434
Published on সেপ্টেম্বর 18, 2014‘ট্রেড কনফিডেন্স ইনডেক্স’ বা বাণিজ্য আস্থা সূচকটি এইচএসবিসি লন্ডনভিত্তিক সংস্থা টিএনএস-কে দিয়ে তৈরি করায়। ওই সংস্থা পাঁচ হাজার ২০০ জন রপ্তানিকারক, আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীর ওপর এ জরিপকাজ চালায়। এইচএসবিসি তাদের ‘বাংলাদেশ ট্রেড ফোরকাস্ট রিপোর্ট’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে জরিপের ফল তুলে ধরেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীরা মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোতে বাংলাদেশি পোশাকের বাড়তি চাহিদা ও কর্মপরিবেশের নিরাপত্তায় বাংলাদেশের সাম্প্রতিক অগ্রগতি আস্থা সূচক বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে। এইচএসবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, ‘বাংলাদেশ সরকার কর্মপরিবেশের নিরাপত্তায় নতুন পদক্ষেপ নিয়েছে। দৃশ্যত এটিই আস্থা সূচক বাড়াতে ভূমিকা রেখেছে।’
আস্থার সূচকের দিক দিয়ে বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, আয়ারল্যান্ড, মেক্সিকো, চীন, যুক্তরাজ্য, ব্রাজিল, কানাডা, মালয়েশিয়া, পোল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, জার্মানি, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও আর্জেন্টিনাকে পেছনে ফেলেছে।
এইচএসবিসি হোল্ডিংস পিএলসি একটি ব্রিটিশ বহুজাতিক ব্যাংকিং ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ১৯৯১ সালে লন্ডনে হংকং অ্যান্ড সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন নামের একটি হংকংভিত্তিক প্রতিষ্ঠান এটি প্রতিষ্ঠা করে। বর্তমানে বিশ্বের দ্বিতীয় বড় ব্যাংক এইচএসবিসি। চলতি সপ্তাহে প্রতিষ্ঠানটি ‘বাংলাদেশ ট্রেড ফোরকাস্ট রিপোর্ট’ প্রকাশ করে বলেছে, বাংলাদেশে শ্রমের মূল্য চীনের চেয়ে অনেক কম। বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানিতে তাদের পূর্বাভাসে থাকা ২৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অংশ ২০১০ সালে ছিল ২.৮ শতাংশ। ২০২০ সালে তা বেড়ে ৩.৮ শতাংশ হবে।
২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ২৪ দশমিক ৪৯ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ১৩.৮৩ শতাংশ বেশি। এইচএসবিসি তাদের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের রপ্তানির হিসাব দিয়েছে পঞ্জিকা বছর অনুযায়ী। তাদের হিসাবে, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের রপ্তানি ১১.৯ শতাংশ বেড়েছে। ২০১৪ সালের প্রথম ছয় মাসেও একই গতি ছিল। এর মধ্যে ২০১৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে পোশাক রপ্তানি ১৩ শতাংশ হারে বেড়েছে। এইচএসবিসির জরিপে অংশ নেওয়া ৭০ শতাংশের বেশি উত্তরদাতা মনে করেন, আগামী ছয় মাসও এভাবে রপ্তানি বাড়বে। ২০৩০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের প্রধান পাঁচটি বাজার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডার অবস্থান থাকবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
প্রতিবেদনের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস অংশে বলা হয়, বাংলাদেশের বাণিজ্যের সবচেয়ে বড় অংশীদার ইউরোপের অর্থনীতি এখন ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। ফলে বিশ্ব চাহিদা আবার বাড়তে শুরু করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এতে এশিয়ায় বাণিজ্য বৃদ্ধি শুরু হয়েছে। এইচএসবিসি আশা করে, বাংলাদেশের অর্থনীতি চলতি দশকে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে। এর জন্য অবকাঠামোর উন্নতি করা হবে, যাতে অর্থনীতির গতিকে সহায়তা দেওয়া যায়।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বাংলাদেশের মোট রপ্তানি পণ্যের ৮০ শতাংশই পূরণ করছে তৈরি পোশাক খাত। এ খাতে বাংলাদেশের রপ্তানি প্রতিবেশী ভারতের চেয়েও বেশি। ২০১৩ সালে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও টেক্সটাইল রপ্তানির অর্ধেক গেছে ইউরোপে এবং যুক্তরাষ্ট্রে গেছে এক-চতুর্থাংশ। ২০১৩ সালের ডিসেম্বরে পোশাক খাতে ন্যূনতমমুজরি ৭৭ শতাংশ বাড়ানোর ফলে উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও বিশ্ব বাজারে এ শিল্প তার প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সক্ষম হবে।
-কালের কণ্ঠ