442
Published on নভেম্বর 16, 2014তিনি আজ সংসদে কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি এসোসিয়েশন (সিপিএ) এবং ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ)তে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরী সভাপতি নির্বাচিত হওয়ায় সংসদে আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে একথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে সকল ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত ও ভয়াবহ পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে দেশের জনগণ ভোট দিয়েছে। ওই নির্বাচনে ৪০ শতাংশ ভোট পড়েছে, এ জন্য তিনি দেশের জনগণ এবং যারা নির্বাচন পরিচালনা করেছে তাদের ধন্যবাদ জানান। ওই নির্বাচনে আমরা জয়লাভ করতে পেরেছি। দেশের মানুষের সমর্থন আমাদের সাথে ছিল।
তিনি স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও সাবের হোসেন চৌধুরীকে এদেশের জনগণ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, সরকার এবং তাঁর ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, সিপিএ এবং আইপিইউ’র নির্বাচনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা ভোট দিয়ে বাংলাদেশের দুই জন প্রার্থীকে নির্বাচিত করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর একটি দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রকে সুরক্ষিত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নেতৃত্ব দিচ্ছে সারা বিশ্বের সংসদ এবং সংসদ সদস্যদের। এটা বাংলাদেশের জনগণের বিরল সম্মানের এবং একটা অনন্য ইতিহাস। সাথে সাথে এটি একটি গুরুদায়িত্বও। তিনি এ দায়িত্ব পালনে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে যারা নানা কথা বলেছিল, নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে যারা কথা বলেছে, সারা বিশ্ব আজ এ নির্বাচনে বিজয়ী করার মধ্য দিয়ে এর জবাব দিয়ে দিয়েছে। এরপরও যারা কথা বলবেন বা বলছেন আমি মনে করি তারা অর্বাচীন। গণতন্ত্র সম্পর্কে তাদের কোন ধারণা নেই।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশ তিন তিনবার কমনওয়েলথ-এর সদস্যপদ হারিয়েছিল। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনককে হত্যার পর, ’৮২ সালে সামরিক শাসন জারি হলে এবং ২০০৮ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর বাংলাদেশ কমনওয়েলথ সদস্যপদ হারায়। তিনি বলেন, যে বাংলাদেশ তিন তিনবার কমনওয়েলথ-এর সদস্যপদ হারিয়েছে আজ সেই বাংলাদেশ কমনওয়েলথ-এর নেতৃত্ব দিচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার নেতৃত্বে এদেশের জনগণ দীর্ঘ ২৪ বছর সংগ্রাম করে অস্ত্র তুলে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে। তিনি বলেন, যারা বিজয়ী জাতি তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস থাকতে হবে। আত্মবিশ্বাস না থাকলে কোন জাতি এগিয়ে যেতে পারে না। অগ্রগতির পথে এগুতে পারে না। আত্মবিশ্বাসটাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আত্মবিশ্বাস তখনই জন্মায় যখন গণতন্ত্র সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর দাঁড়ায়। গণতন্ত্র ছাড়া কোন দেশ উন্নত হতে পারে না।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সামনে একটা লক্ষ্য রয়েছে, আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। ২০২১ সালে আমরা দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। আমার বিশ্বাস আমরা তা পারবো।’
প্রধানমন্ত্রী ক্রিকেট টেস্টে সিরিজ জয় করায় টাইগারদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশ ইচ্ছা করলে যে পারে তা টাইগাররা দেখিয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশের অগ্রযাত্রাকে কেউ থামাতে পারবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন শুধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠাই করেনি, গণতান্ত্রিক বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। এটাই সবচাইতে বড় অর্জন। আমাদের ওপর বিরাট দায়িত্ব পড়েছে। এই গণতান্ত্রিক ধারাকে আরো সুরক্ষিত করে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, এক্ষেত্রে তিনি দেশবাসীর সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করেন। তিনি বলেন, ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে। পাশাপাশি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে সমৃদ্ধ ও উন্নত একটি দেশ। জাতির পিতার লক্ষ্য ও আকাক্সক্ষা অনুযায়ী এই বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত উন্নত বাংলাদেশ হবে। বাংলাদেশকে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তুলবো।
-বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)