দ্রুত বাস্তবায়ন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হল মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প ও পায়রা বন্দর প্রকল্প

801

Published on জানুয়ারি 7, 2015
  • Details Image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ফাস্ট ট্রাক মনিটরিং কমিটির তৃতীয় বৈঠকে আরো দুটি নতুন মেগা প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

প্রকল্প দুটি হলো মাতারবাড়ি আল্ট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোলফায়ার্ড পাওয়ার প্রজেক্ট এবং পায়রা বন্দর প্রকল্প।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি এ কে এম শামীম চৌধুরী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে ইতোপূর্বে নেয়া ৬টি প্রকল্পের অগ্রগতি এবং মাতারবাড়ি পাওয়ার প্রজেক্ট নিয়ে আলোচনা করা হয়।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী স্ব-স্ব দায়িত্ব যথাযথ পালনের মাধ্যমে নির্ধারিত সময়ে প্রকল্প কাজ সম্পন্ন করতে সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন।

বৈঠকে জানানো হয়, বহুল আলোচিত পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ ২০১৮ সালের ৭ ডিসেম্বর সম্পন্ন হবে।

বৈঠকে আরো জানানো হয়, জাজিরা ও মাওয়া সাইডে পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়কের নির্মাণ কাজ, সার্ভিস এরিয়া-২, রিভার ট্রেনিং ওয়ার্ক, রিভার ব্যাংক প্রটেকশন ওয়ার্ক, ভ’মি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে প্লট হস্তান্তর কাজ চলছে। পাশাপাশি দুটি পয়েন্টে মূল সেতুর জিওটেকনিকেল ইনভেস্টিগেশন কাজ শুরু হয়েছে।

বৈঠকে আরো জানানো হয়, জাজিরা সাইডে সংযোগ সড়কের ৩০ শতাংশ কাজ, মাওয়া সাইডে সংযোগ সড়কের ২০ শতাংশ কাজ, সার্ভিস এরিয়া-২ এর ১৫ শতাংশ কাজ, মূল সেতুর ১.৫ শতাংশ কাজ, ভ’মি অধিগ্রহণের ৯৯ শতাংশ কাজ এবং পুনর্বাসন কর্মসূচির ৬৫ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পাশাপাশি মূল সেতুর তদারকি কাজ এবং রিভার ট্রেনিং কাজ চলছে।

বৈঠকে রূপপুর পারমাণবিক পাওয়ার প্লান্টের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়, বাংলাদেশ এটোমিক এনার্জি কমিশন এবং রুশ ফেডারেশনের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রথম চুক্তির অধিনে পাঁচটির মধ্যে তিনটি প্রোগ্রাম অর্জন হয়েছে। দ্বিতীয় চুক্তির অধিন ৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। তৃতীয় চুক্তির অধিনের কাজ শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশনের নিয়োগকৃত কনসালটিং ফার্মের মাধ্যমে একটি কোম্পানি গঠনের পৃথক আইনের খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। এটি শিগগির মন্ত্রিসভায় পেশ করা হবে।

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সেক্রেটারি আরো বলেন, বাংলাদেশ আণবিক শক্তি কমিশন এবং রুশ ফেডারেশনের মধ্যে চতুর্থ চুক্তি শিগগির স্বাক্ষর হবে।

পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু,পরিকল্পনা মন্ত্রী এএইচএম মোস্তফা কামাল,সেতু ও পরিবহন বিয়ষক মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের,নৌপরিরবহন মন্ত্রী শাজাহান খান, ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমার ডিলু,প্রধানমন্ত্রীর খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী,বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নজরুল হামিদ বিপু ও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা মাস র্যা্পিড ট্রানজিট প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনাকালে বৈঠকে জানানো হয়, এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণে প্রয়োজনীয় ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এ কাজের জন্য ২০১৪ সালের ১১ জুন থেকে জিও-টেকনিক্যাল জরিপ শুরু হয়েছে। গতমাসে মূল নকশার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বিস্তারিত নকশার কাজ চলতি বছরের জুলাইয়ে শেষ হবে।

কক্সবাজারের সোনাদিয়া দ্বীপে গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রসঙ্গে বৈঠকে অবহিত করা হয় যে, সমুদ্রবন্দর নির্মাণে জাপানের প্যাসিফিক কনসালট্যান্টস ইন্টারন্যাশনাল টেকনো-ইকোনমিক সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে।

প্রাথমিকভাবে পিপিপি ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি ভাবা হচ্ছে, এ ক্ষেত্রে কোন বিনিয়োগকারী আগ্রহী না হলে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট ভিত্তিতে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।

এ পর্যন্ত তিনটি দেশ তাদের প্রস্তাবনা উপস্থাপন করেছে এবং আরো একটি দেশ প্রস্তাবনা উপস্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য অচিরেই মুখ্য সচিবের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হচ্ছে পাশাপাশি সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর বিষয়ে একটি খসড়া আইন প্রণয়ন করা হবে।

রামপালে মৈত্রী সুপার থার্মাল পাওয়ার প্রকল্প সম্পর্কে বৈঠকে জানানো হয়, যে প্রকল্প এলাকায় মাটি ভরাট বাউন্ডারি প্রাচীর নির্মাণ কাজ চলছে এবং মূল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের বেষ্টনীর কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

জিও-টেকনিক্যাল জরিপের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আর্থিক উপদেষ্টা, এইচআর কনসালট্যান্ট ও বিদ্যুৎ লাইনের জন্য টেন্ডার ডকুমেন্ট তৈরির কাজ চলছে। পশুর নদীর খননের জন্য ডিপিপি নৌ-মন্ত্রণালয়ে দাখিল করা হয়েছে।

৪৬০ কোটি মার্কিন ডলারে কক্সবাজারের মহেশখালীতে মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে বৈঠকে বলা হয়, এই প্রকল্পে কয়লাভিত্তিক ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় চ্যানেল ও জেটি, লিংক রোড, গ্রামীণ বিদ্যুতায়ন ও উপশহর উন্নয়ন এবং দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা হবে।

প্রকল্পের জন্য ১৫শ’ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পের জন্য কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হচ্ছে।

পর্যায়ক্রমে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষমতা ১০ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হবে উল্লেখ করে প্রেস সচিব বলেন, দোহাজারি কক্সবাজার-গুনধুম রেল লাইন মাতারবাড়ি থেকে পেকুয়া পয়েন্ট পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে।

TAGS:

Live TV

আপনার জন্য প্রস্তাবিত