438
Published on সেপ্টেম্বর 26, 2014
তিনি বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে দেশকে মধ্যমআয়ের দেশে পরিণত করা। এজন্য আমি বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে বিনিয়োগের মাধ্যমে নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে মার্কিন উদ্যোক্তাদের নতুন ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার আহবান জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার গ্রান্ড হায়াত হোটেলে মার্কিন চেম্বার ও ইউএস বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত এক মধ্যাহ্ন ভোজসভায় ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ হচ্ছে সম্ভাবনার চেয়ে অনেক কম ৩৩১ মিলিয়ন ডলার।
তিনি বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত ছাড়াও আমাদের অর্থনৈতিক খাতে ধীরে হলেও কিছু বিনিয়োগ হচ্ছে। বাংলাদেশের উদার বিনিয়োগ নীতির সুবিধা যুক্তরাষ্ট্রের নানা খাতের বিনিয়োগকারীরা আরো গ্রহণ করুন ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার বিদেশী বিনিয়োগকারীদের জন্য উদার আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রদান করেছে। এর মধ্যে রয়েছে কর রেয়াত, কম শুল্কে যন্ত্রপাতি আমদানি, রেমিটেন্স রয়্যালিটি, শতভাগ বিদেশী ইকুইটি, অনিয়ন্ত্রিত এক্সিট পলিসি, মুনাফার পূর্ণ প্রত্যাবাসন এবং পুঁজি নিয়ে যাওয়াসহ আরো বহু সুযোগ-সুবিধা।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার সাতটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠন করেছে। এসব অঞ্চলে বিদেশী বেসরকারি কোম্পানিগুলো শিল্প-কারখানার জন্য জমি লিজ নিতে পারে।
তিনি বলেন, শিল্প কারখানায় শ্রমিক হিসেবে নিয়োগের জন্য আমাদের প্রায় ৮ কোটি তরুণ শ্রমশক্তি রয়েছে। এছাড়া আমাদের রয়েছে ১৬ কোটি ভোক্তার একটি বিশাল বাজার।
তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত থেকে শুরু করে আমাদের উদীয়মান জাহাজ নির্মাণ শিল্প ও রিসাইক্লিং খাত, রাসায়নিক সার, অটোমোবাইল ও হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি, কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, ওষুধ, সিরামিক, প্লাষ্টিক ও পাটজাত পণ্য, আইসিটি, সমুদ্রের সম্পদ অনুসন্ধান,পর্যটন, চিকিৎসা সরঞ্জাম ও টেলিকমিউনিকেশন খাতেও সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে আগ্রহী।
তিনি বলেন, আমরা জ্ঞানভিত্তিক হাই-টেক শিল্প স্থাপনে মনোযোগ দিয়েছি। আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি শিল্প সমৃদ্ধ ও ডিজিটালাইজড মধ্যমআয়ের এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত করা। এরফলে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার সম্পর্ক অভিন্ন মূল্যবোধ, স্বার্থ ও পারস্পরিক স্বার্থের ভিত্তিতে গভীরভাবে প্রোথিত। তিনি বলেন, শান্তি, গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতা আওয়ামী লীগ সরকার ও মার্কিন সরকারের অভিন্ন মূল্যবোধ। আমরা উভয় দেশ স্বাধীনতা ও মানবাধিকার, অবাধ মত প্রকাশ, ধর্মীয় স্বাধীনতা, স্বাধীন গণমাধ্যম, বৈচিত্রময় সমাজ, সহনশীলতা, নারীর ক্ষমতায়ন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মুল ও মৌলবাদকে কোনঠাসা করার ক্ষেত্রে একই দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি যখনি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে যোগ দিতে নিউইয়র্ক সফরে এসেছি তখনি যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আমাকে বলেছেন এখানকার ব্যবসায়ী ও কর্পোরেট প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করার। আমার সময়ের স্বল্পতা থাকে । তাসত্ত্বেও আমি এব্যাপারে সবসময় আমার সম্মতি দিয়েছি। এর কারণ তিনটি। প্রথমত: বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্ক, দ্বিতীয়ত: যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারী খাতে বাণিজ্য বিনিয়োগ সুবিধার উপর আমার সরকার গুরুত্ব দেয়।
-বাসস
ছবিঃ বিডি নিউজ