617
Published on জানুয়ারি 26, 2015মন্ত্রিসভা আজ বৃহত্তর ফরিদপুরের জেলাগুলো নিয়ে একটি এবং বৃহত্তর কুমিল্লা ও নোয়াখালী জেলার সমন্বয়ে অপর একটি বিভাগ গঠনের সম্ভাব্যতা ও উপযোগিতা যাচাইয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে। একই সাথে বৃহত্তর ময়মনসিংহে একটি প্রশাসনিক বিভাগ গঠনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ারও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
আজ বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত সাপ্তাহিক বৈঠকে এ নির্দেশ দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভূইয়া সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বলেন, প্রশাসনিক সংস্কার সম্পর্কিত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির (নিকার) চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আরো মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সুপারিশের জন্য এখন একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করবে।
তিনি বলেন, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পর এখন নতুন বিভাগ, জেলা ও থানা গঠনের তেমন কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু প্রশাসন বিকেন্দ্রীকরণ, জনগণের ক্ষমতায়ন ও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে নতুন বিভাগ গঠনের প্রয়োজনীয়তা দেখছে সরকার।
বৈঠকে মন্ত্রিসভাকে ২০০১-২০০২ থেকে ২০০৫-২০০৬ সালের সঙ্গে ২০০৯-২০১৪ সময়কালের তুলনামূলক আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা অবহিত করা হয়।
অর্থ বিভাগ পেশকৃত এ পর্যালোচনায় বলা হয়, ক্রমবর্ধমান প্রবৃদ্ধির ধারায় বিগত ৫ বছর সামষ্টিক অর্থনীতি ছিল স্থিতিশীল। প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক সূচকে অগ্রগতি হয়েছে।
এতে বলা হয়, বিএনপি-জামায়াত আমলের ৫ দশমিক ৬ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির তুলনায় বিগত ৫ বছরে গড় জিডিপি প্রবদ্ধি ৬ দশমিক ১৪ শতাংশে ও সরকারি বিনিয়োগ ৭ দশমিক ৩ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। এছাড়া বিএনপি-জামায়াত জোটের ৫ বছরের চেয়ে বিগত ৫ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন তিনগুণ ও মাথাপিছু আয় দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। রাজস্ব জিডিপির হার তুলনামূলকভাবে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বদ্ধি পেয়ে ১০ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে।
বিগত ৫ বছরে এডিপি বেড়েছে ৩ গুণ। এ জন্য আমদানি, রফতানি ও রেমিটেন্স তথা সার্বিক বাজেটের পরিমাণ ৪ গুণে উন্নীত হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৬ গুণ বৃদ্ধি এবং শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশনসহ সামাজিক খাতেও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বিগত ৫ বছরে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২৬ দশমিক ২ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ২৪ দশমিক ২ শতাংশ থেকে ১১ দশমিক ৯ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ১১ শতাংশে নেমে এসেছে। পাশাপাশি শিশু মৃত্যু ও মাতৃমৃত্যুর হার কমছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি হারও হ্রাস পাচ্ছে।
মন্ত্রিসভা আর্থ-সামাজিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক খাতের এ উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে উচ্চ প্রবৃদ্ধি অর্জন, অধিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট, উৎপাদনশীলতা, দক্ষতা এবং এডিপি বাস্তবায়ন সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে। এ জন্য এনবিআর-এর সক্ষমতা ও নন-ট্যাক্স-রেভিনিউ বৃদ্ধির মাধ্যমে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর তাগিদ দেয়া হয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়ন প্রকল্পের এডিপি বাস্তবায়ন দ্রুত সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রিসভাকে বলিভিয়ায় ২০১৪ সালের ২৮ ও ২৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রাকৃতিক সম্পদ ও শিল্পায়নের ব্যবস্থাপনা শীর্ষক জি-৭৭ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে শিল্পমন্ত্রীর যোগদানের বিষয় অবহিত করা হয়।
মন্ত্রিবর্গ, প্রতিমন্ত্রীবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট সচিবগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।