372
Published on এপ্রিল 14, 2015তিনি বলেন, ‘বিএনপি মানুষ পুড়িয়ে মারার কালচার শুরু করেছে- এটা খুবই দুঃখজনক। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- নূন্যতম মানবিক বোধ সম্পন্ন একজন মানুষ কিভাবে এমন নিষ্ঠুর কাজ করতে পারেন?’
প্রধানমন্ত্রী মঙ্গলবার সকালে এখানে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও দলের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পরে এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, এইচ টি ইমাম, ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, ড. মশিউর রহমান, অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরী, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ ও ড. হোসেন মনসুর, প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহারা খাতুন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, ক্যাপ্টেন (অব.) এবি তাজুল ইসলাম, ড. হাসান মাহমুদ, খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম ও মুকুল বোস অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ফুলের তোড়া দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানান।
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, গত তিন মাসে দেশের মানুষের উপর দিয়ে অনেক ঝড়-ঝঞ্জা বয়ে গেছে এবং চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি থেকে ৯২ দিন জনগণ ‘জুলুম’ নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই সময়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা সহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে, যা কারো কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত চক্র ট্রাক, বাস এবং ট্রেনে আগুন দিয়ে ধ্বংসাত্মক কাজ করে সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করেছে। তিনি বলেন, ‘তারা শুধুমাত্র পাবলিক গাড়ি পুড়িয়েছে তা নয়, তারা নিম্ন ও মধ্য এবং সাধারণ মানুষকেও পুড়িয়ে মেরেছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের কল্যাণ এবং তাদের স্বার্থ রক্ষার্থে তাঁর দল কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, কিন্তু আন্দোলনের নামে জীবিত মানুষ পুড়িয়ে মারার মত দুঃখজনক ঘটনা আমরা অতীতে কখনো দেখিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি ভাল দিক হচ্ছে, সাধারণ জনগণ এ ধরনের নৃশংস কর্মকাণ্ড প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ করেছে। স্থানীয় জনগণ এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঐক্যবদ্ধভাবে বিএনপি-জামায়াতের কর্মকাণ্ড প্রতিরোধ করেছে। ফলে আমরা পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি।
প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না এবং নতুন বছর জনগণের জন্য শান্তি বয়ে আনবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই যে, এদেশের জনগণ আর আগুনে পুড়ে মরবে না। তারা শান্তিতে ও নিরাপত্তায় বসবাস করবে এবং দেশ আর্থ-সামাজিকভাবে এগিয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনে শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি নিশ্চিত করে একটি ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে, স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে তোলা এবং এর সুফল সাধারণ জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া। আমরা এই লক্ষ্য অর্জনে কাজ করে যাচ্ছি।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই যাত্রা শুভ হবে। জনগণের আশা ও প্রত্যাশা পূরণ হবে এবং তাদের জীবনে আরো বেশি উন্নতি হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি আনন্দের বিষয় জনগণ ধর্ম, বর্ণ ও গোষ্ঠী নির্বিশেষে উৎসবমুখর পরিবেশে পহেলা বৈশাখ উদযাপন করছে। শুধু ঢাকা নয়, সারাদেশে এখন উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে। জনগণের মনে এই চেতনা এখন জাগ্রত হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পাবার পর তাঁর সরকার সারাদেশে সকল জেলা ও উপজেলায় সরকারি উদ্যোগে পহেলা বৈশাখ পালনের পদক্ষেপ নেয়।
শেখ হাসিনা ১৪০০ সালে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের উল্লেখ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ১৪০০ সালে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য প্রয়াত কবি বেগম সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে। অথচ বিএনপি সরকার সে সময়ে পহেলা বৈশাখ পালনে বাধা দেয়। বাধা উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সেদিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষ উদযাপন করে।
ছবিঃ সাইফুল ইসলাম কল্লোল