পাঁচটি দেশের নেতৃবৃন্দের সাথে দ্বিপাক্ষীয় বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক

370

Published on এপ্রিল 22, 2015
  • Details Image

শেখ হাসিনা দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার মাধ্যমে দুই মহাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা ও অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার কৌশল নিয়ে আলোচনা, অংশীদারিত্ব জোরদার এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের লক্ষ্যে আফ্রো-এশীয় শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে গতকাল জাকার্তা পৌঁছেন।

শেখ হাসিনা আজ জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে, মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থেইন সেইন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লী হেইসেন লুং এবং কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমেদ বিন আব্দুল্লাহ আল-মাহমুদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এ কে এম শামীম চৌধুরী সাংবাদিকদের এ ব্যাপারে অবহিত করেন।

তিনি বলেন, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য পদে জাপানের প্রার্থিতাকে সমর্থন দেয়ার জন্য সে দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

শিনজো অ্যাবে বাংলাদেশের বিনিয়োগ পরিবেশের প্রশংসা করে এ দেশে জাপানী বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার ব্যাপারে শেখ হাসিনাকে আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কঠোর পরিশ্রমী। তারা দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছে। তাই আশা করি, জাপানের বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ একটি আদর্শ স্থান হবে।

শিনজো অ্যাবে বলেন, গত বছর দু’দেশের প্রধানমন্ত্রীর পরস্পরের দেশ সফরের পর ঢাকা ও টোকিওর মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে এবং বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, জাপান হচ্ছে বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু এবং বৃহত্তম উন্নয়ন অংশীদার। তিনি পুনরায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় শিনজো অ্যাবেকে অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যকার সম্পর্ক দ্বিপক্ষীয় ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয়ে ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আগামিতে এ সম্পর্ক আরো জোরদার হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

জাপানের প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে মহেশখালীতে জ্বালানী ও শিল্প কেন্দ্র প্রতিষ্ঠাসহ জাপানী বিনিয়োগে বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন কাজের অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সরকার প্রকল্প বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে এবং ভূমি বরাদ্দসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু করছে।

জাপানী বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে স্বাগত জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো স্থানান্তর করার জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক জোন করার অনুমতি দিয়েছে।

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উ থেইন সেইনের সঙ্গে বৈঠককালে উভয় নেতা অঞ্চলের যোগযোগ ইস্যু নিয়ে আলোচনা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার (বিসিআইএম) করিডোর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বিসিআইএম করিডোর নেপাল ও ভুটান সহ কুনমিং, কক্সবাজার, ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সবসময় সকল প্রতিবেশীর সঙ্গে সুসম্পর্কের বিষয়টিকে মূল্য দেয় এবং একসঙ্গে সমৃদ্ধি লাভ করতে চায়।

মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট দুটি দেশের মধ্যেকার সম্পর্ক আরো জোরদার করার লক্ষ্যে দুটি দেশের কর্মকর্তাদের উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তারা সীমান্ত ইস্যু ও সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর মধ্যে সহযোগিতার বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট বিদ্যমান ইস্যুগুলোর সমাধানের লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে সরকারের এবং সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সামরিক বাহিনীর নিয়মিত সংলাপ অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ অস্ত্র বাণিজ্য ও মাদক দুটি দেশের মধ্যেকার সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি বাধা হয়ে বিরাজ করছে। এই প্রেক্ষাপটে, দুটি দেশের মধ্যে বৈধ বাণিজ্য জোরদার করতে হবে।

এর আগে, পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের বিরতির সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং, সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লী হেইসেন লুং এবং কাতারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আহমাদ বিন আবদুল্লাহ আল মাহমুদের সঙ্গে জাকার্তা কনভেনশন সেন্টারে সাক্ষাত করেন।

পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনা প্রেসিডেন্ট শি পিংকে চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য বাংলাদেশে বাস্তবায়নাধীন অর্থনৈতিক জোনের বিষয়টি অবহিত করেন।

তিনি আরো জানান, তারা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়, বিনিয়োগ এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেছেন।

শেখ হাসিনা দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৪০ তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে চীনের প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর আশা প্রকাশ করেছেন।

ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত