669
Published on ডিসেম্বর 20, 2014শেখ হাসিনা বলেন, বিজিবি’র ২১৯ বছরের একটি উজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এই ঐতিহ্য ধংস করতে চেয়েছিল। পিলখানা দুর্ঘটনার পর গৃহীত সংস্কার পদক্ষেপে এই বাহিনী এখন একটি আধুনিক ও সময়োপযোগী আধা সামরিক বাহিনী হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী গতকাল সকালে ঢাকায় পিলখানায় বিজিবি সদর দফতরে বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে আয়োজিত ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০১৪ ’ পালন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে এই বাহিনীর সাহসী এবং গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে তারা দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
তিনি বলেন, সরকার ষড়যন্ত্রকারীদের ফন্দি খুব কৌশল সতর্কতার সাথে মোকাবেলা করেছে। সরকারের এই উদ্যোগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশংসতি হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সকলের সহযোগিতায় খুব অল্প সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি সামাল দেয়া এবং বাহিনী পুনর্গঠন করা সম্ভব হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীর সামগ্রিক সংস্কারসহ বিভিন্ন কার্যকর সংস্কার পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ আইন-২০১০ প্রণয়ন এবং এই বাহিনীকে আরো কার্যকর করতে নতুন সাংগঠনিক কাঠামোর অধিনে চারটি নতুন সেক্টর ও চারটি রিজিওনাল হেড কোয়াটার গঠনের মাধ্যমে বাহিনীর কমান্ডকে বিকেন্দ্রীয়করণ করা হয়েছে।
শেখ হাসিনা বিজিবি সদস্যরা বাহিনীর ভাবমূর্তি ও মর্যাদা সমুন্নত রাখতে দেশপ্রেম ও সততার সাথে তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বিজিবি সদস্যরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করে যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন এই বাহিনীর সদস্যরা দেশের সীমান্ত নিরাপত্তা এবং চোরাচালানী বন্ধে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে বিজিবি’র ইউনিফর্মড ফোর্সের সদস্যদের প্যারেড অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জীপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন।
বিজিবি’র উপ-মহাপরিচালক এবং প্যারেড কমান্ডার আখতার হামিদ খান প্যারেড পরিচালনা করেন।
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে দশজন বিজিবি সদস্যকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-২০১৪, ২০ জন সদস্যকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক-২০১৪ এবং ১০ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড (সেবা) পদক-২০১৪ ও ২০ জন সদস্যকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (সেবা) পদক-২০১৪ তাদের গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্য প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী প্যারেড মাঠে এসে পৌঁছুলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বিজিবি মহা-পরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ তাকে স্বাগত জানান।
প্রধানমন্ত্রী বিজিবি’র গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসের উল্লেখ করে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনে দেশপ্রেম, সততা ও বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতার ঘোষণা পিলখানা থেকে সারাদেশে পাঠানোর কথা উল্লেখ করে বলেন,
ইপিআর ওয়ারলেস অপারেটর এই বার্তা পাঠানোর পর বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা প্রচার করার দায়ে দখলদার বাহিনী মেজর শওকত আলীকে হত্যা করে।
শেখ হাসিনা বীর শ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক নুর মোহম্মদ এবং বীর শ্রেষ্ঠ ল্যান্স নায়েক মুন্সি আব্দুর রউফকে বীরদের প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আটজন বীর উত্তম, ৩২ জন বীর বিক্রম এবং ৭৭ জন বীর প্রতীক তাদের গৌরবোজ্জ্বল অর্জনের মাধ্যমে জাতির ইতিহাসকে উজ্জ্বল করেছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের সীমান্ত রক্ষায় ভূমিকা রাখায় বিজিবি সদস্যদের প্রশংসা করে বলেন, এই বাহিনী খুবই দক্ষতার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করছে এবং যে কোন সংকটে অথবা জরুরি পরিস্থিতিতে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। এ প্রসঙ্গ তিনি গত বছরে জনগণের যানমালের নিরাপত্তায় এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিজিবি সদস্যদের সাহসিক ভূমিকার উল্লেখ করেন।
তিনি আরো বলেন, বিজিবি সদস্য ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ভন্ডুল করতে বিএনপি-জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড প্রতিরোধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
প্রধানমন্ত্রী ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ও পরে বিএনপি-জামায়াত শিবির কর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, দোকানপাট ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান পুনর্নিমাণে বিজিবি’র প্রশংসা করেন।
তিনি পিলখানায় বিদ্রোহের নামে কতিপয় বিডিআরের উচ্ছৃংখল সদস্যের বর্বরোচিত হামলায় নিহত ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ পিলখানা বিদ্রোহের ৭৪ জন শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, সরকার অভিযুক্তদেরকে বিচারের আওতায় এনে তাদের বিচার করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকার সীমান্তে বিজিবি টহল জোরদারে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে প্রস্তাবিত ৯৩৫ কিলোমিটার সড়ক এবং বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে ২৮৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
প্রধানমন্ত্রী এই বাহিনী এবং বাহিনীর সদস্যদের পরিবারের সদস্যদের উন্নয়ন ও কল্যাণে তাঁর সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে বিজিবি’র ইউনিফর্মড ফোর্সের সদস্যদের প্যারেড অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জীপে করে প্যারেড পরিদর্শন করেন।
বিজিবি’র উপ-মহাপরিচালক এবং প্যারেড কমান্ডার আখতার হামিদ খান প্যারেড পরিচালনা করেন।
শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে দশজন বিজিবি সদস্যকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড পদক-২০১৪, ২০ জন সদস্যকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ পদক-২০১৪ এবং ১০ জনকে রাষ্ট্রপতি বর্ডার গার্ড (সেবা) পদক-২০১৪ ও ২০ জন সদস্যকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (সেবা) পদক-২০১৪ তাদের গৌরবোজ্জ্বল অবদানের জন্য প্রদান করেন।
প্রধানমন্ত্রী প্যারেড মাঠে এসে পৌঁছুলে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বিজিবি মহা-পরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ তাকে স্বাগত জানান।