেলনে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্যে দুই মহাদেশের নেতৃবৃন্দকে একযোগে কাজ করার জন্য আহবান জানাই।

তিনি বলেন,সম্মেলনে উন্নয়ন ও অগ্রগতির লক্ষ্যে এশিয়া ও আফ্রিকার অংশীদারিত্ব বাস্তবায়নে একটি আউটকাম ডকুমেন্ট গৃহীত হয়। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইদোদোর সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বানিজ্য ও বিনোয়োগ,পর্যটন.কৃষি,বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিনিময়,জ্বালানি ও খনিজসম্পদ,সমুদ্র সম্পদ আহরণ বিষয়ে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিস্ট বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুদেশের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা পরারষ্ট্র

মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত আলোচনা অনুষ্ঠানের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার বিষয়ে একমত হই। দুদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী পর্যায়ে যৌথ কমিশনের পরবর্তী বৈঠক এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অনুষ্ঠানের বিষয়ে আলোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন,চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং’এর সাথে আলোচনায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধান্য পায়। চীনের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশের বিভিন্নখাতে বিনিয়োগের আহবান জানাই। তিনি আমাদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সাথে আলোচনায় আমি বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ড বৃদ্ধির আহবান জানিয়েছি। জাপান সরকারের সহায়তায় মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের আলোচনা হয় এবং দুদেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ককে আরও গতিশীল করার বিষয়ে জোর দিয়েছি।

তিনি বলেন,মিয়ানমারের রাষ্ট্রপতি থিন সেইন’এর সাথে আলোচনায় বাংলাদেশ,চীন ও ভারত,মিয়ানমারের আওতায় প্রস্তাবিত আন্ত:সংযোগ স্থাপনের বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পায়। অবৈধ অস্ত্র ও মাদক পাচারসহ অন্যান্য আন্তঃরাষ্ট্রীয় অপারাধ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহবান জানিয়েছি। বাংলাদেশে বসবাসরত মিয়ানমারের শরনার্থী ও অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগিরকদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে অনুরোধ জানিয়েছি।

ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত